ড্রাইভিং লাইসেন্স করার নিয়ম ২০২৪
প্রিয় পাঠক ড্রাইভিং লাইসেন্স অনলাইন আবেদন করতে BRTA এর ওয়েবসাইটে লার্নার ড্রাইভিং লাইসেন্স এর জন্য আবেদন করার পর, প্রশিক্ষন নিয়ে ড্রাইভিং পরীক্ষাতে পাস করে, নির্ধারিত ফি দিয়ে ড্রাইভিং স্মার্ট কার্ড পাওয়া যায়।অনলাইন ড্রাইভিং লাইসেন্সের জন্য আবেদন করার নিয়ম, ড্রাইভিং লাইসেন্স ফি ও কি কি কাগজপত্র প্রয়োজন সকল তথ্য নিচে আলোচনা করা হয়েছে ।
দেখুন- ইন্টারন্যাশনাল ড্রাইভিং লাইসেন্স করার নিয়ম
পরীক্ষায় পাস করলে অনলাইনে ফি পরিশোধ ।
ভূমিকা
একটি লাইসেন্স সম্পন্ন করতে গেলে প্রয়োজনীয় কিছু কাগজপত্রের পাশাপাশি দরকার হয় নির্ধারিত ফি পরিশোধের। আপনারা যারা নতুন গাড়ি কিনেছেন কিংবা কেনার আকাঙ্ক্ষা রয়েছে অথবা ড্রাইভিং লাইসেন্স করতে কত টাকা লাগে এ সম্পর্কে জানতে চান উক্ত আর্টিকেলটি আপনার জন্য।
আরো পড়ুনঃ অনলাইনে জন্ম নিবন্ধন করার নিয়ম জেনে নিন
ড্রাইভিং লাইসেন্স করার নিয়ম
ড্রাইভিং লাইসেন্স করার জন্য প্রথমে BRTA ওয়েবসাইট থেকে শিক্ষানবিস লাইসেন্সের জন্য আবেদন করতে হয়। এরপর নির্ধারিত তারিখে লিখিত, মৌখিক ও ফিল্ড টেস্ট দিতে হবে। পরীক্ষা পাশ করলে অনলাইনে ফি পরিশোধ করে সকল তথ্য ও ডকুমেন্ট সাবমিট করার করুন। স্মার্ট কার্ড প্রিন্ট হলে আপনার ঠিকানায় ডাকযোগে পাঠানো হবে।আসুন এবার বিস্তারিত ধাপগুলো জেনে নিই ড্রাইভিং লাইসেন্স করার নিয়ম। মোটরসাইকেল ড্রাইভিং লাইসেন্স করার নিয়ম বা অন্য যে কোন হালকা ও ভারী ড্রাইভিং লাইসেন্স করার নিয়ম একই, শুধুমাত্র পরীক্ষা ও ফি ভিন্ন।ড্রাইভিং লাইসেন্স করার জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সহ অনলাইনে bsp.brta.gov.bd ওয়েবসাইটে আবেদন করতে হবে তারপর নিচের ধাপগুলো অনুসরণ করুন:
ধাপ ১
- শিক্ষানবিস ড্রাইভিং লাইসেন্সের জন্য আবেদনআবেদনের পর অনলাইনে তার QR কোন সম্বলিত লার্নার বা শিক্ষানবিশ ড্রাইভিং লাইসেন্স ইস্যু হবে।
- গ্রাহক সেখান থেকে সাথে সাথেই তার শিক্ষানবিশ ড্রাইভিং লাইসেন্স প্রিন্ট করে নিতে পারবেন। এরপর ২/৩ মাস প্রশিক্ষণ গ্রহণের পর তাকে নির্ধারিত তারিখ ও সময়ে নির্ধারিত কেন্দ্রে পরীক্ষা দিতে হবে।
- পরীক্ষায় অংশগ্রহণড্রাইভিং লাইসেন্সের গ্রাহককে লিখিত, মৌখিক ও ফিল্ড টেস্ট- এ অংশগ্রহণ করতে হবে।
- এসময় গ্রাহককে প্রয়োজনীয় প্রমান, তার লার্নার বা শিক্ষানবিশ ড্রাইভিং লাইসেন্স, এনআইডি কার্ড এবং মেডিকেল ফিটনেসের ডকুমেন্ট আনতে হবে।ড্রাইভিং লাইসেন্স পরীক্ষার জন্য ট্রাফিক সাইন কত প্রকার ও কি কি, বিভিন্ন ট্রাফিক সাইন ও ট্রাফিক সিগনাল সম্পর্কে জানা থাকতে হবে।
- প্রয়োজনীয় তথ্যপ্রদান ও ফি পরিশোধ
- পরীক্ষায় পাস করার পর আবেদনকারীকে অনলাইনেই ফি পরিশোধ করতে হবে। একইসাথে BRTA সাইটে লগইন করে যাবতীয় তথ্য ও সংযুক্তি সাবমিট করতে হবে।
- লাইসেন্স স্ট্যাটাস চেক
- আবেদন করার পর আবেদনকারী BRTA DL Checker দিয়ে অনলাইনে স্ট্যাটাস চেক করতে পারবেন। তাৎক্ষণিক প্রয়োজন মেটাতে QR কোড সম্মলিত সিস্টেম জেনারেটর মোটরযান চালনার অস্থায়ী অনুমতি পত্র বা Acknowledge Slip সংগ্রহ করতে পারবে।
- লাইসেন্স প্রাপ্তি
- প্রিন্টিং কার্যক্রম সম্পাদন শেষ হলে আবেদনকারীর প্রদত্ত ঠিকানায় ডাকযোগে Driving License পাঠানো হয়।
স্মার্ট কার্ড ড্রাইভিং লাইসেন্স
Learner Driving License ব্যবহার করে মোটরযান চালানোর প্রশিক্ষণ নেওয়ার পর যে মূল লাইসেন্স পাবেন তাই স্মার্ট কার্ড ড্রাইভিং লাইসেন্স। দেশের অভ্যন্তরে প্রফেশনাল ভাবে ড্রাইভিং করার জন্য স্মার্ট কার্ড ড্রাইভিং লাইসেন্স ব্যবহৃত হয়।স্মার্ট কার্ড ড্রাইভিং লাইসেন্স করার প্রয়োজনীয় কাগজপত্র
- রেজিস্টার্ড ডাক্তার কর্তৃক মেডিকেল সার্টিফিকেট;
- নির্ধারিত ফর্মে আবেদন;
- সদ্য তোলা ১কপি পাসপোর্ট সাইজ ছবি;
- ন্যাশনাল আইডি কার্ডের সত্যায়িত ফটোকপি;
- পেশাদার লাইসেন্সের জন্য পুলিশ তদন্ত প্রতিবেদন;
- নির্ধারিত ফি বিআরটিএর নির্ধারিত ব্যাংকে জমাদানের রশিদ।
ইন্টারন্যাশনাল ড্রাইভিং লাইসেন্স
আন্তর্জাতিকভাবে পৃথিবীর অন্যান্য দেশের ব্যবহারের জন্য ভিন্ন রকম লাইসেন্স প্রয়োজন হয়। বিশেষ করে যারা প্রবাসে যেতে চায় তাদের জন্য আন্তর্জাতিক ড্রাইভিং পারমিট অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বর্তমানে বাংলাদেশে আন্তর্জাতিক ড্রাইভিং পারমিট সংগ্রহ করা যায়, যা দেশ ও দেশের বাইরে কার্যকর।দেখুন- ইন্টারন্যাশনাল ড্রাইভিং লাইসেন্স করার নিয়ম
আন্তর্জাতিক ড্রাইভিং লাইসেন্স করার জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র
- বিআরটিএ থেকে সাধারণ ড্রাইভিং লাইসেন্স সংগ্রহ করতে হবে;
- আন্তর্জাতিক ড্রাইভিং পারমিটের আবেদন ফরম;
- বিআরটিএ ড্রাইভিং লাইসেন্সের সত্যায়িত ফটোকপি;
- সদ্য তোলা ৪ কপি স্টাম্প সাইজ ও ১কপি পাসপোর্ট সাইজ ছবি;
- Automobile Association of Bangladesh অফিসে ফরম ও ফি জমা দিয়ে রশিদ গ্রহণ;
- পরবর্তীতে, রশিদে উল্লেখিত তারিখে অফিস থেকে লাইসেন্স সংগ্রহ করুন।
ড্রাইভিং লাইসেন্স কি
- যেকোনো ধরনের মোটরগাড়ি চালানো স্বীকৃতি স্বরূপ অনুমতি পত্রই ড্রাইভিং লাইসেন্স। বিভিন্ন জাতীয় ও আন্তর্জাতিক কার্যকলাপে ব্যক্তি পরিচয় সনাক্তকরণের ক্ষেত্রেও এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ নথি।
- পৃথিবীর সকল দেশেই ড্রাইভার লাইসেন্স ছাড়া রাস্তায় গাড়ি চালানো একটি দণ্ডনীয় অপরাধ। বাংলাদেশের মোটরযান অধ্যাদেশ ১৯৮৩ এর ৩নং ধারা অনুযায়ী, লাইসেন্স ছাড়া কোন ব্যক্তি রাস্তায় গাড়ি চালাতে পারবে না। গাড়ি চালানোর জন্য বৈধতার ক্ষেত্রে লাইসেন্সের বিকল্প নেই।
ড্রাইভিং লাইসেন্স কেন প্রয়োজন
ড্রাইভিং লাইসেন্সের সাথে চালকের দক্ষতার পাশাপাশি চালকের ব্যক্তিগত নিরাপত্তার বিষয়টিও জড়িত। বিভিন্ন সময় রাস্তায় আইন রক্ষা বাহিনী/ ট্রাফিক পুলিশ আপনার গাড়ি যব্দ করতে পারে। সেক্ষেত্রে প্রথমে আপনার কাছ থেকে Driving License দেখতে চাইবে।এছাড়াও কখনো রাস্তায় কোন দুর্ঘটনার পর আপনার পরিচয় জানার ক্ষেত্রেও এটি কাজে লাগতে পারে।ড্রাইভিং লাইসেন্স এর ধরণ
- ব্যবহার ও প্রয়োজন ভেদে ড্রাইভিং লাইসেন্স প্রধানত তিন ধরণের। যথা :-লার্নার বা শিক্ষানবিশ;
- স্মার্ট কার্ড ড্রাইভিং লাইসেন্স;
- ইন্টারন্যাশনাল ড্রাইভিং পারমিট।
- এই তিন ধরনের লাইসেন্সের অন্তর্ভুক্ত আরও কয়েক ধরনের লাইসেন্স রয়েছে।
ড্রাইভিং লাইসেন্স কিভাবে পাবো
ড্রাইভিং লাইসেন্স করার জন্য BRTA ওয়েবসাইটে শিক্ষানবিশ লাইসেন্সের জন্য আবেদন করুন। QR কোড সম্বলিত শিক্ষানবিশ ড্রাইভিং লাইসেন্স নিয়ে কেন্দ্র থেকে প্রশিক্ষণ নিন। তারপর পরীক্ষা নির্ধারিত দিন ও তারিখ অনুযায়ী কেন্দ্রে উপস্থিত হয়ে লিখিত, মৌখিক ও ফিল্ড টেস্ট- এ অংশগ্রহণ করুন।পরীক্ষায় পাস করলে অনলাইনে ফি পরিশোধ ।
ও BRTA সাইটে লগইন করে যাবতীয় তথ্য ও সংযুক্তি সাবমিট করতে হবে। প্রিন্টিং কার্যক্রম সম্পাদন শেষে আপনার প্রদত্ত ঠিকানায় ডাকযোগে Driving License পাবেন। বিস্তারিত প্রক্রিয়াটি নিয়েই আজকের আলোচনা।
লার্নার বা শিক্ষানবিশ ড্রাইভিং লাইসেন্সের খরচক্যাটাগরি
ড্রাইভিং লাইসেন্স পাওয়ার শর্তাবলী
- ড্রাইভিং লাইসেন্স পাওয়ার জন্য আবেদনকারীকে কিছু শর্তাবলী পূরণ করতে হয়। এগুলো হলো:আবেদনকারী ন্যূনতম শিক্ষাগত যোগ্যতা অষ্টম শ্রেণী পাস হতে হবে;
- লার্নার বা শিক্ষানবিশ লাইসেন্স থাকতে হবে;
- মানসিক ও শারীরিকভাবে সুস্থতা;
- পেশাদার লাইসেন্সের জন্য নূন্যতম বয়স ২১ বছর এবং অপেশাদারের জন্য নূন্যতম বয়স ১৮ বছর হতে হবে।
ড্রাইভিং লাইসেন্স করতে কত টাকা লাগে
ড্রাইভিং লাইসেন্সের জন্য আবেদন করতে অনলাইনে ফি জমা দিতে হয়। লাইসেন্সের ধরণ বা ক্যাটাগরির উপর ভিত্তি করে ফি’র পরিমাণ ভিন্ন হয়। নিচে বিভিন্ন ধরনের লাইসেন্সের খরচ দেওয়া হলো:লার্নার বা শিক্ষানবিশ ড্রাইভিং লাইসেন্সের খরচক্যাটাগরি
- ১-এক ধরনের যানবাহন চালানোর জন্য প্রযোজ্য লাইসেন্স এর ক্ষেত্রে -৩৪৫ টাকা;
- ক্যাটাগরি ২-গাড়ি এবং মোটরসাইকেল উভয়ের লাইসেন্স এর ক্ষেত্রে – ৫১৮ টাকা।
- অপেশাদার লাইসেন্স -১৬৭৯ টাকা ৫ বছরের নবায়ন ফি সহ;
- পেশাদার লাইসেন্স -২৫৪২ টাকা ১০ বছরের নবায়ন ফি সহ।
- বারো কর্ম দিবসের মধ্যে লাইসেন্সটি পেতে হলে -২৫০০ টাকা।
- পাঁচ কর্ম দিবসের মধ্যে লাইসেন্সটি পেতে হলে -৩৫০০ টাকা।
পেশাদার ড্রাইভিং লাইসেন্স নবায়ন
পেশাদার ড্রাইভিং লাইসেন্সাধারীদের ক্ষেত্রে পুনরায় একটি ব্যবহারিক প্রশিক্ষণ পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে হবে। সেখানে উত্তীর্ণ হলে নির্ধারিত ফি (মেয়াদোত্তীর্ণের ১৫ দিনের মধ্যে হলে ২,৪৮৭/- টাকা ও মেয়াদোত্তীর্ণের ১৫ দিন পরে প্রতি বছর ৫১৮/- টাকা জরিমানাসহ ) জমা দিয়ে প্রয়োজনীয় কাগজপত্রসহ বিআরটিএর নির্দিষ্ট সার্কেল অফিসে আবেদন করতে হবে।গ্রাহকের বায়োমেট্রিক্স (ডিজিটাল ছবি, ডিজিটাল স্বাক্ষর ও আঙ্গুলের ছাপ) গ্রহণের জন্য গ্রাহককে নির্দিষ্ট সার্কেল অফিসে উপস্থিত হতে হয়। স্মার্ট কার্ড wপ্রন্টিং-এর সমস্ত প্রক্রিয়া সম্পন্ন হলে গ্রাহককে এসএমএস এর মাধ্যমে জানিয়ে দেয়া হয়।
আশা করছি ড্রাইভিং লাইসেন্স করার নিয়ম ২০২৪ ধারনা পেয়েছেন এই আর্টিকেলটিতে, এই আর্টিকেলটি পুরোটা পড়ে যদি আপনাদের সামান্যতম উপকারে আসে তাহলে আপনাদের পরিচিতি মানুষদের সাথে শেয়ার করতে পারেন। আর এ ধরনের বা বিভিন্ন রকমের আর্টিকেল পড়তে আমাদের সাইডে ভিজিট করে দেখুন ধন্যবাদ।
অপেশাদার ড্রাইভিং লাইসেন্স নবায়ন
- গ্রাহককে প্রথমে নির্ধারিত ফি (মেয়াদোত্তীর্ণের ১৫ দিনের মধ্যে হলে ৪,২১২/- টাকা ও মেয়াদোত্তীর্ণের ১৫ দিন পরে প্রতি বছর ৫১৮/- টাকা জরিমানাসহ) জমা দিয়ে প্রয়োজনীয় কাগজপত্রসহ বিআরটিএর নির্দিষ্ট সার্কেল অফিসে আবেদন করতে হবে।
- আবেদনপত্র ও সংযুক্ত কাগজপত্র সঠিক পাওয়া গেলে একইদিনে গ্রাহকের বায়োমেট্রিক্স (ডিজিটাল ছবি, ডিজিটাল স্বাক্ষর ও আঙ্গুলের ছাপ) গ্রহণ করা হয়। স্মার্ট কার্ড প্রন্টিং সম্পন্ন হলে গ্রাহককে এসএমএস এর মাধ্যমে জানিয়ে দেয়া হয়।
- ন্যাশনাল আইডি কার্ডের সত্যায়িত ফটোকপি;
- সদ্য তোলা ২ কপি পাসপোর্ট সাইজ ছবি;
- রেজিষ্টার্ড ডাক্তার কর্তৃক মেডিকেল সার্টিফিকেট (পেশাদার ড্রাইভিং লাইসেন্স এর ক্ষেত্রে প্রযোজ্য);
- নির্ধারিত ফি জমাদানের রশিদ ও বিআরটিএ কপি।
- এ সকল ডকুমেন্টস থাকলে উপরোক্ত নিয়মে ড্রাইভিং লাইসেন্স নবায়ন করতে পারবেন।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url