কর্মসংস্থান ব্যাংক অনলাইন লোন আবেদন
প্রিয় পাঠক কর্মসংস্থান ব্যাংক অনলাইন লোন আবেদন বাংলাদেশে শিক্ষিত বেকার যুবক-যুবতীর সংখ্যা অনেক। তাদের বিভিন্ন উপায়ে কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করে দিতে সরকার ইতোমধ্যে নানান কর্মসূচি হাতে নিয়েছে।সরকারের এসব কর্মসূচির মধ্যে “কর্মসংস্থান ব্যাংক লোন” একটি জনপ্রিয় ঋণ সুবিধা। এই স্কিমের আওতায় শিক্ষিত ও বেকার যুবক-যুবতীরা সহজ শর্তে ঋণ নিতে পারে।
ভূমিকা
আপনি যদি কোনো লাভজনক ব্যবসায় বা প্রকল্প শুরু করতে চান তাহলে প্রকল্পের আকার অনুযায়ী আপনার মূলধন প্রয়োজন হবে।অনেকেই এই মূলধনের যোগার করতে পারে না। তাদের জন্য কর্মসংস্থান ব্যাংক লোন একটা ভালো সমাধান হতে পারে। তবে এ ঋণ পেতে কর্মসংস্থান ব্যাংক লোন পাওয়ার উপায় কি তা ভালোমতো জানতে হবে।ব্লগের এই অংশে আমরা জানবো এই ঋণ সুবিধা পেতে হলে একজন আবেদনকারীর কি কি যোগ্যতা থাকতে হবে। এরপরে জানবো কিভাবে ঋণের জন্য আবেদন করবেন সে সম্পর্কে।
আরো পড়ুনঃ ব্র্যাক এনজিও লোন পদ্ধতি
কর্মসংস্থান ব্যাংক লোন পাওয়ার উপায়
- আপনি যদি কোনো লাভজনক ব্যবসায় বা প্রকল্প শুরু করতে চান তাহলে প্রকল্পের আকার অনুযায়ী আপনার মূলধন প্রয়োজন হবে।
- অনেকেই এই মূলধনের যোগার করতে পারে না। তাদের জন্য কর্মসংস্থান ব্যাংক লোন একটা ভালো সমাধান হতে পারে। তবে এ ঋণ পেতে কর্মসংস্থান ব্যাংক লোন পাওয়ার উপায় কি তা ভালোমতো জানতে হবে।
- ব্লগের এই অংশে আমরা জানবো এই ঋণ সুবিধা পেতে হলে একজন আবেদনকারীর কি কি যোগ্যতা থাকতে হবে। এরপরে জানবো কিভাবে ঋণের জন্য আবেদন করবেন সে সম্পর্কে।
কর্মসংস্থান ব্যাংক লোন নেওয়ার যোগ্যতা
- আবেদনকারীকে অবশ্যই বাংলাদেশের নাগরিক হতে হবে।
- আবেদনকারীর বয়স ১৮ থেকে ৪৫ বছরের মধ্যে হবে। তবে বিশেষ ক্ষেত্রে এই বয়সসীমা বৃদ্ধি পেতে পারে।
- আবেদনকারী ব্যাংকের যে শাখায় আবেদন করবে সে এলাকার স্থায়ী বাসিন্দা হতে হবে।
- অন্যকোনো সরকারি বা বেসরকারি ব্যাংক থেকে ঋণ খেলাপি করা যাবে না।
- আবেদনকারীর পক্ষে একজন জামিনদার থাকতে হবে যিনি আবেদনকারীর অবর্তমানে ঋণ পরিশোধে সক্ষম।
- সরকারি প্রতিষ্ঠান কিংবা সরকার অনুমোদিত কোনো বেসরকারি প্রতিষ্ঠান থেকে আবেদনকারীকে সংশ্লিষ্ট বিষয়ে প্রশিক্ষণ সম্পন্ন করতে হবে।
- আবেদনকারীকে বেকার অথবা অর্ধবেকার হতে হবে।
- কমপক্ষে পঞ্চম শ্রেণি পাস করতে হবে।
- কেউ যদি কর্মসংস্থান ব্যাংক লোন পদ্ধতি ২০২৪ এর আওতায় কোনো ঋণ সুবিধা পেতে চায় তাহলে উপরিউক্ত শর্তগুলো পূরণ করতে হবে।
- এখানে আবেদনকারীর পক্ষে অবশ্যই একজন Guarantor বা জামিনদার থাকতে হবে। উক্ত জামিনদার তার পরিবারের যেকেউ হতে পারে কিংবা পরিচিত যেকেউ হতে পারে।
- আর জামিনদারকে ব্যাংকের উক্ত শাখার এলাকার স্থায়ী বাসিন্দা হতে হবে। এছাড়া ঋণ পরিশোধে সক্ষম যেমন জমি-জায়গা, বাড়ি-স্থাপনা থাকতে হবে।
- এছাড়া ঋণ পাওয়ার জন্য প্রার্থীকে সরকারি কোনো প্রতিষ্ঠান (যেমন: যুব উন্নয়ন প্রশিক্ষণ কেন্দ্র, বিটাক, টিটিসি ইত্যাদি) অথবা সরকার অনুমোদিত দক্ষতা উন্নয়ন প্রশিক্ষণ কেন্দ্র থেকে কোর্স সম্পন্ন করতে হবে।
কর্মসংস্থান ব্যাংক লোন পদ্ধতি ২০২৫
- দেশের বেকার অথচ শিক্ষিত ও দক্ষ নাগরিকদের কর্মসংস্থান সৃষ্টির লক্ষ্যে স্বল্প সুদে, জামানতবিহীন ও সহজ শর্তে ঋণ প্রদান করে থাকে ব্যাংকটি।
- কর্মসংস্থান ব্যাংক লোন পদ্ধতি সম্বন্ধে জানার আগে এই ব্যাংক কোন কোন খাতে কীধরনের ঋণ সুবিধা দিয়ে থাকে তা জানতে হবে।
কর্মসংস্থান ব্যাংক লোনের খাতসমূহ
- ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প
- মৎস সম্পদ
- প্রাণি সম্পদ
- সেবা খাত
- বাণিজ্যিক খাত
- যানবাহন ও পরিবহন
- শিল্প কারখানা
- অন্যান্য উৎপাদনশীল প্রকল্প
- উপরোক্ত খাতসমূহের জন্য একজন নাগরিক ঋণের আবেদন করতে পারে।
কর্মসংস্থান ব্যাংক ঋণ পেতে প্রয়োজনী কাগজপত্র
- আপনি এই ঋণ সুবিধা পাওয়ার জন্য আবেদন করলে কিছু কাগজপত্রের প্রয়োজন হবে। এখানে সেগুলোই উল্লেখ করেছি।
- আবেদনকারীর জাতীয় পরিচয়পত্র
- সদ্য তোলা চার কপি পাসপোর্ট সাইজের রঙিন ছবি
- প্রশিক্ষণ সম্পন্ন করার সনদপত্র বা প্রমাণপত্র
- জামিনদারের জাতীয় পরিচয়পত্র
- দুই কপি পাসপোর্ট সাইজের রঙিন ছবি
- আবেদনকারী ও জামিনদারের স্থায়ী ঠিকানা প্রমাণের কাগজ
- এবার আসুন জেনে নিই এই লোন পেতে হলে কি কি ধাপ অনুসরণ করতে হবে। নিচে কর্মসংস্থান ব্যাংক লোন পদ্ধতি ২০২৫ উল্লেখ করা হলো।
ধাপ ১
- সর্বপ্রথম আবেদনকারীকে উপরে উল্লিখিত প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সংগ্রহ করতে হবে।
ধাপ ২
- আবেদনকারীর নিকটস্থ কর্মসংস্থান ব্যাংকের শাখা থেকে আবেদন ফরম সংগ্রহ করতে হবে এবং তা সঠিকভাবে পূরণ করতে হবে।
ধাপ ৩
- আবেদন ফরমের সাথে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সংযুক্ত করতে হবে এবং আবেদনপত্র দাখিল করতে হবে।
ধাপ ৪
- আবেদনপত্র দাখিলের সর্বোচ্চ ৪৫ দিনের মধ্যে তা ঋণ মঞ্জুর করা হবে। আর ঋণ প্রাপ্তির জন্য অযোগ্য বিবেচিত হলেও তা কারণ উল্লেখপূর্বক জানিয়ে দেওয়া হবে।
- এই ধাপগুলি অনুসরণ করে আপনি Karmasangsthan Bank Loan এর জন্য আবেদন করতে পারেন।
কর্মসংস্থান ব্যাংক লোন আবেদন ফরম
- আশা করছি এতক্ষণে কর্মসংস্থান ব্যাংক লোন পদ্ধতি ২০২৪ সম্পর্কে জেনেছেন। আবেদন করার জন্য সর্বপ্রথম আবেদন ফরম সংগ্রহ করতে হয়।
- এজন্য আপনি ব্যাংকের নির্দিষ্ট শাখা থেকে আবেদন ফরম সংগ্রহ করতে পারবেন। আবার চাইলে অনলাইন থেকেও ফরম সংগ্রহ করতে পারবেন।
কর্মসংস্থান ব্যাংক লোন সুদের হার
- এই ঋণের সবচেয়ে বড় সুবিধা হলো অল্প সুদে সহজ শর্তে ঋণ নেওয়া যায়। যা অন্যান্য বাণিজ্যিক ব্যাংকের স্কিমে পাওয়া সম্ভব না।
- নিচে বিভিন্ন ধরণের কর্মসংস্থান ব্যাংক লোন এর সুদের হার উল্লেখ করা হলো।
- বেশিরভাগ প্রকল্পের ক্ষেত্রে কর্মসংস্থান ব্যাংক লোন সুদের হার ৯%। তবে কিছু প্রকল্পের জন্য এই হার ভিন্ন হয়ে থাকে। এ বিষয়ে বিস্তারিত জানতে নিকটস্থ ব্যাংকের শাখায় জিজ্ঞাসা করতে পারেন।
কর্মসংস্থান ব্যাংক লোন পরিশোধ পদ্ধতি
- কর্মসংস্থান ব্যাংক লোন এর মেয়াদ ২ বছর থেকে সর্বোচ্চ ৫ বছর পর্যন্ত হয়ে থাকে। আর একজন গ্রাহক সর্বোচ্চ ৫ লাখ টাকা পর্যন্ত ঋণ নিতে পারবে।
- প্রকল্পের ধরণ ও মেয়াদের উপরে নির্ভর করে কর্মসংস্থান ব্যাংক লোন পরিশোধ পদ্ধতি ভিন্ন হয়ে থাকে। সাধারণ মাসিক, দ্বিমাসিক, ত্রৈমাসিক, ষান্মাসিক কিংবা বার্ষিক কিস্তিতে এই ঋণ পরিশোধ করা যায়।
- যেসব ব্যবসায় বা প্রকল্প থেকে মাসিক ভিত্তিতে আয় হয় তারা মাসিক কিস্তি পরিশোধ করবে আর যেসব প্রকল্পের আয় বাৎসরিক তারা বার্ষিক কিস্তিতে ঋণের টাকা পরিশোধ করতে পারবে।
কর্মসংস্থান ব্যাংক এর শাখাসমূহ
- বাংলাদেশের প্রতিটি জেলা ও উপজেলায় কর্মসংস্থান ব্যাংক এর একাধিক শাখা রয়েছে। এছাড়া সারা দেশব্যাপী ব্যাংকটির ৩৩টি আঞ্চলিক কার্যালয় রয়েছে।
- আপনার এলাকার কর্মসংস্থান ব্যাংকের ঠিকানা জানতে গুগলে সার্চ করতে পারেন অথবা পরিচিত কাউকে জিজ্ঞাসা করতে পারেন।
লেখকের শেষ কথা
আশা করছি কর্মসংস্থান ব্যাংক অনলাইন লোন আবেদন ধারনা পেয়েছেন এই আর্টিকেলটিতে, এই আর্টিকেলটি পুরোটা পড়ে যদি আপনাদের সামান্যতম উপকারে আসে তাহলে আপনাদের পরিচিতি মানুষদের সাথে শেয়ার করতে পারেন। আর এ ধরনের বা বিভিন্ন রকমের আর্টিকেল পড়তে আমাদের সাইডে ভিজিট করে দেখুন ধন্যবাদ।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url