দলিল ই রেজিস্ট্রেশন ২০২৪-অনলাইনে দলিল রেজিস্ট্রেশনের জন্য কি কি কাগজ লাগে?
প্রিয় পাঠক রেজিস্ট্রি অফিসে ‘রেজিস্ট্রির জন্য দলিল গ্রহণ’ ও ‘দলিল রেজিস্ট্রি’ একই বিষয় নয়। রেজিস্ট্রির জন্য রেজিস্ট্রি অফিসে যে দলিলটি গৃহিত হলো তা রেজিস্ট্রি করতে অফিসভেদে দুই-তিন বছর পর্যন্ত সময় লাগতে পারে। রেজিস্ট্রির জন্য গৃহিত দলিলে প্রথমে দলিল দাখিলকারী, সম্পাদনকারী, সনাক্তকারী, দলিল দাখিলের সময়-তারিখ, পরিশোধকৃত ফি, কর ও শুল্ক ইত্যাদি।
জমি রেজিস্ট্রি করা সম্পত্তির মালিকানা নিশ্চিত করার একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। এই প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে, আপনাকে নির্দিষ্ট কিছু কাগজপত্র জমা দিতে হবে।
ভূমিকা
দলিল রেজিস্ট্রির জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র ক্রেতাকে সংগ্রহ করতে হবে। বিক্রেতার নিকট থেকে জমির মালিকানা সম্পর্কিত কাগজপত্র যেমন, প্রয়োজনীয় বায়া দলিল, খতিয়ান (সি,এস,; এস,এ,; আর,এস, বা বি,এস,; নামজারি বা খারিজ ইত্যাদি; আপনার জন্য যেটি প্রযোজ্য), ভূমি উন্নয়ন কর (পূর্বে খাজনা নামে পরিচিত ছিল) পরিশোধের রশিদ, মৌজা ম্যাপ, রিটার্ন সার্টিফিকেট, জাতীয় পরিচয়পত্র/পাসপোর্ট/জন্মসনদপত্র ইত্যাদি সংগ্রহ করে তা যাচাই-বাছাই করতে হবে।
অনলাইনে দলিল রেজিস্ট্রেশনের জন্য কি কি কাগজ লাগে?
বাংলাদেশে অনলাইন দলিল রেজিস্ট্রেশন- বাংলাদেশে অনলাইন দলিল রেজিস্ট্রেশন ব্যবস্থা চালু আছে। এই ব্যবস্থার মাধ্যমে আপনার দলিল রেজিস্ট্রেশন ভূমি অফিসের মাধ্যমে অনলাইন করতে হবে- দলিল ই রেজিস্ট্রেশন ২০২৪
অনলাইন দলিল রেজিস্ট্রেশনের সুবিধা কি?
- ঐতিহ্যবাহী পদ্ধতিতে দলিল রেজিস্ট্রেশন করতে অনেক সময় লাগে। অনলাইন দলিল রেজিস্ট্রেশনের মাধ্যমে আপনি অনেক কম সময়ে দলিল রেজিস্ট্রেশন করতে পারবেন। অনলাইন দলিল রেজিস্ট্রেশনের মাধ্যমে আপনি ঘরে বসেই দলিল রেজিস্ট্রেশন করতে পারবেন না।
- আপাতত ভূমি অফিসের মাধ্যমেই কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে অদূর ভবিষ্যতে ঘরে বসেই দলিল রেজিস্ট্রেশন করা যাবে। অনলাইন দলিল রেজিস্ট্রেশনের মাধ্যমে আপনার খরচ কম হতে পারে।
সারাদেশে কবে শুরু হবে অনলাইনে দলিল রেজিস্ট্রেশন?
- বাংলাদেশের পার্বত্য তিন জেলা বাদে দেশের ৬১ জেলায় অনলাইনে ভূমি রেজিস্টার কার্যক্রম আরম্ভ করছে সরকার। রেজিস্ট্রেশন অধিদপ্তরের আওতাধীন ৪৮৮টি সাব-রেজিস্ট্রি কাজের জায়গায় কাগজের ভলিউমে কাগজপত্র রেজিস্ট্রির পরিবর্তে অনলাইনে নথিপত্ৰ রেজিস্ট্রি ও রেকর্ড সংরক্ষণের কার্যক্রম আগামী অর্থবছরেই শুরু হবে।
- ইতোমধ্যে এ- সংক্রান্ত প্রকল্প প্রস্তাব প্লানিং কমিশনের সাহায্যে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের সভায় (একনেক) সভায় পাশ হয়েছে এবং এজন্য ২০২৩-২৪ অর্থবছরের বাজেটে আইন মন্ত্রণালয়ের অগ্রগতি খাতে বিশেষ বরাদ্দ রাখা হয়েছে।
দলিল রেজিস্ট্রেশন করতে কি কি ডকুমেন্ট লাগে?
- সংশ্লিষ্ট জমির সি,এস,/এস,এ,/আর,এস (বি,এস/বি,আর,এস/দিয়ারা), নামজারি (খারিজ/ মিউটেশন) (যেখানে যা প্রযোজ্য) খতিয়ানের মূল কপি অথবা সহি মোহরীয় নকল। (eporcha.gov.bd এই ঠিকানায় গিয়ে অনলাইনে আবেদন করে খতিয়ান উঠানো যায়।) মাঠ পর্চা (প্রযোজ্য ক্ষেত্রে)
- (সংশ্লিষ্ট উপজেলার সেটেলমেন্ট অফিসারের কার্যালয় থেকে সংগ্রহ করুন। হাল সন পর্যন্ত ভূমি উন্নয়ন কর (খাজনা) পরিশোধের রশিদ (দাখিলা)। ldtax.gov.bd এই ঠিকানায় গিয়ে কর পরিশোধ করে দাখিলা ডাউনলোড করে নিন। ওয়ারিশ সনদ (প্রযোজ্য ক্ষেত্রে)। (অর্থাৎমৃত ব্যক্তির ওয়ারিশ হয়ে কোন সম্পত্তি বিক্রির ক্ষেত্রে)।
- দলিল অনলাইনে রেজিস্ট্রেশন করতে হবে / রেজিস্ট্রেশনের সময়ই নামজারি সম্পন্ন হবেঅনলাইন দলিল রেজিস্ট্রেশন ব্যবস্থা সকল দলিলের জন্য প্রযোজ্য নয়। অনলাইন দলিল রেজিস্ট্রেশন করার আগে আপনার দলিলটি অনলাইন দলিল রেজিস্ট্রেশনের জন্য উপযুক্ত কিনা তা নিশ্চিত করে নিন।
Deed E Registration 2024-অনলাইন দলিল রেজিস্ট্রেশন করার জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র
- দলিলের মূল কপি।
- দলিলের স্ক্যান করা কপি।
- আপনার জাতীয় পরিচয়পত্রের স্ক্যান করা কপি।
- আপনার টিআইন সার্টিফিকেটের স্ক্যান করা কপি।
- দলিলের নিবন্ধন ফি পরিশোধ করে রেজিষ্ট্রেশন সম্পন্ন করতে হবে।
অনলাইন দলিল রেজিস্ট্রেশন করার প্রক্রিয়া কি?
প্রথমে কর্তৃপক্ষ https://eregistration.gov.bd/ এই ওয়েবসাইটে গিয়ে রেজিস্ট্রেশন করে ইউজার আইডি ও পাসওয়ার্ড সংগ্রহ করবে। এরপর একটি অ্যাকাউন্ট তৈরি করতে হবে। অ্যাকাউন্ট তৈরি করার পর আপনার দলিলের স্ক্যান করা কপি আপলোড করতে হবে। এরপর দলিলের নিবন্ধন ফি প্রদান করতে হবে। সবশেষে, আপনার দলিল রেজিস্ট্রেশন করা হবে।
সাধারণ নাগরিক কি দলিল লিখতে পারবে?
- না দলিল লেখক হতে নির্ধারিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে হবে এবং সাব-রেজিস্টারের নিকট হতে সনদ গ্রহণ করতে হবে। চাইলেই নিজের দলিল নিজে লেখা যায় না। আপনি কোর্টে নিজের কেস নিজেই লড়তে পারবেন কিন্তু দলিল লেখক বা ভেন্ডার না হলে আপনি নিজের জমির দলিল নিজে লিখতে পারবেন না।
- পূর্বে নিজের হাতের লেখা দলিলের গ্রহণযোগ্যতা থাকলেও এখন বিনা রেজিস্ট্রেশন দলিলের কোন মূল্য বা গ্রহণযোগ্যতা নেই।
দলিল রেজিস্ট্রেশন না করলে কি কোন সমস্যা
- অবশ্যই সমস্যা। ২০০৫ সালের ১ জুলাই থেকে জমির যেকোনো হস্তান্তরযোগ্য দলিল রেজিস্ট্রেশন বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। আইন অনুযায়ী, যে দলিল রেজিস্ট্রেশন বাধ্যতামূলক অথচ রেজিস্ট্রেশন করা হয়নি, তখন সেই দলিল নিয়ে আপনি কোনো দাবি করতে পারবেন না। সাব-কবলা দলিল, হেবা বা দানপত্র, বন্ধকি দলিল, বায়না দলিল, বণ্টননামা দলিলসহ বিভিন্ন হস্তান্তর দলিল অবশ্যই রেজিস্ট্রি করতে হবে। দলিলের বিষয়বস্তু যে এলাকার এখতিয়ারের মধ্যে রয়েছে, সেই এলাকার সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে দলিল রেজিস্ট্রি করতে হবে।
দলিল রেজিস্ট্রি করতে খরচ কেমন?
- সম্পত্তির মূল্য পাঁচ লাখ টাকার বেশি না হলে ফি ৫০০ টাকা। পাঁচ লাখ টাকার বেশি কিন্তু ৫০ লাখ টাকার কম হলে ফি এক হাজার টাকা। মূল্য ৫০ লাখ টাকার বেশি হলে দুই হাজার টাকা। বন্ধকি অর্থের পরিমাণ পাঁচ লাখ টাকার বেশি না হলে ফি বন্ধকি অর্থের ১ শতাংশ এবং ২০০ টাকার নিচে ও ৫০০ টাকার বেশি নয়। অর্থের পরিমাণ পাঁচ লাখ টাকার ওপরে কিন্তু ২০ লাখ টাকার নিচে হলে বন্ধকি অর্থের শূন্য দশমিক ২৫ শতাংশ। তবে তা এক হাজার ৫০০ টাকার কম নয় এবং দুই হাজার টাকার বেশিনয়।
উপসংহার
আশা করছি দলিল ই রেজিস্ট্রেশন ২০২৪-অনলাইনে দলিল রেজিস্ট্রেশনের জন্য কি কি কাগজ লাগে? ধারনা পেয়েছেন এই আর্টিকেলটিতে, এই আর্টিকেলটি পুরোটা পড়ে যদি আপনাদের সামান্যতম উপকারে আসে তাহলে আপনাদের পরিচিতি মানুষদের সাথে শেয়ার করতে পারেন। আর এ ধরনের বা বিভিন্ন রকমের আর্টিকেল পড়তে আমাদের সাইডে ভিজিট করে দেখুন ধন্যবাদ।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url