রিজিক সম্পর্কে হাদিস - রিজিক নিয়ে আল্লাহর বাণী

প্রিয় পাঠক রিজিক আল্লাহর তাআলার অনন্য নেয়ামত। রিজিক শুধু অর্থকড়ি কিংবা খাওয়া-দাওয়া নয়। ঈমান-আমল, ইলম ও নেককার স্ত্রী-সন্তানসহ মানুষের সামগ্রিক জীবনের বৈধ সব উপায়-উপকরণই রিজিকের অন্তর্ভুক্ত আল্লাহ তাআলা সবাইকে রিজিক দান করেন মুসলিম অমুসলিম সবাইকে তিনি রিজিক দান করেন। রিজিক আল্লাহ তাআলার পক্ষ থেকে নির্ধারিত ও নিয়ন্ত্রিত।
রিজিক সম্পর্কে হাদিস - রিজিক নিয়ে আল্লাহর বাণী

ভূমিকা 

রিজিক অনুসন্ধানের জন্য মানুষ হাড়ভাঙা পরিশ্রম করে। রিজিক নিয়ে মানুষ অনেক দুশ্চিন্তায় ভোগে। পৃথিবীতে প্রেরিত প্রত্যেকের রিজিক আল্লাহ তায়ালার পক্ষ থেকে নির্ধারিত। সবাই তার জন্য নির্ধারিত রিজিক লাভ করবেন নির্দিষ্ট নিয়মে। পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তায়ালা তায়ালা বিভিন্ন জায়াগায় রিজিক নিয়ে আলোচনা করেছেন।

রিজিক কী - রিজিক কত প্রকার

আমাদের পুরো জীবনের সকল কর্মকান্ড যা দ্বারা নির্ধারিত তাই হলো রিজিক। আমরা কি খাবো, কি পরবো, কি আয় করব, কোথায় যাব তথা জীবনের প্রতিটি কর্মকাণ্ড আল্লাহতায়ালা কতৃক নির্ধারিত।
মহান আল্লাহর দ্বারা লিখিত রিজিক থেকে আমরা বিন্দুমাত্র বঞ্চিত হবো না আবার এর চেয়ে বেশিও কিছু পাবো না। সুতরাং, রিজিক জিনিসটা এতটাই শক্তিশালী।

 রিজিকে বিশ্বাস করাও তাই মুমিন ব্যক্তির কাজ। রিজিক সম্পর্কে হাদিসগুলোতে রিজিক কত প্রকার সে সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যায়।ইসলামে রিজিকের ধারণা অত্যন্ত সুপ্রসারিত। রিজিক মূলত ২ প্রকার: ১) ধন সম্পদের রিজিক এবং ২) অন্তর আত্মার রিজিক। ব্যক্তির মৌলিক সম্পদগুলো ব্যতীত আরও যে সকল প্রকারের রিজিক রয়েছে তা হলো।

 ১) ঈমান, ২) সুস্থতা, ৩) ইলমে দ্বীন, ৪) নেককার স্ত্রী, ৫) নেককার সন্তান, ৬) ফিকহ্ ইত্যাদি। মোটকথা আমাদের দুনিয়া ও আখিরাতের জীবনকে কল্যাণকর করে এমন সমস্ত উপকরণই ইসলামের পরিভাষায় রিজিক।রিজিক সম্পর্কে একটি হাদিস হলো: মহানবী সাঃ বলেন, “রিজিক আল্লাহর পক্ষ থেকে পূর্ব নির্ধারিত ও বণ্টিত, তোমাদের প্রত্যেকের সৃষ্টি ৪০ দিন তার মায়ের গর্ভে থাকে।

তারপর ৪০ দিন লাল জমাট রক্ত রূপে রূপান্তরিত হয়। তারপর ৪০ দিনে গোশতের টুকরোর রূপ ধারণ করে।অবশেষে আল্লাহতায়ালা ফেরেশতাকে পাঠান। তখন সে তার মধ্যে রুহ ফুঁকে দেয়। অতঃপর ফেরেশতাকে ওই গর্ভস্থ শিশুর ব্যাপারে চারটি বিষয় চূড়ান্তরূপে লিখতে আদেশ করা হয়। যথা তার রিজিক, মৃত্যু ও আমল” (মুসলিম – ২৬৪৩)।

রিজিক নিয়ে আল্লাহর বাণী

  1. পৃথিবীতে বিচরণশীল সকল প্রাণীর রিজিকের দায়িত্ব আমার (মহান আল্লাহ্‌ তায়ালার)।”(সূরা হুদ, আয়াত ৬)
  2. তুমি যখন একজন গরিব-মিসকিনকে খাবার দান করবে, আল্লাহ্‌ তায়ালা তোমার রিজিককে পবিত্র করে দিবেন।মহানবি হযরত মুহাম্মত (স)
  3. রিজিকের মালিক একমাত্র আল্লাহ্‌ তায়ালা, আমরা সকলে রিজিকের জন্য একমাত্র তার নিকট প্রার্থনা করবো।– মহানবি হযরত মুহাম্মত (স)
  4. রিজিক অর্জনের জন্য শুধু আল্লাহর উপর ভরসা করে কাজ বন্ধ করে বসে থাকলে হবেনা, আপনাকে পরিশ্রম করতে হবে।– আবুল মিশকাত
  5. রিজিক মহান আল্লাহ তা’য়ালা কর্তৃক বড় নেয়ামত৷ আল্লাহ্‌ প্রদত্ত রিজিক প্রতিটি প্রাণী ভিন্ন ভিন্ন উপায়ে প্রাপ্ত হয়ে থাকে ৷– (সূরা হুদ)
  6. মহান আল্লাহ যার জন্য ইচ্ছা করেন তার রিজিক বাড়িয়ে দেন এবং এবং যার প্রতি অসন্তুষ্ট হন তার রিজিক সংকুচিত করেন।– (সূরা আর-রাদ: ২৬)
  7. আপনার রিজিক আপনার কষ্টের মাধ্যমেই উপার্জন করে নিতে হবে, আল্লাহ্‌ তায়ালা আপনাকে পথ দেখাবেন মাত্র।– সালমান বিন আবদুল আজিজ
  8. মহান আল্লাহ্‌ তায়ালা বলেন, “আকাশে রয়েছে তোমাদের রিজিক ও প্রতিশ্রুত সব কিছু।”– সূরা জারিয়াত: ২২
  9. হালাল অর্থ উপার্জন করে রিজিক গ্রহণের মধ্যে এক প্রকার শান্তি রয়েছে, যা হারাম অর্থ উপার্জন করে গ্রহণের মাঝে নেই।– মানাহিল আইমা
  10. তোমরা আল্লাহর কাছে রিজিক তালাশ করো, তার ইবাদত কর এবং তার কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করো। তারই কাছে তোমাদের ফিরে যেতে হবে।”– সুরা আনকাবুত : আয়াত ১৭
  11. তোমার যতই অর্থ থাকুক না কেন তুমি তখনই রিজিক গ্রহণ করতে পারবে যখন মহান আল্লাহ্‌ তায়ালা চাইবেন।– ইব্রাহিম বিন খালিদ
  12. হারাম রিজিক গ্রহণ করে আমরা উপকৃত হইনা বলেই মহান আল্লাহ্‌ তায়ালা তা আমাদের জন্য হারাম করেছেন।– নুরা আল আজিজ
  13. মহান আল্লাহ তায়ালা তার বান্দাদের প্রতি দয়ালু, যাকে ইচ্ছা রিজিক দান করেন, তিনি প্রবল পরাক্রমশালী।”– সুরা শুরা: আয়াত ১৯
  14. সবসময় আল্লাহর উপর ভরসা রাখতে শেখো, তিনি তোমার রিজিকের ব্যবস্থা করে রেখেছেন, তিনি তোমাকে নিরাশ করবেন না।”– মহানবি হযরত মুহাম্মত (স)
  15. কার রিজিক কোথায় রয়েছে তা একমাত্র মহান আল্লাহ্‌ ব্যতিত কেউ জানেন না।– আব্রাহাম ইলাহি

রিজিক বৃদ্ধি প্রসঙ্গে কোরআন-হাদিসের বর্ণনা

কিছু কারণে বান্দার রিজিক তথা জীবিকা বৃদ্ধি পায়। ওইসব কারণগুলো হচ্ছে-
  • এক. একনিষ্ঠভাবে এক আল্লাহর ইবাদত ও সৎকর্ম করা। -সূরা আন নাহল: ৯৭
  • দুই. বেশি পরিমাণে সর্বাবস্থায় আল্লাহকে স্মরণ করা ও ইস্তেগফার পড়া। -সূরা নুহ: ১০-১২
  • তিন. সর্বাবস্থায় আল্লাহকে ভয় করে চলা। -সূরা আত তালাক: ২
  • চার. বেশি বেশি বৈধ রিজিকের জন্যে দোয়া করা। -সূরা বাকারা: ১৮৬
  • পাঁচ. দৃঢ়তার সঙ্গে আল্লাহর ওপর ভরসা করা। -সূরা আত তালাক: ৩
  • ছয়. অসহায় দরিদ্রদের সাহায্য করা। -সহিহ বোখারি: ২৮৯৬
  • সাত. হজ ও উমরা করা। -সুনানে তিরমিজি: ৮১০
  • আট. আত্মীয়তার সম্পর্ক রক্ষা করা। -সহিহ বোখারি: ২০৬৭
  • নয়. সকাল সকাল ঘুম থেকে জাগ্রত হওয়া। -সুনানে আবু দাউদ: ২৬০৬
  • দশ. ফজরের নামাজ জামাতের সঙ্গে আদায় করা। -সহিহ মুসলিম: ৬৫৭
  1. একমাত্র যে কারণে বান্দাকে রিজিক থেকে বঞ্চিত রাখা হয় তা হচ্ছে গোনাহের কাজে লিপ্ত থাকা। -সুনানে ইবনে মাজাহ: ৯০
  2. উল্লেখ্য হারাম উপার্জন দিয়ে গঠিত শরীরের কোনো ইবাদত আল্লাহ কবুল করেন না এবং ওই শরীর জান্নাতে প্রবেশ করবে না। -সিলসিলা সহিহাহ: ২১২
  3. অতএব কোনো ধরনের হতাশা নয়, তাকদিরে আমাদের জন্য যতটুকু বরাদ্দ আছে, ততটুকু আমরা পাবোই, এটাই আল্লাহর ওয়াদা। আমাদের কাজ শুধু চেষ্টা করে যাওয়া। যে বিষয়ে আল্লাহ হুকুম করেছেন- তা মানা, আর যে বিষয়ে আল্লাহ নিষেধ করেছেন, তা থেকে নিচেকে বাঁচিয়ে রাখা। 

যেসব আমলে রিজিকে বরকত লাভ হয়

  • তাকওয়া ও তাওয়াক্কুল অবলম্বন করা। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘... আর যে কেউ তাকওয়া অবলম্বন করে আল্লাহ তার জন্য (উত্তরণের) পথ করে দেবেন এবং তিনি তাকে এমন উৎস থেকে রিজিক দিবেন যা সে কল্পনাও করতে পারবে না। আর যে আল্লাহর ওপর তাওয়াক্কুল করে আল্লাহ তার জন্য যথেষ্ট। আল্লাহ তাঁর উদ্দেশ্য পূর্ণ করবেনই...। (সুরা তালাক: ২-৩)
  • পরিবার ও আত্মীয়-স্বজনের সঙ্গে সুসম্পর্ক রাখা। আনাস ইবনে মালিক (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি শুনেছি, আল্লাহর রাসুল (স.) বলেছেন, যে ব্যক্তি পছন্দ করে যে, তার জীবিকা বৃদ্ধি হোক অথবা তাঁর মৃত্যুর পরে সুনাম থাকুক, তবে সে যেন আত্মীয়ের সঙ্গে সদাচরণ করে। (বুখারি: ২০৬৭) সহিহ বুখারির আরেক হাদিসে, আবু হুরাইরা (রা.) বলেন, আমি রাসুলুল্লাহ (স.)-কে বলতে শুনেছি, যে লোক তার জীবিকা প্রশস্ত করতে এবং আয়ু বৃদ্ধি করতে চায়, সে যেন আত্মীয়তার সম্পর্ক রক্ষা করে। (বুখারি: ৫৯৮৫)
  • তাওবা ও ইস্তেগফার করা। পবিত্র কোরআনে এসেছে, ‘আমি বললাম, তোমাদের রবের কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করো, তিনি তো ক্ষমাশীল। তিনি তোমাদের জন্য প্রচুর বৃষ্টি বর্ষণ করবেন, তিনি তোমাদের সমৃদ্ধ করবেন ধন-সম্পদ ও সন্তান-সন্ততিতে এবং তোমাদের জন্য স্থাপন করবেন উদ্যান ও প্রবাহিত করবেন নদীনালা।’ (সুরা নুহ: ১০-১২)ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (স.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি বেশি বেশি ইস্তিগফার করে আল্লাহ তাআলা তার সব সংকট থেকে উত্তরণের ব্যবস্থা করে দেন, তার সব পেরেশানি দূর করে দেন এবং তাকে এমন জায়গা থেকে রিজিক দান করেন, যা সে কল্পনাও করতে পারে না।’ (সুনানে আবু দাউদ: ১৫১৮)
  • আল্লাহর রাস্তায় ব্যয় করা। ইরশাদ হয়েছে, ‘(হে রাসুল! আপনি) বলুন, নিশ্চয়ই আমার রব তাঁর বান্দাদের মধ্যে যার জন্য ইচ্ছা রিজিক প্রশস্ত করেন এবং সঙ্কুচিত করেন। আর তোমরা যা কিছু আল্লাহর জন্য ব্যয় কর তিনি তার বিনিময় দেবেন এবং তিনিই উত্তম রিজিকতা।’ (সুরা সাবা: ৩৯)
  • বারবার হজ-ওমরা করা। আব্দুল্লাহ ইবনু মাসউদ (রা.) বর্ণিত হাদিসে রাসুলুল্লাহ (স.) বলেছেন- ‘তোমরা হজ ও ওমরা পালন কর। কেননা হজ ও ওমরা উভয়টি দারিদ্রতা ও পাপরাশিকে দূর করে দেয়; যেমনিভাবে রেত সোনা, রুপা ও লোহার মরিচা দূর করে দেয়। আর মাবরূর হজের বদলা হল জান্নাত।’ (তিরমিজি: ৮০৮)
  • দান সদকা করা, অসহায়দের প্রতি সদয় হওয়া। আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (স.) বলেছেন, মহান আল্লাহ বলেন, ‘তুমি ব্যয় করো হে আদম সন্তান! আমিও তোমার জন্য ব্যয় করব।’ (বুখারি: ৫৩৫২; ২৮৯৬)
  • আল্লাহর ইবাদতে অবিচল থাকা। আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন, ‘আপনি আপনার পরিবারের লোকদেরকে নামাজের আদেশ দিন এবং নিজেও এর ওপর অবিচল থাকুন। আমি আপনার কাছে কোনো রিজিক চাই না। আমি আপনাকে রিজিক দেই এবং আল্লাহকে ভয় করার পরিণাম শুভ তথা কল্যাণকার।’ (সুরা ত্বাহা: ১৩২)
  • আল্লাহর রাস্তায় হিজরত করা। ও জিহাদে অংশ নেওয়া। আল্লাহ তাআলা পবিত্র কোরআনে ইরশাদ করেছেন, ‘আর যে ব্যক্তি আল্লাহ–তাআলার রাস্তায় হিজরত করবে; জমিনে বহু আশ্রয়স্থল ও সচ্ছলতা পাবে সে।’ (সুরা নিসা: ১০০) ইবনে ওমর (রা.)–র বর্ণনায় আছে, রাসুলুল্লাহ (স.) বলেছেন, ‘আমার বর্শার ছায়াতলে আমার রিজিক রাখা হয়েছে।’ (মুসনাদে আহমাদ: ৫,৬৬৭; বায়হাকি: ১,১৫৪)
  • বিয়ে করা। আল্লাহ–তাআলা পবিত্র কোরআনে ইরশাদ করেছেন, ‘তোমাদের মধ্যে যারা অবিবাহিত এবং তোমাদের দাস–দাসীদের মধ্যে যারা সৎকর্মপরায়ণ, তাদের বিয়ে করিয়ে দাও। তারা যদি নিঃস্ব হয়, আল্লাহ তাআলা নিজ অনুগ্রহে তাদের সচ্ছল করে দেবেন। কারণ, আল্লাহ–তাআলা প্রাচুর্যময়, সর্বজ্ঞ।’ (সুরা নুর: ৩২)
  • অভাব থেকে মুক্তির জন্য আল্লাহর কাছে দোয়া করা। আল্লাহ তাআলা পবিত্র কোরআনে ইরশাদ করেছেন, ‘তোমাদের প্রতিপালক বলেন, তোমরা আমাকে ডাকো; আমি তোমাদের ডাকে সাড়া দেব।’ (সুরা মুমিন: ৬০)
  • ভোরবেলা আল্লাহর ইবাদতের পর কাজ শুরু করা। (রাসুল (স.) বলেন, ‘সকালবেলায় রিজিকের অন্বেষণ করো! কারণ, সকালবেলা বরকতপূর্ণ ও সফলতা অর্জনের জন্য উপযুক্ত সময়।’ (মাজমাউজ জাওয়ায়েদ: ৬২২০)ফাতেমা (রা.) বলেন, একবার রাসুল (স.) ভোরবেলা আমার ঘরে এসে আমাকে ঘুমে দেখতে পেলেন, তখন তিনি আমাকে পা দিয়ে নাড়া দিয়ে বললেন, হে প্রিয় কন্যা! উঠো! তোমার রবের পক্ষ থেকে রিজিক গ্রহণ করো! অলসদের দলভুক্ত হয়ো না। কেননা আল্লাহ তাআলা সুবহে সাদিক থেকে সূর্যোদয় পর্যন্ত মানুষের মাঝে রিজিক বণ্টন করে থাকেন। (আত-তারগিব ওয়াত তারহিব: ২৬১৬)
  • রিজিক অর্জনের চেষ্টায় থাকা। পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘অতঃপর নামাজ সমাপ্ত হলে তোমরা পৃথিবীতে (জমিনে) ছড়িয়ে পড়ো আর আল্লাহর অনুগ্রহ (রিজিক) সন্ধান করো এবং আল্লাহকে অধিক পরিমাণে স্মরণ করো; যাতে তোমরা সফলকাম হও।’ (সুরা জুমা: ১০)
  • শোকর আদায় বা কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করা। আল্লাহ–তাআলা পবিত্র কোরআনে ইরশাদ করেছেন, ‘যদি তোমরা শোকর আদায় করো, তবে আমি অবশ্যই তোমাদের (নিয়ামত) বাড়িয়ে দেব। আর যদি তোমরা অকৃতজ্ঞ হও, নিশ্চয় আমার আজাব বড় কঠিন।’ (সুরা ইবরাহিম: ৭)

যেসব কারণে রিজিকের বরকত কমে যায়

তাকওয়ার অভাব
  1. মহান আল্লাহ ইরশাদ করেছেন, ‘আর যদি জনপদগুলোর অধিবাসীরা ঈমান আনত এবং তাকওয়া অবলম্বন করত তাহলে আমি অবশ্যই আসমান ও জমিন থেকে বরকতগুলো তাদের ওপর খুলে দিতাম; কিন্তু তারা অস্বীকার করল। অতঃপর তারা যা অর্জন করত, তার কারণে আমি তাদের পাকড়াও করলাম।’ (সুরা আরাফ: ৯৬)
আল্লাহর স্মরণ থেকে উদাসীনতা
  1. পবিত্র কোরআনে মহান আল্লাহ ইরশাদ করেছেন, ‘হে মুমিনগণ, তোমাদের ধন-সম্পদ ও সন্তান-সন্ততি যেন তোমাদের আল্লাহর স্মরণ থেকে উদাসীন না করে। আর যারা এরূপ করে তারাই তো ক্ষতিগ্রস্ত।’ (সুরা মুনাফিকুন: ৯)
সুদ
  1. ইরশাদ হয়েছে, ‘হে ঈমানদারগণ, আল্লাহকে ভয় করো এবং তোমাদের যে সুদ বাকি আছে তা ছেড়ে দাও, যদি তোমরা ঈমানদার হও। যদি তোমরা এমন না করো তাহলে তোমরা আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের পক্ষ থেকে যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত হও।’ (সুরা বাকারা: ২৭৮-২৭৯) আরও ইরশাদ হয়েছে, ‘আল্লাহ সুদকে হ্রাস করেন এবং সদকাকে বর্ধিত করেন। (সুরা বাকারা: ২৭৬)
  2. এই আয়াতের ব্যাখ্যায় তাফসিরবিদরা বলেন, সুদ সম্পদের বরকত নষ্ট করে দেয়। প্রিয়নবী (স.) বলেছেন, ‘যাদের মাঝে ব্যভিচার ও সুদ বিস্তার লাভ করলো, তারা নিজেদের উপর আল্লাহর আজাব নামিয়ে নিলো।’ (মুসনাদে আহমদ: ৩৮০৯; মুসনাদে আবু ইয়ালা: ৪৯৮১)
অকৃতজ্ঞতা
  1. পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘যদি তোমরা শুকরিয়া আদায় করো, তাহলে আমি অবশ্যই তোমাদের বাড়িয়ে দেব। আর যদি তোমরা অকৃতজ্ঞ হও, তবে মনে রেখো, আমার শাস্তি বড়ই কঠোর।’ (সুরা ইবরাহিম: ৭)
জাকাত না দেওয়া
  1. জাকাত না দিলেও রিজিকের বরকত চলে যায়। সাহাবি আবদুল্লাহ ইবনে ওমর (রা.) থেকে বর্ণিত আছে, একবার মহানবী (স.) আমাদের কাছে এলেন। 
  2. অতঃপর বললেন, যারা নিজের ধন-সম্পদের জাকাত বন্ধ করে দেবে, তাদের জন্য আসমান থেকে বৃষ্টি বন্ধ রাখা হবে। এমনকি চতুষ্পদ জন্তু না থাকলে আদৌ বৃষ্টি হবে না।’ (হিলইয়াতুল আওলিয়া: ৩/৩২০; সুনানে ইবনে মাজাহ: ৪০১৯)
ব্যভিচার
  1. রিজিক কমে যাওয়ার আরেকটি বড় কারণ হলো- অশ্লীলতা ও ব্যভিচার। ব্যভিচারের কারণে দুর্ভিক্ষ দেখা দেয়। আমর ইবনুল আস (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি রাসুল (স.)-কে বলতে শুনেছি, ‘যে জাতির মাঝে ব্যভিচার বিস্তার লাভ করে, তাদের দুর্ভিক্ষের মাধ্যমে পাকড়াও করা হয়।

উপসংহার

আশা করছি রিজিক সম্পর্কে হাদিস - রিজিক নিয়ে আল্লাহর বাণী ধারনা পেয়েছেন এই আর্টিকেলটিতে, এই আর্টিকেলটি পুরোটা পড়ে যদি আপনাদের সামান্যতম উপকারে আসে তাহলে আপনাদের পরিচিতি মানুষদের সাথে শেয়ার করতে পারেন। আর এ ধরনের বা বিভিন্ন রকমের আর্টিকেল পড়তে আমাদের সাইডে ভিজিট করে দেখুন ধন্যবাদ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url