অনলাইনে বিধবা ভাতা আবেদন করার নিয়ম ২০২৫

প্রিয় পাঠক অনলাইনে বিধবা ভাতা আবেদন করার নিয়ম ২০২৫ বিধবা ভাতা হলো এমন একটি সরকারী সুযোগ যা বাংলাদেশ সরকার বিধবা মহিলাদের অর্থনৈতিক সাহায্য প্রদানের মাধ্যমে তাদের জীবনযাত্রা সহায়তা করে, পরিবার ও সমাজে তাঁদের মর্যাদা বৃদ্ধি; এই ভাতা প্রদান করে সরকার বিধবা মহিলাদের বিভিন্ন মাধ্যমে তাদের আর্থিক স্বাধীনতা অর্জনে সাহায্য করতে চায়।
অনলাইনে বিধবা ভাতা আবেদন করার নিয়ম ২০২৫

ভূমিকা

প্রতিবছর একটি নির্দিষ্ট সময় বিধবা ভাতার আবেদন করা যায়, বেশিরভাগ সময় দেখা যায় বছরের শেষের দিকে আবেদন নেয়া হয়, আপনি সমাজকল্যান অধিদপ্তর এর অফিসিয়াল ওয়েবসাইট(https://dss.gov.bd/) থেকে দেখতে পাবেন অথবা আপনার ইউনিয়ন পরিষদ কিংবা উপজেলা সমাজকল্যান অধিদপ্তর এ গিয়ে জানতে পারবেন। বিধবা ভাতার আবেদন অনলাইনে

বিধবা ভাতা কি

  • বিধবা ভাতা হলো বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক প্রদত্ত একটি সামাজিক ভাতা যা সাধারণত স্বামী হারা মহিলাদেরকে দেওয়া হয় । তবে স্বামী মারা যাওয়ার পর সকল মহিলা কিন্তু এই ভাতার জন্য আবেদন করতে পারবে না । যদি মহিলার পরিবার আর্থিকভাবে সচ্ছল হয় তাহলে সে ব্যক্তি বিধবা ভাতার জন্য আবেদন করা সুযোগ পাবে না ।
  • আর যদি কোন মহিলা পারিবারিকভাবে আর্থিক অবস্থা অসচ্ছল এবং সংকটাপ্নন হয় তাহলে তার জন্য এই বিধবা ভাতা সরকার দিবে । এই ভাতা বাংলাদেশ সরকার ১৯৯৮ ৯৯ অর্থবছরে সমাজসেবা অধিদপ্তর কর্তৃক চালু করা হয়েছে । স্বামী মারা যাওয়ার পর একজন মহিলা যাতে আর্থিকভাবে সচ্ছল হতে পারে তার জন্য এই ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে ।

বিধবাভাতা আবেদনের শর্তাবলী

  1. বিধবাভাতা আবেদন করার জন্য আপনার বেশ কয়েকটি যোগ্যতা থাকতে হবে। বিধবাভাতা পেতে হলে আপনাকে যেসব শর্তগুলো মানতে হবে তা নিম্নে তুলে ধরা হলঃসংশ্লিষ্ট এলাকার স্থায়ী বাসিন্দা হতে হবে।
  2. জন্ম নিবন্ধন/জাতীয় পরিচয়পত্র থাকতে হবে।
  3. বয়ঃবৃদ্ধা অসহায় মহিলাকে অগ্রাধিকার প্রদান করা হবে।
  4. যেই মহিলা বলতে গেলে প্রায় ভূমিহীন, অসহায়, বা স্বামী পরিত্যক্তা এবং এর পাশাপাশি যাদের যার ১৬ বছর বয়সের নীচে ২টি ছেলে মেয়ে আছে, সন্তন রয়েছে তারা অগ্রাধিকার পাবেন।
  5. যারা স্বামী হারিয়েছেন তাদের মধ্যে কেউ যদি প্রতিবন্ধী ও অসুস্থ হয়ে থাকে তারা বিধবা ভাতার জন্য বেশি অগ্রাধিকার পাবেন।
  6. প্রার্থীর বার্ষিক গড় আয় অনূর্ধ ১২,০০০ (বারো হাজার) টাকা হতে হবে।
  7. বাছাই কমিটি কর্তৃক নির্বাচিত হতে হবে।
  8. আপনাকে বিধবাভাতা আবেদন এর জন্য উপরের উল্লেখিত যোগ্যতা বা শর্তগুলো মানতে হবে। আশা করি এই পর্যন্ত পড়ে আপনারা বিধবা ভাতার আবেদন এর জন্য কি কি প্রয়োজন বা আবেদন এর নিয়ম সম্পর্কে জানতে পেরেছেন। চলুন বিধবাভাতা নিয়ে আরো কিছু তথ্য জেনে নেই।

বিধবা ভাতা কারা কারা পাবে?

  • আপনার যদি বয়স কম হয় এবং আপনার স্বামী যদি মারা যায় তাহলে বিধবা ভাতার জন্য চাইলে আবেদন করতে পারেন । তবে এখানে একটি বিষয় সবসময় মাথা রাখবেন বিধবা ভাতা হচ্ছে সম্পূর্ণ সামাজিক একটি ভাতা যা শুধুমাত্র সমাজের অসচ্ছল ও অবহেলিত মহিলাদের জন্য চালু করা হয়েছে । 
  • যদি আপনার আর্থিক অবস্থা ভালো হয় তাহলে এই ভাতার জন্য আবেদন করবেন না ।
  • আপনি যদি আর্থিকভাবে সচ্ছল ব্যক্তি হন অর্থাৎ ভালোমতো চলাফেরা এবং সন্তানদের দেখাশোনা করার মত অর্থ থাকে তাহলে আবেদন না করাই ভালো । কারণ এতে অন্য অসহায় মহিলারা আবেদন করার সুযোগ পাবে ।
  •  সে নিজে এবং তার সন্তানদের নিয়ে খেয়ে পড়ে বেঁচে থাকার সংগ্রাম করার সুযোগ পাবে । অতএব বলা যায় বিধবা ভাতাটি শুধুমাত্র হতদরিদ্র বা অসহায় স্বামীহারা নারীদের জন্য প্রযোজ্য

বিধবা ভাতা আবেদন করতে কি কি লাগে

এতক্ষণ আমরা জানতে পারলাম বিধবা ভাতা আসলে কি এবং কারা কারা এই ভাতার জন্য উপযুক্ত ব্যক্তি । এখন আমরা জানবো অনলাইনে বিধবা ভাতার আবেদন করার জন্য কি কি ডকুমেন্ট লাগবে । আপনি যদি এই ভাতা আবেদন করতে আগ্রহী হয়ে থাকেন তাহলে অবশ্যই সবার প্রথমে ডকুমেন্টগুলো সংগ্রহ করে নিবেন । 

ডকুমেন্ট গুলো নিচে তুলে ধরা হলোঃ
  1. জাতীয় পরিচয় পত্রের ফটোকপি
  2. স্বামীর মৃত্যুর সনদপত্রের ফটোকপি
  3. দুই কপি পাসপোর্ট সাইজের ছবি
  4. মোবাইল ফোন নাম্বার (সচল নাম্বার)
  5. বিকাশ রকেট বা নগদ অ্যাকাউন্ট থাকতে হবে
  6. বিধবা ভাতা আবেদন ফরম সাবমিট করা
একজন বিধবা নারীর অনলাইনে বিধবা ভাতা আবেদন করার জন্য উপরে যতগুলো ডকুমেন্ট দেওয়া হয়েছে সেগুলো অবশ্যই অবশ্যই লাগবে । অন্যথায় সেই ব্যক্তি আবেদন করতে পারবেন না । তবে আবেদন করার পূর্বে অবশ্যই ডকুমেন্ট গুলো সত্য হতে হবে । ভুলভাল তথ্য দিলে আপনার আবেদন বাতিল বলে গণ্য হবে ।

বিধবা ভাতা অনলাইনে আবেদন করার নিয়ম

আপনি যদি অনলাইনে বিধবা ভাতার জন্য আবেদন করতে চান তাহলে https://shorturl.at/qyDJ8 লিংকে প্রবেশ করুন । তারপর নিচের দিকে স্ক্রল করে এসে দেখতে পাবেন বিধবা ও স্বামী পরিত্যক্ত ভাতা আবেদন ফরম রয়েছে । এখন এই ফরমটি আপনাকে ডাউনলোড করতে হবে । ফর্ম টি পিডিএফ আকারে রয়েছে যা আপনি খুব সহজে এডিট করতে পারবেন ।
ধাপ ১ 
  • সবার প্রথমে ফরমে কার্যালয় এবং জেলার নাম দিবেন । তারপর যথাক্রমে বয়স, নাম, পিতার নাম, মাতার নাম, মৃত স্বামীর নাম ঠিকানা (বর্তমান ও স্থায়ী ঠিকানা) এবং আবেদনকারীর বার্ষিক গড় আয় সহ যা যা তথ্য দিতে বলবে সব কিছু সুন্দর ভাবে পূরণ করে নিবেন ।
ধাপ ২
  • এখন মনোনীত ব্যক্তির নাম, ঠিকানা, ভাতা গ্রহিতার সঙ্গে সম্পর্ক, মনোনীত ব্যক্তির নমুনা স্বাক্ষর অথবা টিপসহি, ভাতা ভোগীর স্বাক্ষর বা টিপসহি, এবং তারিখ দিতে হবে । সবশেষে আবেদনকারীর স্বাক্ষর অথবা টিপসহি এবং আবেদনকারীর নাম লিখে ফরম পূরণ কাজ সম্পন্ন করতে হবে ।
ধাপ ৩ 
  • আপনার আবেদন সফলভাবে সম্পন্ন হওয়ার পর আবেদন ফরম ডাউনলোড করতে হবে । তারপর সেটি প্রিন্ট করে আপনার ইউনিয়ন পরিষদের মেম্বার অথবা চেয়ারম্যানের কাছে জমা দিতে হবে । তাছাড়া আপনি চাইলে সরাসরি উপজেলা সমাজসেবা অধিদপ্তর অফিসে জমা দিতে পারবেন ।
  • আপনারা যারা বিধবা ভাতার জন্য আবেদন করবেন তারা অবশ্যই একটা বিষয় মাথায় রাখবেন আবেদনকারীর গড় বাৎসরিক আয় ১০ হাজার টাকার নিচে হতে হবে । যদি আপনার বাৎসরিক আয় বেশি হয় তাহলে কিন্তু আপনার আবেদন বাতিল হবে । তাই অবশ্যই মনে রাখবেন আপনি যদি অসচ্ছল, অসহায় এবং নিপীড়িত ব্যক্তি হয়ে থাকেন তাহলে এই ভাতার জন্য আবেদন করবেন । অন্যথায় আবেদন করবেন না ।

বিধবা ভাতা কত টাকা দেওয়া হয়

অনলাইনে সফলভাবে আবেদন করার পর এখন আমরা জানবো প্রতি মাসে নাকি তিন মাস পর পর বিধবার ভাতা দেওয়া হয় এবং কত টাকা করে দেওয়া হয় । এই ভাতা সাধারণত তিন মাস পর পর দেওয়া হয় আবার অনেক সময় প্রতি মাসেও দেওয়া হয়ে থাকে । একজন বিধবা নারীর প্রতি মাসে ৫৫০ টাকা নাগাদ বিধবার ভাতা পাবেন একটা সময় ছিল এই ভাতার টাকা।

তোলার জন্য একজন বিধবা নারীকে ইউনিয়ন পরিষদ অথবা উপজেলা পরিষদে যেতে হতো । কিন্তু বর্তমান সময়ে অনলাইন মোবাইল ব্যাংকিং সারা দেশব্যাপী জনপ্রিয় হওয়ার পর সরকার সেই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে লাইন ধরে ইউনিয়ন পরিষদ বা উপজেলা পরিষদে ভাতার টাকা বন্ধ করে দিয়েছে । মোবাইল ব্যাংকিং অ্যাকাউন্ট বিকাশ।
  •  রকেট অথবা নগদ ব্যবহার করে প্রতি মাসে বা তিন মাস পর পর ভাতার টাকা নেওয়া যায় ।

লেখকের শেষ কথা

আশা করছি অনলাইনে বিধবা ভাতা আবেদন করার নিয়ম ২০২৫ ধারনা পেয়েছেন এই আর্টিকেলটিতে, এই আর্টিকেলটি পুরোটা পড়ে যদি আপনাদের সামান্যতম উপকারে আসে তাহলে আপনাদের পরিচিতি মানুষদের সাথে শেয়ার করতে পারেন। আর এ ধরনের বা বিভিন্ন রকমের আর্টিকেল পড়তে আমাদের সাইডে ভিজিট করে দেখুন ধন্যবাদ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url