নতুন ফ্রিল্যান্সারদের জন্য সেরা মার্কেটপ্লেস কোনটি

প্রিয় পাঠক আজকাল ফ্রিল্যান্সিং এর নাম শোনেননি এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া খুবই কঠিন। নিজের সুবিধামত ঘরে বসে কাজ করার বিশেষ সুবিধা এবং ভালো পরিমানে আয়ের সুযোগের কারণে অনেকেই এখন ফ্রিল্যান্সিং পেশা বেছে নিচ্ছেন। এমনকি আপনি যদি সমাজে একটি ছোট ব্যবসা শুরু করতে চান তবে আপনার একটি ভাল পরিমাণ মূলধন প্রয়োজন।
নতুন ফ্রিল্যান্সারদের জন্য সেরা মার্কেটপ্লেস কোনটি
ফ্রিল্যান্সিং দিন দিন সবার কাছে সোনার হরিণের মতো হয়ে উঠছে। কারণ ফ্রিল্যান্সিং হচ্ছে লাখ লাখ ডলার আয়ের একটি উপায়। যেখানে কিছু সময় কম্পিউটার নিয়ে বসলেই মাস শেষে আপনার একাউন্টে ডলার জমা হবে যাবে।

ভূমিকা

আপনি যদি এমনটা মনে করেন, তাহলে সত্যি আপনি এখনো বোকার শহরে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। একটা কথা মনে রাখবেন টাকা আয় করা যতটা সহজ মনে করেন ততটা সহজ নয়। তাই আজ আমি আপনাদের এমন কিছু ওয়েবসাইট সম্পর্কে ধারনা দিতে যাচ্ছি যার মাধ্যমে আপনি আপনার ফ্রিল্যান্সিং ক্যারিয়ার শুরু করতে পারবেন।

নতুন ফ্রিল্যান্সারদের জন্য সেরা মার্কেটপ্লেস কোনটি

নতুনদের জন্য বর্তমান ফ্রিল্যান্সিং দুনিয়া অনেক কঠিন এবং প্রতিযোগিতাপূর্ণ। বিগত ৮ বছরে মানুষের মাঝে এই সেক্টর নিয়ে ব্যাপক আগ্রহ তৈরি হয়েছে। যা ভালো এবং মন্দ দুই বিষয়েই অবদান রেখেছে। যাইহোক, নিচে নতুন ফ্রিল্যান্সারদের জন্য সেরা মার্কেটপ্লেস সম্পর্কে বিস্তারিত ধারণা দেওয়া হলো।

Guru

নতুন যারা ফ্রিল্যান্সিং সেক্টরে আসতে চাচ্ছে তাদের সবার প্রথমে যে বিষয়ে গুরুত্ব দিতে হবে তা হচ্ছে স্কিল। স্কিল না থাকলে এই সেক্টরে কোন ভাবেই ভালো কিছু করা সম্ভব নয়। তবে কিছু মার্কেটপ্লেস রয়েছে জা একজন নতুন ফ্রীল্যান্সারকে স্বাগতম জানায়। গুরু সেগুলোর মধ্যে অন্যতম এবং ইউজার ফ্রেন্ডলি।

তবে এই মাধ্যমে কাজ করতে হলে আপনাকে হাই ভালু কাজ যেমন ওয়েব ডেভেলপমেন্ট, প্রোগ্রামিং, গ্রাফিক্স ডিজাইন, ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট জাতীয় কাজ সম্পর্কে স্কিল থাকতে হবে। নতুন হিসেবে এখানে আপনি প্রথমে ধাক্কা খেতে পারেন। তবে সামলে নিতে পারলে দেখবেন আপনার ভবিষ্যৎ উজ্জ্বল হবে।
এর বাসিক সাবস্ক্রিপসন ফ্রি থাকলেও প্রতিটি কমপ্লিট করা ।

জবে এরা ৯% ফি কাটে। একজন নতুন ফ্রীল্যান্সারের জন্য যদিও এটি অনেক বেশি তবে কম্পিটিশন হিসেব করলে শুরুতে অন্যান্য মার্কেটপ্লেসের পাশাপাশি এখানেও কাজ খোঁজা শুরু করতে পারেন।

People Per Hour

পিপল পার আওয়ার একজন নতুন ফ্রীল্যান্সারের জন্য অনেক সহায়ক। যদিও এর মধ্যে কোন কোন ধরনের কাজ পাওয়া যাবে টা নির্দিষ্ট নয় তবে এখানে সব ধরনের কাজ পাওয়া যায়। নতুনদের জন্য এই ধরনের বিসাল কাজের ক্ষেত্র অনেক সহায়ক। তবে এদের সার্ভিস চার্জ অনেক বেশি। পিপল পার আওয়ারে কোন প্রোজেক্টে যদি ৩৫০ ডলার বা তার নিচে ।

পেমেন্ট নির্ধারণ করা থাকে তবে ২০% সার্ভিস চার্জ দিতে হয়। অন্যদিকে ৩৫০ ডলারের উপরে যত বেশি পেমেন্ট হবে চার্জ তত কমবে। নতুনদের জন্য কাজ পাওয়া এবং কাজের ধরন বোঝা সহজ হলেও অ্যাকাউন্ট অ্যাপ্রুভ করা একটু জটিল।

Fiverr

ফ্রিল্যান্সিং পেশায় নতুন হিসেবে আসার জন্য ফাইবার সব থেকে সহজ এবং কার্যকরী। এর যেমন অনেক ধরনের ফিচার আছে তেমনি অনলাইনে বিশাল পরিমাণে রিসোর্স রয়েছে। এখানে নতুনদের জন্য যে ধরনের সুবিধা প্রয়োজন তার সব রয়েছে। শুরুতে ফ্রিল্যান্সিং জব পেতে আমাদের মধ্যে এক ধরনের ভীতি কাজ করে।

তবে এই প্ল্যাটফর্মে আপনি আপনার নিজের স্কিল সুন্দর করে সাজিয়ে রাখতে পারবেন যেখানে ক্লাইন্ট এসে আপনাকে খুঁজে বের করবে। অর্থাৎ নতুন হিসেবে ফাইবারে অ্যাকাউন্ট করতে পারলে কাজ পেতে অতিরিক্ত পরিশ্রম করতে হয় না।

Freelancer

ফ্রীলান্সার ডট কম অনেক পপুলার এবং পুরাতন মার্কেটপ্লেস। এখানে অ্যাকাউন্ট খোলা সহজ এবং বৈধ উপায়ে ভেরিফিকেশন করা হলে দ্রুত অ্যাপ্রুভ হয়। আপনি নতুন ধরনের কাজ খোঁজার জন্য এখানে অ্যাকাউন্ট করতে পারেন। ফ্রীল্যান্সারে ওয়েব ডেভেলপমেন্ট থেকে শুরু করে প্রায় সকল ধরনের প্রোজেক্ট পাওয়া যায়।

SimplyHired

এই প্ল্যাটফর্ম পুরোটাই ফ্রিল্যান্সারদের জন্য তৈরি করা নয়। তবে এখানে অনেক ধরনের অনলাইন কাজ পাওয়া যায়। তো সিমপ্লি হাইয়ার প্ল্যাটফর্মে আপনি সার্চ করার মাধ্যমে জব খুঁজতে পারবেন। অন্যদিকে তারা প্রতিটি নতুন জব লিস্টিং হলে তা নটিফিকেশন এর মাধ্যমে ইউজারদের জানিয়ে দেয়।

Toptal

এটি আপওয়ার্ক ও ফাইবারের মতই অনেক দামি প্ল্যাটফর্ম। বিশ্বের অনেক বড় বড় কোম্পানি এখান থেকে ফ্রীল্যান্সার হায়ার করে। এই প্ল্যাটফর্মের ইউজারদের মধ্যে আমেরিকার ইউজার সব থেকে বেশি। প্রথমে এখানে অ্যাকাউন্ট করার পর আপনাকে অ্যাপ্লিকেশান অ্যাপ্রুভ হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। অ্যাকাউন্ট অ্যাক্টিভ হলে আপনি কাজের জন্য অ্যাপ্লাই করতে পারবেন।

বাংলাদেশের জন্য সেরা ফ্রিল্যান্সিং সাইট কোনটি

ফাইবার

পৃথিবীতে যত ফ্রীল্যান্সার আছে তাদের সাপ্লাই দেশ হিসেবে বাংলাদেশের অবস্থান ২য়। অর্থাৎ বিশ্বে যত দেশ থেকে ফ্রিল্যান্স সার্ভিস দেয় তাদের মধ্যে বাংলাদেশ দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে। যাইহোক, বাংলাদেশ থেকে ফ্রিল্যান্সিং কাজ করার জন্য ফাইবার সব থেকে সহজ এবং কার্যকরী। এখানে অ্যাকাউন্ট খোলা থেকে কাজ করা পর্যন্ত অনেক রিসোর্স পাওয়া যায়।

কাজ করার পর পেমেন্ট নেওয়ার সময় তেমন ঝামেলা পোহাতে হয় না। সর্বোপরি এটি বাংলাদেশ থেকে ফ্রিল্যান্সিং করার সব থেকে সেরা মাধ্যম।

আপওয়ার্ক

আপওয়ার্ক ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেস হিসেবে অনেক পুড়নো এবং বিশ্বস্ত। এখানে প্রতিটি প্রোজেক্ট অনেক সাজানো ও গোছানো হয়ে থাকে। এখানে নতুন ফ্রিল্যান্সারদের থেকে অভিজ্ঞদের কদর বেশি। এই প্ল্যাটফর্মে প্রতিটি প্রোজেক্টে বিড করার জন্য নির্দিষ্ট পরিমাণ কানেক্ট খরচ করতে হয়। অনেক বাংলাদেশি ফ্রীল্যান্সার এখান থেকে অনেক পরিমাণে অর্থ উপার্জন করে।

আমাদের কথা মাথায় রেখে আপওয়ার্ক তাদের পেমেন্ট সিস্টেম অনেক সহজ এবং বাংলাদেশের জন্য উপযুক্ত করে রেখেছে।

ফ্রীলান্সার

এখানে অনেক ধরনের প্রোজেক্ট পাওয়া যায়। ফ্রীল্যান্সারে যেমন অনেক ছোট ছোট বিষয়ের উপরে কাজ পাওয়া যায় তেমনি অনেক বড় বড় বিষয়ের উপরেও কাজ করতে পারবেন। বাংলাদেশের অনেক মানুষ তাদের ফ্রিল্যান্সিং ক্যারিয়ার এই মাধ্যম ব্যবহার করে তৈরি করেছে। এখানে কাজে বিড করার পাশাপাশি কন্টেস্টে যোগ দিয়ে আয় করতে পারবেন।

পিপল পার আওয়ার

উপরে বর্ণিত প্ল্যাটফর্ম থেকে এটি একটু কঠিন। পিপল পার আওয়ারে নতুন হিসেবে কাজ পাওয়া গেলেও ভালোমানের স্কিল নিয়ে জবে অ্যাপ্লাই করতে হয়। তবে বাংলাদেশের অনেক ফ্রীল্যান্সার এখানে তাদের ভবিষ্যৎ তৈরি করছে। এর ধারাবাহিকটায় আপনি বাংলাদেশ থেকে পিপল পার আওয়ারে সহজেই ফ্রিল্যান্স প্রোজেক্ট করতে পারবেন।

উপসংহার

আশা করছি নতুন ফ্রিল্যান্সারদের জন্য সেরা মার্কেটপ্লেস কোনটি ধারনা পেয়েছেন এই আর্টিকেলটিতে, এই আর্টিকেলটি পুরোটা পড়ে যদি আপনাদের সামান্যতম উপকারে আসে তাহলে আপনাদের পরিচিতি মানুষদের সাথে শেয়ার করতে পারেন। আর এ ধরনের বা বিভিন্ন রকমের আর্টিকেল পড়তে আমাদের সাইডে ভিজিট করে দেখুন ধন্যবাদ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url