ভাল স্বামী হওয়ার উপায়
প্রিয় পাঠক স্বামী স্ত্রীরসম্পর্কের সৌন্দর্যের চেয়ে ভালো কিছু এই জগতে আর নেই। মহান আল্লাহ তাআলা স্বামী স্ত্রী সম্পর্ক প্রথম তৈরি করেছেন। স্বামী স্ত্রী একে অপরের পরিপূরক। একজন স্বামীর কাছে তার স্ত্রী আমানত এবং স্ত্রীর কাছে তার স্বামী জান্নাত। একজন পুরুষের কাছে সবচেয়ে মূল্যবান তার স্ত্রী। স্বামী স্ত্রী উভয়ের ভালোবাসার ফলে পৃথিবীতে সুখ ও শান্তিময় জীবন যাপন করা সম্ভব।
ভূমিকা
প্রিয় পাঠক জীবনের নতুন এক অধ্যায়ের নাম বিয়ে। এই নতুন জীবন আর অভিজ্ঞতায় আপনার হাতটি যে ধরে রাখে সে আপনার জীবনসঙ্গী। একটি মেয়েকে যেমন নতুন পরিবেশে এসে ভালোবেসে নিজের আশেপাশের মানুষগুলোকে আপন করতে হয় তেমনি তার স্বামীকেও তার অর্ধাঙ্গীর প্রতি ভালোবাসা প্রকাশ করতে হয়, সহযোগিতার হাত বাড়াতে হয়। স্ত্রীর মন বুঝে, তার চাওয়া-পাওয়াকে গুরুত্বের সঙ্গে নিয়ে পথ চলতে হয়।
আদর্শ স্বামীর ১৩টি লক্ষণ
- একজন আদর্শ স্বামী শুধু সুন্দর কথাই বলেন না, তিনি সংসার জীবনের যেকোনো বিপদ ভালোভাবেই মোকাবিলা করতে জানেন। তিনি কখনো বিপদ দেখলে ভয় পান না এবং যেকোনো সমস্যা সমাধানে সর্বদা প্রস্তুত থাকেন।
- তিনি তার নিজের জন্য রাতের খাবার তৈরি করতে জানেন। আজকালকার মেয়েরা কর্মজীবনে ভীষণ ব্যস্ত থাকেন। এজন্য তারা এমন স্বামী আশা করেন যার জন্য অফিস থেকে ফিরেই তাকে রান্নাঘরে ঢুকতে হবে না। আর যে পুরুষ নিজের খাবারটা তৈরি করতে জানেন তাকে আদর্শ স্বামী না বলে উপায় আছে?
- অলসতা দূর করুনঅলসতা কোন নারীই পছন্দ করেনা। কিন্তু অনেক পুরুষের স্বভাবেই এই আলসেমি করার ব্যপারটা থাকে। আরাম মানে ছুটির দিনে টিভি দেখা কিংবা ইচ্ছাকৃত ভাবে বসে থাকা নয়। নিজের কাজ গুলো নিজে করুন। মাঝে মাঝে স্ত্রীর সাথে কাজে, রান্নায় সহায়তা করুন। এক্সারসাইজ করুন নিজেকে ফিট রাখতে, সপ্তাহে একদিন নিজেদের মধ্যে সাংসারিক কাজ গুলো ভাগাভাগি করে নিন। দেখবেন আপনার স্ত্রী খুশি হবে এবং আপনি নিজেও আত্মনির্ভরশীল হয়ে উঠবেন
- ভুল মানুষেরই হয়। আদর্শ স্বামী হলে তিনি সবসময় আপনার ভুল না ধরে উল্টো আপনাকে সমর্থন করবেন। এমনকি আপনি যদি বড় ধরনের ভুলও করে ফেলেন তাহলেও তিনি আপনাকে সমর্থন করে যাবেন।
- আপনার জীবনের সবকিছু স্বামীর মনে থাকতে হবে এমন কোনো কথা নেই। কিন্তু কোন বিষয়গুলোতে আপনার সমস্যা হয়, কিসে অসুস্থ হয়ে যান কিংবা কী পেলে খুশি হন এগুলো তার ঠিকই মনে থাকবে।
- স্ত্রীর প্রতি আপনার ভালোবাসা প্রকাশ করুনভালবাসেন ঠিকই কিন্তু প্রকাশ করতে পারছেন না, তাহলে কীভাবে চলবে বলুন? ভালোবাসা প্রকাশ করা মানেই কিন্তু শারীরিক সম্পর্ক না, ভালোবাসা প্রকাশ করার অনেক মাধ্যম আছে। যেমন, মাঝে মাঝে ছোট কোন উপহার সাথে ছোট একটি কাগজে ভালবাসার কথা জানিয়ে দিন, কারণ ছাড়াই জড়িয়ে ধরুন, ভালবাসি কথাটি মেসেজ করে বলুন, বাহিরে থাকলে তাকে আপনি মিস করছেন জানিয়ে দিন এইভাবেই প্রকাশ করুন স্ত্রীর কাছে নিজের ভালোবাসা গুলো। এই বিষয় গুলো ছাড়াও আরও অনেক বিষয় আছে নিজেকে একজন ভালো পুরুষ ও স্বামী হিসেবে গড়ে তুলতে। জীবনে চলতে গেলে বিষয় গুলো এমনিতেই চলে আসবে আপনার সামনে তখন ভালো মন্দটা বুঝে চলুন দেখবেন স্ত্রীকে নিয়ে সুখী হবেন
- তিনি শুধু সুদর্শনই হবেন না, জ্ঞানীও হবেন। দেখতে যতই সুন্দর হোক না কেন বুদ্ধি না থাকলে তার সঙ্গে সংসার করা খুবই কঠিন। আদর্শ স্বামী তিনিই যিনি মাথায় বুদ্ধিও রাখেন।
- আপনাকে কীভাবে চাঙ্গা করতে হয় এটা তিনি খুব ভালোভাবেই জানেন। যখন আপনার মন খারাপ থাকে কিংবা কোনো বিষয়ে বিরক্ত হন তখন এক নিমিষেই তিনি আপনার মন ভালো করে দেন।
- আদর্শ স্বামী খুব ভালো করেই জানেন যে কীভাবে আপস ও মধ্যস্থতা করতে হয়। তার যতই রাগ থাকুক না কেন ধৈর্য ধরে মধ্যস্থতা করতে তিনি একবারও পিছপা হন না।
- ছেলেরা সংসারের ঝামেলা বাইরে বয়ে বেড়াতে চান না। কিন্তু আদর্শ স্বামী বাসা থেকে বের হলেও সংসারের সমস্যাগুলো মাথায় রাখেন।
- স্বামী ও স্ত্রীর সম্পর্ক বন্ধুর মতো হওয়া উচিত। আদর্শ স্বামী স্ত্রীর মত বা সিদ্ধান্তকে গুরুত্বসহকারে নিয়ে থাকেন এবং সেটা বুঝে কাজ করারও চেষ্টা করেন।
- ঘরের যাবতীয় কাজে আদর্শ স্বামী তাঁর স্ত্রীকে সাহায্য করেন। এই কাজ করতে তাঁর কোনো ইগো সমস্যা কাজ করে না। কারণ তিনি এটা নিজেরই সংসার মনে করে থাকেন
- মিথ্যা ও প্রতারণা নয়স্ত্রীর নিখাদ ভালোবাসা পেতে চাইলে মিথ্যা কথা ছাড়ুন। তাকে কোনো কথা দিয়ে তা রক্ষা করুন। খুব ছোট বিষয়েও প্রতারণা করবেন না। তার বিশ্বাস একবার ভেঙে গেলে সে আপনাকে দ্বিতীয়বার বিশ্বাস নাও করতে পারে।
আদর্শ স্বামী হবেন যেভাবে
ভালোবাসা
- যেকোনো সম্পর্কের মূল ভিত্তি হয়ে থাকে ভালোবসা। যেখানে ভালোবাসা নেই সেখানে না থাকে বিশ্বাস না থাকে ভরসা। আর স্বামী-স্ত্রীর মাঝে এই ভালোবাসা থাকা সবচেয়ে বেশি জরুরি। স্ত্রীর প্রতি স্বামীর ভালোবাসা তার স্ত্রীকে যেমন তার প্রতি আস্থাশীল হতে শেখায় ঠিক তেমনই দুজনের মধ্যকার ভালোবাসার বন্ধনকে আরো দৃঢ় করে।
তাকে আগলে রাখা
- আপনি আপনার স্ত্রীকে যে ভালোবেসে আগলে রাখছেন তা তাকে ধীরে ধীরে আপনার কাজ দিয়ে বুঝান। এতে সে যেমন আপনাকে বিশ্বাস করতে শুরু করবে তেমনই তার প্রত্যেক সমস্যার সমাধানদাতা হিসেবে আপনাকেই বেছে নেবে। এতে সম্পর্ক হবে মজবুত আর ভালোবাসা হবে দৃঢ়। তখন পরস্পরের মধ্যকার বোঝাপড়া খুব সহজ হয়ে যাবে।
অবুঝ
- আপনি তার সাথে যখন অবুঝের মতো আচরণ করবেন তা হয়তো প্রথম প্রথম তাকে আনন্দ দেবে। আবার পরে হয়তো এটিই তার কাছে বিরক্তিকর লাগতে পারে। তাই তার কথা ও কাজ যে আপনি গুরুত্বের সঙ্গে নিচ্ছেন তা আপনার আচরণের মাধ্যমে বুঝিয়ে দিন। মাঝে মাঝে তাকেও তার মতো করে খুনশুটি করতে বলুন। সরাসরি না বলে এদিক সেদিক ঘুরিয়ে বলুন। ছেলেমানুষী আর সিরিয়াসনেস সম্পর্কের মাঝে দুটোই থাকুক সমান গুরুত্বের সঙ্গে।
যোগাযোগ
- আপনার স্ত্রী যখন আপনার কাছে থেকে দূরে থাকবে তখন তাকে একটু ফোন, মাঝেমাঝে মিষ্টি কিছু কথা লিখে এসএমএস করুন। এক্ষেত্রে তার মাঝেও নানাভাবে ভালোবাসা প্রকাশ করার ইচ্ছা জাগবে। যা সম্পর্কে আনবে নতুন মোড় আর একে অপরের প্রতি অফুরন্ত ভালোবাসা।
উপসংহার
আশা করছি ভাল স্বামী হওয়ার উপায় ধারনা পেয়েছেন এই আর্টিকেলটিতে, এই আর্টিকেলটি পুরোটা পড়ে যদি আপনাদের সামান্যতম উপকারে আসে তাহলে আপনাদের পরিচিতি মানুষদের সাথে শেয়ার করতে পারেন। আর এ ধরনের বা বিভিন্ন রকমের আর্টিকেল পড়তে আমাদের সাইডে ভিজিট করে দেখুন ধন্যবাদ।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url