যেসব কারনে বিবাহ বিচ্ছেদ বা সংসারে অশান্তি হতে দেখা যায়
প্রিয় পাঠক বাড়ির মহিলারা কয়েকটি বিষয়ে অবশ্যই খেয়াল রাখবেন, তাদের কিছু কাজ করতে নিষেধ করা হয়েছে। প্রাচীনকাল থেকেই মহিলারা সংসারের হাল ধরেন। সেইজন্যই গরুঢ় পুরাণে সংসারের সুখ ও স্বাচ্ছন্দ রক্ষা করার জন্য মহিলাদের কিছু কিছু কাজ না করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। যদি এই পরামর্শ না মানা যায় তাহলেই সুখী সাজানো সংসার ধ্বংস হয়ে যেতে পারে।
ভূমিকা
যখন কোনও বিবাহিত মহিলা নিজের বাড়ি ছেড়ে অন্যের বাড়িতে গিয়ে দীর্ঘদিন থাকে সেক্ষেত্রে সম্পর্কে অবনতি ঘটতে পারে। মহিলা নিজের বাড়ি ছেড়ে অন্যের বাড়িতে যখনই পড়ে থাকবেন তখনই তাঁর সংসারে দেখা দেবে নানা অশান্তি ও গোলমাল যেসব কারনে বিবাহ বিচ্ছেদ বা সংসারে অশান্তি হতে দেখা যায় নিচে আলোচনা করা হয়েছে।
যেসব কারনে বিবাহ বিচ্ছেদ বা সংসারে অশান্তি হতে দেখা যায়
- বিয়ের আগে উচ্চবিলাসিতা বা আকাশ কুসুম স্বপ্ন দেখা। যখন বাস্তবের সাথে মিল খুজে পাওয়া যায় না তখনই সংসারে বেশি অশান্তি হতে দেখা যায়। বাস্তবকে মেনে নেওয়ার কোন যোগ্যতা তাদের থাকে না।
- পরিবার থেকে যখন মা বাবা তাদের সঠিক শিক্ষা দিতে ব্যর্থ থাকে। যেমন আচার ব্যবহার, ভদ্রতা, শালিনতা। যা একজন মেয়ের সব থেকে বড় সম্পদ।
- বিয়ের আগে একাধিক সম্পর্কে লিপ্ত থাকা বা দিন রাত ফোনে কথা বলা। অনেক মেয়েদের নতুন নতুন ছেলেদের সাথে মেশার প্রবনতা থাকে, তাই সংসার জীবনে একজন মাত্র ছেলেকে তার ভালো লাগে না, পূর্বের অভ্যাস ধরে রাখতে কোন না কোন ভাবে আবারও একই কাজে লিপ্ত হচ্ছেন যা সংসারের জন্য ক্ষতিকর। এক কথায় বলবো চরিত্রহীন।
- অসৎ সঙ্গে লিপ্ত থাকা। যার জন্য শুধুমাত্র পিতা মাতাই দায়ী। সন্তান কাদের সাথে মিশছে , কোথায় যাচ্ছে, সব কিছু বাঙালী কালচারের সাথে যাচ্ছে কিনা সেসব দিক অবশ্যই মা বাবাকে খেয়াল রাখতে হবে।
- অরিতিক্ত লোভ সংসার পতনের জন্য গুরুত্বপূর্ন ভুমিকা পালন করে। অনেকের চাহিদার কোন শেষ নেই। অন্যদিকে তার স্বামীর দেওয়ার ক্ষমতা আছে কিনা সেদিকে খেয়াল থাকে না। একজন পুরুষের সব থেকে কষ্টের দিক হলো প্রিয় মানুষটিকে কোন কিছু না দিতে পারা। অনেক সময় অসৎ কাজে লিপ্ত হয়ে অনেক কাজ করে থাকেন স্ত্রীকে খুশি করার জন্য। এতে সাময়ীক সুখ আসলেও স্বামী সব সময় স্ত্রীর উপর খারাপ ধারনা বা ভয় নিয়ে থাকেন। যা সংসার ভঙ্গনের জন্য যথেষ্ঠ কারন। এই ক্ষেত্রে বলবো আপনি বিবেকহীন নারী।মেয়েদের অতিরিক্ত জেদ, যা বলি তাই করি। এই ক্ষেত্রে বলবো, জেদ নামক শব্দটা মেয়েদের জন্য নয় এটা শুধুমাত্র পুরুষের জন্য। সুতরাং জেদ করবেন তো সব হারাবেন।
- সন্দেহ প্রবন মন মানুষিকতা। অনেকে মনে করেন, যাকে খুব বেশি ভালোবাসে তাকে নাকি সন্দেহ করে। আমি বলবো তার উল্টটা, যাকে বিশ্বাস করা যায় না তাকেই বেশি সন্দেহ করে। স্বামীকে একবার মন দিয়ে বিশ্বাস করেই দেখুন, আমার বিশ্বাস সে আপনাকে ঠকাবে না। প্রতিটা স্বামীই চায় তার স্ত্রী তাকে ভালোবাসবে , বিশ্বাস করবে। যখন কোন স্বামী বুঝতে পারবে তার স্ত্রী তাকে মন থেকে বিশ্বাস করে , ভালোবাসে তখন স্বামী কোন খারাপ কাজ করার আগের অবশ্যই তার বিবেক তাকে বাধা দেবে।
প্রত্যেক কথা বাড়িতে জানানো
আসলে বিয়ের পর শ্বশুরবাড়িও নিজের বাড়ির মতোই হয়। সেই বাড়ির নানা কথা বাড়িতে গিয়ে বলা উচিত নয়। মায়ের সঙ্গে নানা অভিজ্ঞতা শেয়ারের ইচ্ছে সব মেয়েরই থাকে। কিন্তু এই কাজ থেকে যতটা সম্ভব বিরত থাকা উচিত। কারণ, এই বিষয়টি শাশুড়ির সঙ্গে আপনার সম্পর্কে প্রভাব ফেলতে পারে। আপনার স্বামীরও বিষয়টি না পছন্দ হতে পারে।
তাই আপনার বাড়িতে কতটা কথা জানাবেন, কতটা কথা জানাবেন না, তার একটা সীমারেখা টানা উচিত। তবে শ্বশুরবাড়িতে মানসিক বা শারীরিকভাবে অত্যাচারিত হলে অবশ্যই বাড়িতে সেই কথা জানান।
পুরনো লাইফস্টাইল মেনে চলা
আপনি যদি ওয়ার্কিং হন, তবে আপনার জীবনে সেরকম কোনও পরিবর্তন না হওয়াই স্বাভাবিক। তবে এখন আপনি বিবাহিত, তাই নতুন পরিবার ও সম্পর্কেরে প্রতি আপনারও কিছু দায়বদ্ধতা অবশ্য়ই আছে। তাই পুরনো জীবনযাপনে সামান্য় হলেও আপনাকে পরিবর্তন আনতেই হবে। আপনি যদি প্রতিদিন সন্ধ্যায় অফিসের পরে বন্ধুদের সঙ্গে ঘুরতে যেতেন ।
তবে বিয়ের পরেও তা সবসময় করবেন না।কোনওদিন বন্ধুদের সঙ্গে সময় কাটাতে পারেন। তবে বাড়ি ফিরে পরিবারের সঙ্গেও সময় কাটানোর চেষ্টা করুন। না হলে তা আপনার স্বামী এবং শাশুড়ির সঙ্গে সম্পর্কের উপরেও প্রভাব ফেলতে পারে। আপনাকে এবং আপনার সঙ্গীকে একে অপরের সঙ্গে এমনভাবে মানিয়ে নিতে হবে যাতে কোনও সমস্য়ার মুখোমুখি না হতে হয়।
সম্পর্ক সুখের হয় এই পাঁচ গুণে,
কমিউনিকেশন
- সম্পর্কে লুকোচুরি ভালো জিনিস নয়। মনের ভিতর যা কিছু চলছে, আপনার আশেপাশে যা কিছু ঘটছে সেই সম্পর্কে একে-অপরের সঙ্গে কথা বলুন। দু’জনের মধ্যে কোনও সমস্যা তৈরি হলে সে নিয়েও আলোচনা করুন। সম্পর্ককে মজবুত করে তোলে কমিউনিকেশন।
একসঙ্গে সময় কাটানো
- ব্যস্ত জীবনের মাঝে সঙ্গীকে আলাদা করে সময় দেওয়া হয় না। কিন্তু সম্পর্ককে ভালো রাখতে হলে কোয়ালিটি টাইম কাটানো জরুরি। একসঙ্গে ডিনার করা, উইকএন্ডে একসঙ্গে বাড়ির কাজ করা, শপিং বা সিনেমা দেখতে যাওয়ার মধ্যে দিয়ে একসঙ্গে সময় কাটাতে পারেন।
সম্পর্কে স্পেস দিন
- একসঙ্গে আছেন বলে যে সঙ্গীর সব বিষয়ে নাক গলাতেই হবে, এই ধারণা মাথা থেকে বের করুন। সম্পর্কেও স্পেস দরকার হয়। সঙ্গীকে সময় দেওয়ার পাশাপাশি তাকে স্পেস দিন। তাকে নিজের মতো সময় কাটাতে দিন। নিজেও নিজের সঙ্গে কিছুটা সময় কাটান।
ফিজ়িক্যাল ও ইমোশনাল ইন্টিমেসি
- মানসিক ও শারীরিক ইন্টিমেসি থাকা ভীষণ জরুরি। এতে সম্পর্কে বন্ডিং তৈরি হয়। পাশাপাশি মানসিক চাপ কমানো যায়। একে অন্যের প্রতি আকাঙ্ক্ষা তৈরি হয়, চাওয়া-পাওয়া তৈরি হয়। সম্পর্ককে মজবুত করার জন্য এগুলো জরুরি।
সম্মান দিন
- ঝগড়া হতেই পারে। কোনও বিষয় নিয়ে মতভেদ থাকতে পারে। কিন্তু একে অন্যকে সম্মান দেওয়া ভীষণ জরুরি। ভুল করলে ক্ষমা চেয়ে নিন। আবার সে ভুল করলে ক্ষমা করে দিন। এতে সম্পর্কে জটিলতা তৈরি হবে না।
উপসংহার
আশা করছি যেসব কারনে বিবাহ বিচ্ছেদ বা সংসারে অশান্তি হতে দেখা যায় ধারনা পেয়েছেন এই আর্টিকেলটিতে, এই আর্টিকেলটি পুরোটা পড়ে যদি আপনাদের সামান্যতম উপকারে আসে তাহলে আপনাদের পরিচিতি মানুষদের সাথে শেয়ার করতে পারেন। আর এ ধরনের বা বিভিন্ন রকমের আর্টিকেল পড়তে আমাদের সাইডে ভিজিট করে দেখুন ধন্যবাদ।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url