কিসমিসের উপকারিতা অপকারিতা ও পুষ্টিগুণ

প্রিয় পাঠক ড্রাই ফ্রুটের মধ্যে আমাদের কাছে অন্যতম পরিচিত হচ্ছে কিশমিশ। পোলাও, পায়েসসহ বিভিন্ন রান্নায় মূলত কিশমিশ ব্যবহার করা হয়ে থাকে। আবার স্বাস্থ্য সচেতনদের অনেকেই কিশমিশ ভেজানো পানি পান করে থাকেন ভেজানো কিশমিশে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার থাকে । হজমশক্তি ঠিক রাখতে ফাইবার দারুণ সাহায্য করে।
কিসমিসের উপকারিতা অপকারিতা ও পুষ্টিগুণ

ভূমিকা

কিসমিসের উপকারের কথা এক কথায় বলে শেষ করা যাবে না। এমনকি কিসমিস ভেজানো পানিও শরীরের জন্য অনেক উপকারী। কিসমিসে ভিটামিন,খনিজ,অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, ফাইটোনিউট্রিয়েন্টস, পলিফেনলস এবং অন্যান্য বেশ কয়েকটি ফাইবার রয়েছে। কিসমিস শরীরে যেমন শক্তি যোগায় এবং রক্ত উৎপাদনেও সহায়তা করে।

কিসমিসের উপকারিতা ও অপকারিতা

কিসমিসের উপকারিতা ও অপকারিতা রয়েছে অনেক। আমাদের শরীরের আয়রনের ঘাটতি কিসমিস পূরণ করে থাকে। এর পাশাপাশি রক্তের লাল কণিকার পরিমাণ ও বাড়িয়ে তোলে। কিসমিস শুকিয়ে খাওয়ার চাইতে ভিজিয়ে খেলে বেশি উপকারিতা পাওয়া যায়। কিসমিসের পানি প্রতিদিন খেলে কোষ্ঠকাঠিন্য ও এসিডিটি দূর হয়ে যায়।

  • কোন ওষুধ খাওয়ার প্রয়োজন হয় না। এছাড়াও কিসমিসের পানি রক্ত পরিষ্কার করতে সাহায্য করে থাকে। কিসমিসের উপকারিতা অনেক। যা নিচে দেয়া হল-
  • অনেকেই আছে যারা তাদের শরীরের ওজন কমাতে চাই না বরং বাড়াতে চাই। শরীর স্বাস্থ্য যারা ভালো করতে চাই এবং ওজন বৃদ্ধি করতে চাই তারা কিসমিস খেতে পারেন। কেননা, কিসমিসে রয়েছে গ্লুকোজ ও ফ্রুক্টোজ যা আমাদের শরীরে শক্তি জোগাতে সাহায্য করে থাকে। যা কোলেস্টরেল না বাড়িয়ে শরীরের ওজন বাড়ায়।
  • কিসমিসে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে পটাশিয়াম। যা রক্তনালীকে শিথিল করে রাখে এবং উচ্চ রক্তচাপ থেকে মুক্তি দিতে সাহায্য করে।
  • কিসমিস এন্টি কার্সিনো জেনিক সুবিধা দিয়ে থাকে। কেননা কিসমিসে রয়েছে কেটে চীন। এই কেটে চিনে পলিফেলন যোগও রয়েছে যা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যৌগ ধারণ করে ক্যান্সার প্রতিরোধে সহায়তা করে থাকে।
  • কিসমিসে খনিজ, ভিটামিন পুষ্টির পাশাপাশি পলিফেলন ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যৌগ রয়েছে। যা আমাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে।
  • কিসমিসে রয়েছে লোহার মতো প্রয়োজনীয় পুষ্টি। যা আপনাকে শান্তির ঘুম দিতে পারে।

কিসমিসের অপকারিতা

  1. কিসমিস খেলে যেমন উপকারিতা পাওয়া যায় তেমন এর অপকারিতা ও রয়েছে। আমরা এখন কিসমিসের অপকারিতা সম্পর্কে জানব।
  2. যাদের এলার্জির সমস্যা রয়েছে তাদের জন্য কিসমিস না খাওয়াটাই ভালো। কেননা, কিসমিস এলার্জির সমস্যা বৃদ্ধি করে।
  3. যাদের ডায়াবেটিসের সমস্যা রয়েছে তারা অতিরিক্ত কিসমিস খাওয়া থেকে বিরত থাকবেন। এতে ডায়াবেটিস বৃদ্ধি হতে পারে।
  4. শরীরের ওজন যারা কমাতে চাই তাদের জন্য অতিরিক্ত কিসমিস না খাওয়া ভালো। শরীরের ওজন কিসমিস খেলে বৃদ্ধি পায়।
  5. কিসমিস খাবার হজম করতে বিঘ্ন ঘটিয়ে থাকে। তাই অতিরিক্ত কিসমিস না খাওয়াই ভালো।

দুধ কিসমিস খাওয়ার উপকারিতা

  • দুধে রয়েছে প্রোটিন। কিসমিস রয়েছে বিভিন্ন ধরনের ভিটামিন ও আয়রন। দুটোই উপকারিতা অনেক। তার ওপর দুধ কিসমিস একসাথে মিশিয়ে খেলে এর পুষ্টিগুণ আরো বেড়ে যায়। সেজন্য দুধের মধ্যে কিসমিস মিশিয়ে খেতে পারবেন। 
  • দুধ কিসমিস খেলে শরীর দুর্বল লাগা ও মাথা ঘোরা এই সকল রোগ থেকে মুক্তি পাবেন। এছাড়াও জটিল কোন অসুখে যারা ভোগে তারা এই দুধ কিসমিস খেলে ভালো ফলাফল পাবেন।

কাজু কিসমিস এর উপকারিতা

  1. কিসমিসের উপকারিতা অনেক। তার সাথে কাজু কিসমিস খেলে আরও উপকারিতা পাবেন। কাজু কিসমিস রয়েছে অনেক গুণাগুণ। 
  2. রোজ কাজু কিসমিস খেলে আপনার দাঁত মজবুত হবে। কাজু কিসমিসে থাকা ক্যালসিয়াম দাঁতের জন্য অনেক উপকারী। সেই সাথে আপনার হাড়কেও মজবুত করে তোলে। তাই প্রতিদিন নিয়মিত কাজু কিসমিস খেলে অনেক উপকার পাবেন।

কিসমিস ভিজিয়ে খাওয়ার নিয়ম

এখন আমরা কিসমিস ভিজিয়ে খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে জানব।
  • কিসমিস ভেজিয়ে সকালে খালি পেটে খেলে শরীরের আয়রনের ঘাটতি পূরণ হয় এবং রক্তের লালকানিকার পরিমাণ বাড়তে থাকে।
  • কিসমিস হৃদক্রিয়া ভালো রাখতে সহায়তা করে।
  • কিসমিস ভেজানো পানি খেলে রক্ত পরিষ্কার হয়।
  • কিসমিস প্রতিদিন খেলে এসিডিটি ও কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে থাকে।
  • কিসমিস হজমের সহায়তা করে থাকে।
  • কিসমিস খেলে কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে থাকে।
  • কিসমিসে প্রাকৃতিক অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে যা রোগ থেকে মুক্তি দিয়ে থাকে।
  • কিসমিসের পানি লিভার পরিষ্কার রাখে।
  • কিসমিসে বোরন ও ক্যালসিয়াম থাকার কারণে দাঁত ও হাড় গঠনে সাহায্য করে থাকে।

কিসমিস খাওয়ার নিয়ম ও উপকারিতা

আপনারা বিভিন্ন উপায়ে কিসমিস খেতে পারবেন। নিচে কিসমিস খাওয়ার নিয়ম ও উপকারিতা গুলো দেওয়া হল
  1. আঙ্গুর ফলকে শুকানোর পর কিসমিস তৈরি করা হয়ে থাকে। এই কিসমিস সেমাই, পায়েস ও কোরমা সহ বিভিন্ন খাবারের মধ্যে দিয়ে রান্না করে খাওয়া হয়ে থাকে।
  2. কাঁচা অবস্থাতেও কিসমিস খাওয়া যায়। কিসমিসের অনেক গুনাগুন ও উপকারিতা রয়েছে। কাঁচা অবস্থায় কিসমিস খেলে অবশ্যই ধুয়ে পরিষ্কার করে খেতে হবে।
  3. রাতে কিসমিস ভিজিয়ে রেখে সকাল বেলায় খালি পেটে কিসমিসের পানি সহ কিসমিস খেতে পারেন। এতে আপনার শরীরকে চাঙ্গা করবে এবং অনেক গুনাগুন ও পাবেন।

খেজুর ও কিসমিস এর উপকারিতা

  • আমাদের কাছে খেজুর ও কিসমিস দুটি অতি পরিচিত খাবার। পায়েস, সেমাই বা ইফতারের প্লেটে খেজুর ও কিসমিস ছাড়া চলবেই না। কিন্তু খেজুর ও কিসমিস খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে জানেন কি? চলুন দেখে আসি খেজুর ও কিসমিস এর উপকারিতা গুলো-
  • প্রতিদিন নিয়মিত খেজুর ও কিসমিস খেলে ব্লাড প্রেসার নিয়ন্ত্রণে থাকে।
  • কিসমিসে উপস্থিত ম্যাগনেসিয়াম ও পটাশিয়াম শরীরে প্রবেশ করার পরে রক্তে এসিডিটির মাত্রা কমে যেতে সময় লাগে না। এক কথায় সার্বিকভাবে শরীরকে চাঙ্গা করতে খেজুর ও কিসমিসের কোন বিকল্প নাই।বেশ কিছু গবেষনাতে দেখা যায় যে খেজুর ও কিসমিস খেলে দৃষ্টিশক্তির উন্নতি ঘটে।
  • কিসমিসে প্রচুর পরিমাণে আয়রন রয়েছে, যা শরীরে প্রবেশ করে লোহিত রক্তকণিকার উৎপাদনকে বাড়তে দেয়। ফলে রক্তস্বল্পতার মত সমস্যা দূর হয়ে যায়।
  • ব্রেন পাওয়ার বৃদ্ধি করার জন্য খেজুর ও কিসমিসের উপকারিতা অতুলনীয়।

উপসংহার

আশা করছি কিসমিসের উপকারিতা অপকারিতা ও পুষ্টিগুণ ধারনা পেয়েছেন এই আর্টিকেলটিতে, এই আর্টিকেলটি পুরোটা পড়ে যদি আপনাদের সামান্যতম উপকারে আসে তাহলে আপনাদের পরিচিতি মানুষদের সাথে শেয়ার করতে পারেন। আর এ ধরনের বা বিভিন্ন রকমের আর্টিকেল পড়তে আমাদের সাইডে ভিজিট করে দেখুন ধন্যবাদ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url