বাড়ীতে বিড়াল পোষা কি জায়েজ
প্রিয় পাঠক ইসলামের দৃষ্টিতে বিড়াল পালনে কোনো অসুবিধা নেই। তবে বিড়ালকে পর্যাপ্ত খাদ্য-পানীয় সরবরাহ করতে হবে। বিড়ালের প্রতি যথাযথ দয়া-অনুগ্রহ দেখাতে হবে। বিড়ালকে কোনো ধরনের কষ্ট দেওয়া যাবে না। তবে সবসময় সতর্ক থাকতে হবে, বিড়াল কোথাও নোংরা বা অপবিত্র করলে সেটা যেন পরিচ্ছন্ন করে নেওয়া হয়।বিড়ালের ওপর কোনো ধরনের অবিচার হলে গুনাহগার হতে হবে।
ভূমিকা
বিড়াল লালন-পালনে ইসলামে কোনও অসুবিধা নেই। বিড়ালকে পর্যাপ্ত খাদ্য-পানীয় সরবরাহ করতে হবে। বিড়ালের প্রতি যথাযথ দয়া-অনুগ্রহ দেখাতে হবে। বিড়ালকে কোনো ধরনের কষ্ট দেওয়া যাবে না। পবিত্রতা ও পরিচ্ছন্নতার প্রতি লক্ষ্য রাখতে হবে।
বিড়াল পালার আগে যা জানা প্রয়োজন
- বিড়াল মানুষের কাছাকাছি থাকতে ভালোবাসে। আর, সে খুব সহজেই পোষ মেনে যায়। তবে হুট করে একে বাড়িতে নিয়ে আসলেই হবে না। তার আগে প্রয়োজন বেশ কিছু প্রস্তুতির। সবার আগে জেনে নিন আপনার পরিবারের সদস্যরা এই বিষয়টি কীভাবে দেখবেন। কেননা সবাই এই আদুরে কিন্তু দুষ্টু প্রকৃতির প্রানীটিকে ভালো নাও বাসতে পারে।
- পরিবারের সদস্যেদের মতামত জেনে নেয়র পর বিড়াল পালনের নিয়ম সম্পর্কে জেনে নিন সাথে একে পোষ মানানোর উপায়গুলোও জেনে নিতে হবে। এছাড়াও প্রানীটিকে বাড়িতে আনার আগে আরও কিছু বিষয় জানা প্রয়োজন আর এগুলো হলো
আরো পড়ুনঃ কুরবানি করা কাদের ওপর ওয়াজীব
বিড়াল পালা কি জায়েজ
- আপনি যদি মুসলিম হয়ে থাকেন তাহলে ইসলামের দৃষ্টিতে বিড়াল লালন-পালন সম্পর্কে জেনে নিতে হবে। বিড়াল সম্পর্কে বেশ কিছু হাদিস ইসলামে রয়েছে যা থেকে জানা যায় যে বিড়াল পালন বৈধ তবে তার সঠিক যত্ন নেয়া জরুরী। অর্থাৎ তাদের কষ্ট দেয়া যাবে না।
- এছাড়াও আরো একটি ভিন্ন হাদিসে পশু-পাখি ও আল্লাহর যে কোন সৃষ্টির প্রতি দয়া দেখানোর কথা বলা হয়েছে কেননা এতে মহান রবের নিকট থেকেও দয়া লাভ করা যায়। সুতরাং ইসলামে বিড়াল পোষা জায়েজ।
বিড়াল পালন উপকারিতা ও অপকারিতা
- বিড়াল পালনের সবচেয়ে বড় সুবিধা হল একাকীত্ব দূর করা। বিড়াল আপনার বন্ধুসুলভ আচরণ খুব ভালোভাবেই বুঝতে পারে তাই সে তা ফেরতও দিতে পারে। বিড়ালের যত্ন নিতে নিতে আপনি অন্যদের প্রতিও যত্নশীল হয়ে উঠবেন। যেহেতু বিড়াল কম খাবার খায় তাই কম খরচে একটি ভালো সঙ্গী পাবেন।
- বিভিন্ন গবেষণা থেকে জানা যায়, বিড়াল পালন করলে মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটে যার প্রভাব শারীরিকভাবেও দেখা যায়। এছাড়াও একটি ছোট্ট গলু-মলু আদুরে বিড়াল আপনাকে স্মার্টও করে তুলবে।
- বিড়াল পালনের তেমন কোন অপকারিতা নেই। তবে একে বাইরের পশুর সাথে মিশতে দেয়া উচিত নয় কারন এতে রোগ-জীবাণু ছড়াতে পারে।
- বিড়ালকে যদি টিকা দেয়া না হয় তাহলে তার আঁচড় ও কামড়ে জলাতঙ্ক হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। যদিও পোষা বিড়াল সাধারনত আক্রমনাত্বক হয় না। এছাড়াও প্রায় সব ধরনের বিড়ালের লালা ও মলমূত্রে টকশোপ্লাজমসিস নামক জীবাণু থাকে যা মানবদেহে সংক্রমিত হতে পারে।
খাবার ও পুষ্টি
- ভিন্ন ভিন্ন জাতের বিড়াল ভিন্ন ভিন্ন খাবার খেতে পছন্দ করে। তাই বিড়ালের খাবার নির্বাচন করার আগে এই বিষয়টি মাথায় রাখতে হবে।
- বিড়ালের জন্য ঘরে তৈরি করা খাবারই সবচেয়ে ভালো। অন্য মশলা বাদ দিয়ে শুধু লবন দিয়ে মাছ বা মাংস সিদ্ধ করে তা ভাতের সাথে চটকিয়ে দেয়া যেতে পারে। এতে তাদের প্রয়োজনীয় পুষ্টি নিশ্চিত হবে।
- বিড়াল খাবার না খেলে জোর করা যাবে না। বরং খাবারে পরিবর্তন আনা যেতে পারে। এখন বাজারে অনেক রেডি ক্যাট ফুড পাওয়া যায়। এই খাবারগুলোর দাম কিছুটা বেশি হলেও স্বাদে ও পুষ্টিতে বেশ ভালো।
- অধিক ব্যায় এড়াতে বিড়ালের খাবারের তালিকা তৈরি করে রাখুন। এবার এই তালিকা অনুযায়ী মাঝে মাঝে ঘরে তৈরি খাবার আবার মাঝে মাঝে বাজারের রেডি ক্যাট ফুড দিন। এভাবে আপনার পোষ্যর পুষ্টিও বজায় থাকবে এবং আপনার ব্যায়ও সীমিত হবে।
টিকা
- টিকা হল এক ধরনের প্রতিষেধক যা মানবদেহের মতই বিড়ালের শরীরে অ্যান্টিবডি তৈরি করে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। বিড়ালের কিছু মারাত্বক রোগ আছে যা মানুষের শরীরে সক্রমিত হতে পারে কিন্তু টিকা দিলে মানুষ এবং বিড়াল উভয়েই নিরাপদ থাকে তাই টিকা দেয়া অনেক জরুরী।
- বিড়ালের অনেক ধরনের টিকা থাকলেও বাংলাদেশে মূলত ৩টি টিকা দেয়া হয়, এগুলো হল
- Nobivac vaccine
- Rabisin vaccine
- Quadricat vaccine
- যে কোন ভেটেনারি সেন্টার থেকে এই টিকাগুলো দেয়া যাবে।
উপসংহার
আশা করছি বাড়ীতে বিড়াল পোষা কি জায়েজ ধারনা পেয়েছেন এই আর্টিকেলটিতে, এই আর্টিকেলটি পুরোটা পড়ে যদি আপনাদের সামান্যতম উপকারে আসে তাহলে আপনাদের পরিচিতি মানুষদের সাথে শেয়ার করতে পারেন। আর এ ধরনের বা বিভিন্ন রকমের আর্টিকেল পড়তে আমাদের সাইডে ভিজিট করে দেখুন ধন্যবাদ।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url