গ্রাফিক্স ডিজাইন কি-গ্রাফিক্স ডিজাইন কিভাবে শিখব

প্রিয় পাঠক গ্রাফিক্স ডিজাইন হলো একটি ভিজ্যুয়াল যোগাযোগের প্রক্রিয়া, যেখানে রং, ফন্ট, ছবি, আকৃতি, এবং বিভিন্ন গ্রাফিক উপাদান একত্রিত করে একটি নির্দিষ্ট বার্তা বা ধারণা প্রকাশ করা হয়। গ্রাফিক্স ডিজাইন প্রায় সব ক্ষেত্রেই প্রয়োজন হয়, যেমন বিজ্ঞাপন, ব্র্যান্ডিং, ওয়েবসাইট, মোবাইল অ্যাপ, প্যাকেজিং, এবং প্রিন্ট মিডিয়া।
গ্রাফিক্স ডিজাইন কি-গ্রাফিক্স ডিজাইন কিভাবে শিখব

ভূমিকা

এই ডিজিটাল যুগে, প্রযুক্তির দ্রুত উন্নতির সাথে গ্রাফিক্স ডিজাইনও নতুন নতুন উচ্চতায় পৌঁছে গেছে। ডিজাইনাররা তাদের সৃজনশীলতাকে উন্নত করতে এবং নতুন ধারণা উদ্ভাবনে অনেক ধরনের ডিজাইন সফটওয়্যার এবং টুল ব্যবহার করছেন। এই ব্লগ পোস্টে আমি গ্রাফিক্স ডিজাইন কি? গ্রাফিক্স ডিজাইন এর কাজ গুলো কি কি এ বিষয়ে নিচে আলোচনা করা হয়েছে।

গ্রাফিক্স ডিজাইন কি? 

Graphics Design হচ্ছে কম্পিউটার সফটওয়্যার ব্যবহারের মাধ্যমে কোনো মেসেজ, তথ্য অথবা কল্পনাকে দৃশ্যমান ধারণায় রূপান্তরের জন্য চিত্র দ্বারা নকশা তৈরি করার প্রক্রিয়া। এই প্রক্রিয়াতে বর্তমানে কম্পিউটার সফটওয়্যার এর সাহায্যে রং, আকৃতি, এবং বিভিন্ন ছবি ব্যবহার করে ভিজুয়াল কনটেন্ট তৈরি করা হয়।

এই ধরনের কনটেন্ট অডিয়েন্সকে অনেক অনুপ্রাণিত করেন এবং যেকোনোো প্রতিষ্ঠান বা ব্যবসার সাফল্যের জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।গ্রাফিক্স ডিজাইন এর সাহায্যে সৃজনশীলতাকে অনেক ভালোভাবে ফুটিয়ে তোলা যায়। রাস্তার বিলবোর্ড থেকে শুরু করে দেয়ালের পোস্টার, সব জায়গাতেই গ্রাফিক্স ডিজাইন এর ছোঁয়া রয়েছে।

বর্তমান বিশ্বে ডিজিটাল কনটেন্ট সব থেকে বেশি জনপ্রিয়তা পাচ্ছে। সোশ্যাল মিডিয়া থেকে শুরু করে ওয়েবসাইটের কাজে জন্য Graphics Design এর চাহিদা দিন দিন বেড়েই চলেছে। এই ইন্ডাস্ট্রিতে প্রতিযোগিতা তুলনামূলক কম। আর তাই আপনি আপনার সৃজনশীলতা কে ভালোভাবে ফুটিয়ে তুলতে পারলে এই পেশায় অনেক উন্নতি করতে পারবেন।

গ্রাফিক্স ডিজাইন কত প্রকার

ডিজাইনের ধরন এবং ব্যক্তিগত ও বাণিজ্যিক ব্যবহারের উপর ভিত্তি করে গ্রাফিক্স ডিজাইনকে নিম্নের কয়েকটি ভাগে ভাগ করা যায়।
  1. লোগো ডিজাইন
  2. প্রোডাক্ট ডিজাইন
  3. ব্র্যান্ডিং ডিজাইন
  4. ওয়েব ডিজাইন
  5. প্রিন্ট ডিজাইন
  6. কার্টুন ডিজাইন
  7. মোবাইল অ্যাপ্লিকেশন ডিজাইন
  8. UI/UX ডিজাইন
  9. পাবলিকেশন ডিজাইন
লোগো ডিজাইন 
  • লোগো ডিজাইন হচ্ছে গ্রাফিক্সের সাহায্যে কোনো প্রতীক তৈরি করার প্রক্রিয়া। গ্রাফিক্স ডিজাইনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কাজগুলোর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে লোগো ডিজাইন। সাধারণত লোগো কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের জন্য করা হয়। এটি কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের পরিচয় বহন করে। লোগো কোনো একটি প্রতিষ্ঠানকে অনেক আকর্ষণীয় করে তোলে এবং মানুষের কাছে ঐ প্রতিষ্ঠানের গ্রহণযোগ্যতা বৃদ্ধি করে।
প্রোডাক্ট ডিজাইন 
  • প্রোডাক্ট ডিজাইন হচ্ছে এমন একটি প্রক্রিয়া যার সাহায্যে ইউজারের চাহিদা অনুযায়ী ব্যবসার সাথে মিল রেখে প্রোডাক্ট তৈরি করা। এই সেক্টরটি গ্রাফিক্স ডিজাইনের সবচেয়ে বড় মার্কেটপ্লেসের মধ্যে অন্যতম। কোনো প্রোডাক্টকে কাস্টমার এর কাছে আকর্ষণীয় করে তুলতে প্রোডাক্ট ডিজাইনের কোনো বিকল্প নেই।
ব্র্যান্ডিং ডিজাইন 
  • ব্র্যান্ডিং বলতে বুঝায় কোনো কিছুর নির্দিষ্ট একটি পরিচয়। “কমডিটি উইথ আইডেন্টিটি” কে সহজ ভাষায় ব্র্যান্ডিং বলা হয়। অর্থাৎ কাস্টমার বা বা ক্রেতার কাছে পণ্য বা সেবার পরিচিতিই হলো ব্র্যান্ডিং। কোনো পণ্য কাস্টমারের কাছে পরিচিত করে তোলার উপায় হচ্ছে ব্র্যান্ডিং ডিজাইন।
ওয়েব ডিজাইন 
  • গ্রাফিক্সের সাহায্যে একটি ওয়েবসাইটকে সুন্দরভাবে সাজিয়ে তোলার কাজটিই হচ্ছে ওয়েব ডিজাইন। বর্তমানে প্রতিটি ক্ষেত্রেই আমাদের ওয়েবসাইট প্রয়োজন। আর একটি ওয়েবসাইটকে আকর্ষণীয়ভাবে মানুষের সামনে তুলে ধরতে ওয়েব ডিজাইনের কোনোো বিকল্প নেই।
প্রিন্ট ডিজাইন
  • বর্তমান সময়ে Graphics Design এর অন্যতম চাহিদা সম্পন্ন সেক্টর হচ্ছে প্রিন্ট ডিজাইন। লিফলেট, ক্যালেন্ডার, ভিজিটিং কার্ড এবং নিত্য প্রয়োজনীয় ব্যবহৃত প্রত্যেকটি পণ্যে হয় এখন প্রিন্ট ডিজাইন ব্যবহৃত হয়।
কার্টুন ডিজাইন 
  • কার্টুন ডিজাইন হচ্ছে স্কেচ থেকে এনিমেশন তৈরি করার প্রক্রিয়া। এই প্রক্রিয়ার কোনো স্কেচ বা স্থির চিত্রকে চলমান চিত্রে রুপান্তর করা হয়। বর্তমানে বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এবং ইউটিউবে কার্টুন ডিজাইন করে বানানো ভিডিও খুবই জনপ্রিয়।
মোবাইল অ্যাপ্লিকেশন ডিজাইন 
  • স্মার্টফোনে ব্যবহৃত বিভিন্ন অ্যাপ্লিকেশন বা সফটওয়্যার ডিজাইন করার প্রক্রিয়াকে বলা হয় মোবাইল অ্যাপ্লিকেশন ডিজাইন। মোবাইল ফোনের অ্যাপ্লিকেশন এবং সেটিংস থেকে শুরু করে বিভিন্ন অপশন এবং লেআউট সবকিছুই করা হয় মোবাইল অ্যাপ্লিকেশন ডিজাইন এর মাধ্যমে।
পাবলিকেশন ডিজাইন 
  • পাবলিকেশন ডিজাইন হচ্ছে বই, খাতা, ম্যাগাজিন ইত্যাদি ডিজাইন করা। বর্তমানে ই-বুক এর লেআউটসহ সকল প্রকার ডিজাইন হয় Graphics Design এর সাহায্যে।
ইউআই / ইউএক্স ডিজাইন 
  • বর্তমানে গ্রাফিক্স ডিজাইনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ মার্কেটটিই হচ্ছে ইউআই / ইউএক্স ডিজাইন (UI/UX Design)। UI এর মানে হলো ইউজার ইন্টারফেস। সহজ ভাষায় বললে, কোনো ওয়েবসাইট বা অ্যাপ্লিকেশনের ক্ষেত্রে একজন ইউজার যে ইন্টারফেসটি ব্যবহার করে তাই হচ্ছে UI ডিজাইন। এমনকি আপনি এখন যে ব্লগ পোস্টটি পড়ছেন সেটির ইন্টারফেসও UI/UX এর মাধ্যমে তৈরি।

Graphics Design কাদের জন্য?

প্রতিটা মানুষের ভিতরেই আলাদা আলাদা প্রতিভা রয়েছে। কেউ ভালো লিখা লিখি করতে পারে, কেউ ভালো খেলতে পারে, আবার কেউ আছে ভালো ডিজাইন করতে পারে। একেকজনের একে একে জিনিসের প্রতি আগ্রহ বেশি থাকে। আপনি যদি গ্রাফিক্স ডিজাইনার হতে চান তাহলে আপনাকে অবশ্যই আঁকা-ঝুকির প্রতি অনেক বেশি আগ্রহ থাকতে হবে।

বর্তমান বিশ্বে গ্রাফিক্স ডিজাইনের চাহিদা আকাশচুম্বি। বই খাতা থেকে শুরু করে পানির বোতল ডিজাইন করার ক্ষেত্রেও Graphics Design ব্যবহৃত হচ্ছে। গ্রাফিক্স ডিজাইনের উপরে দক্ষতা অর্জন করতে পারলে খুব ভালো মানের একটি ক্যারিয়ার গড়তে পারবেন। কিন্তু প্রশ্ন হল শুধুমাত্র আকা-আকির প্রতিভা থাকলেই কি গ্রাফিক্স ডিজাইনার হওয়া সম্ভব?

উত্তর হলো না। আঁকা-আকির প্রতিভার পাশাপাশি যথেষ্ট সৃজনশীলতাও থাকতে হবে গ্রাফিক্স ডিজাইনে ভালো করার জন্য। সময়ের সাথে সাথে যদি নিজের প্রতি ঘাটে আপডেট করতে না পারেন তাহলে গ্রাফিক্স ডিজাইনে বেশিদূর আগাতে পারবেন না। ডিজাইন হলো এক ধরনের ভাষা। ডিজাইনের মাধ্যমে কোনো উদ্দেশ্যকে এমন ভাবে ফুটিয়ে তুলতে হবে যেন ইউজারের ।

বুঝতে কোনো প্রকার সমস্যা না। আর আপনি যদি মনে করেন, আপনার এই রকম সৃজনশীলতা রয়েছে তাহলেই কেবল গ্রাফিক্স ডিজাইনকে ক্যারিয়ার হিসেবে বেছে নিতে পারেন।

গ্রাফিক্স ডিজাইন শিখতে কত দিন লাগে?

এটা খুবই কমন একটা প্রশ্ন যে Graphic Design শিখতে কতদিন লাগে? যারা এই সেক্টরে একেবারে নতুন তাদের সবার মনে একবার হলেও এই প্রশ্নটি জাগে।আসলে গ্রাফিক্স ডিজাইন শিখতে কতদিন সময় লাগবে তার সঠিকভাবে বলা সম্ভব নয় কারণ কোনো কাজ আমার শিখতে যে সময় লাগবে আপনি হয়তো তার থেকে কোনো সময়ে শিখে ফেলতে পারবেন।

এই বিষয়টা সম্পূর্ণই নির্ভর করে আপনি কতটা গুরুত্বের সাথে অনুশীলন করবেন এবং আপনার ধারণক্ষমতার উপর।সঠিকভাবে বলতে না পারলেও Graphics Design শিখতে কত সময় লাগবে তার একটা আনুমানিক সময় বের করা সম্ভব। যেমন কোনো প্রতিষ্ঠানে গ্রাফিক্স ডিজাইন শিখতে হলে কমপক্ষে চার বছর মেয়াদী কোর্স করতে হবে। 

এখানে আপনি হাতে কলমে Graphic Design এর সবকিছু শিখতে পারবেন।অন্যদিকে আপনি যদি নিজে Graphics Design শিখতে চান তাহলে তা সম্পূর্ণ নির্ভর করবে আপনার ইচ্ছে শক্তি এবং আপনি কতটা অনুশীলন করছেন তার উপরে। আপনি যদি মনোযোগ সহকারে কঠোর পরিশ্রম করে শিখার চেষ্টা করেন তাহলে দুই বছরের মধ্যেও ডিজাইন এক্সপার্ট হওয়া সম্ভব।

কেন শিখবেন গ্রাফিক্স ডিজাইন?

ভিজুয়াল কনটেন্টের চাহিদা বৃদ্ধি পাওয়ার সাথে সাথে বর্তমানে গ্রাফিক্স ডিজাইনের চাহিদাও অনেক বৃদ্ধি পাচ্ছে। তাই আপনি গ্রাফিক্স ডিজাইনে দক্ষতা অর্জন করে অধিক আয় নিশ্চিত করতে পারবেন। বিশ্বে অনেক কোম্পানিই আছে যারা লক্ষ লক্ষ টাকা খরচ করে শুধুমাত্র লোগো ডিজাইন এর কাজেই।
আপনি ভালভাবে Graphic Design শিখতে পারলে ।

বিভিন্ন সেক্টরের কাজ করতে পারবেন। বর্তমানে ই-কমার্স কোম্পানিগুলো তাদের প্রোডাক্টগুলো কাস্টমারের কাছে আকর্ষণীয় ভাবে ফুটিয়ে তোলার জন্য গ্রাফিক্স ডিজাইনার নিয়োগ দিয়ে থাকে। এমনকি আপনি চাইলে গ্রাফিক্স ডিজাইনার হিসেবে দেশি বিভিন্ন কোম্পানিতে কাজ করতে পারবেন।
একটা সময় এমন আসবে যখন ডিজিটাল মার্কেটিং এর আরো।

অনেক নতুন নতুন মেথড বের হবে। আর ওই মেথড গুলো সম্পূর্ণ Graphics Design নির্ভরশীল হবে। এই সেক্টরে এক্সপার্ট হতে পারলে আপনি চাইলে ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেস এর মাধ্যমেও লাখ লাখ টাকা ইনকাম করতে পারবেন। তাই যারা Graphics Design নিয়ে ক্যারিয়ার দাঁড়ানোর কথা ভাবছেন, তাদের জন্য আমি বলব, নিঃসন্দেহে এটি সুদূরপ্রসারী একটি সিদ্ধান্ত।

গ্রাফিক্স ডিজাইন কিভাবে শিখব?

যারা গ্রাফিক্স ডিজাইনার হিসেবে নিজের ক্যারিয়ার শুরু করতে চায় তাদের প্রত্যেকের মনেই এই প্রশ্নটি আসে। Graphic Design শেখার অনেকগুলো উপায় রয়েছে। প্রধানত গ্রাফিক্স ডিজাইন শেখার দুইটি উপায়ে রয়েছে।বিনামূল্যে/ নিজের প্রচেষ্টায়
  • বিনামূল্যে/ নিজের প্রচেষ্টায়
  1. ইউটিউব এ Graphics Design সম্পর্কিত অনেক ভিডিও হয়েছে। এই ভিডিওগুলো দেখার মাধ্যমে এবং অনুশীলন করার মাধ্যমে আপনি চাইলে বিনামূল্যে গ্রাফিক্স ডিজাইন কোর্স করেও এক্সপার্ট হতে পারবেন। এছাড়াও Google থেকে বিভিন্ন রিসোর্স সংগ্রহ করে সেগুলো পড়তে পারেন এবং অনুশীলনের মাধ্যমে গ্রাফিক্স ডিজাইনে দক্ষতা অর্জন করতে পারেন। কিন্তু বিনামূল্যে Graphics Design শিখার ক্ষেত্রে আপনাকে অনেক রিসার্চ করতে হবে।
পেইড কোর্স করার মাধ্যমে
  • বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান রয়েছে যারা অনলাইনে এবং অফলাইনে গ্রাফিক্স ডিজাইনের উপর কোর্স করিয়ে থাকে। এছাড়া অনেক ওয়েবসাইট রয়েছে যারা Graphic Design এর উপর কোর্স বিক্রি করে। তার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে, Udemy, Skillshare, ও Coursera। আপনি এদের কোর্সে এনরোল করার মাধ্যমে Graphics Design শিখতে পারেন। পেইড কোর্স করার সুবিধা হল, আপনি ক্লায়েন্টের কাজ করার সময় কোনো সমস্যায় পড়লে অভিজ্ঞদের কাছ থেকে লাইভ সাপোর্ট পাবেন।

ডিজাইন শিখতে কি কি সফটওয়্যার দরকার পড়ে?

Graphics Design শিখার জন্য অনেকগুলো সফটওয়্যার রয়েছে তবে সুপরিচিত একটা সফটওয়্যার হল Adobe Photoshop এডোব ফটোশপ। Graphic Design নিয়ে যারাই কাজ শুরু করেন তারা প্রথমে এই সফটওয়্যারটি দিয়েই কাজ করেন। কিন্তু ফটোশপ এর সাহায্যে গ্রাফিক্সের সম্পূর্ণ কাজ করা সম্ভব নয়। এর কারণ হলো ফটোশপ একটি পিক্সেল বেইজড সফটওয়্যার যার মূল কাজ হল ফটো এডিটিং।

গ্রাফিক্স ডিজাইনের জন্য সবচেয়ে ভালো এবং জনপ্রিয় Graphic Design সফটওয়্যার হল Adobe Illustrator. এছাড়াও গ্রাফিক্স ডিজাইনের জন্য বেশ কিছু সফটওয়্যার রয়েছে যেগুলো আপনার ডিজাইনের স্কিলকে আরো অনেকগুণ বাড়িয়ে দিবে। যেমনঃXara Designer Pro X
  1. CorelDRAW Graphics Suite 2019
  2. GIMP
  3. Gravit Designer
  4. Visme
  5. Vectr
  6. Colorcinch
  7. Inkscape
  8. Design Wizard
উপরের সফটওয়্যার গুলো এক একটা এক এক ধরনের গ্রাফিক্সের কাজে ব্যবহৃত হয়। দক্ষ গ্রাফিক্স ডিজাইনার হতে হলে সবগুলো সফটওয়্যার সম্পর্কেই মোটামুটি ধারণা রাখতে হবে যেন প্রয়োজন অনুসারে সেগুলো ব্যবহার করতে পারেন।

ক্যারিয়ার হিসেবে গ্রাফিক্স ডিজাইন কেন এতো জনপ্রিয়?

একটি উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ কে না চায়! বিশ্বের সবচেয়ে ডিমান্ডেবল চাকরির মধ্যে Graphics Design একটি হওয়ায় এই সেক্টরে কর্মসংস্থান খুঁজে পাওয়া সহজ। এ ছাড়াও আরো অসংখ্য কারণ রয়েছে। সেগুলোর মধ্যে কয়েকটি কারণ হলোঃ

উচ্চতর চাহিদা
ডিজিটাল মার্কেটিং এর জনপ্রিয়তা যত বৃদ্ধি পাচ্ছে ভিজুয়াল কন্টেন্ট ক্রিয়েশন ততই গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠছে। আর ভিজুয়াল কন্টেন্ট যেহেতু গ্রাফিক্স ডিজাইনের কাজ তাই গ্রাফিক্স ডিজাইনের চাহিদা এখন তুঙ্গে। আবার এই সেক্টরে এখনো অনেক বেশি মানুষ যুক্ত হয়নি। তাই গ্রাফিক্স ডিজাইনার হিসেবে নিজেকে গড়ে তুলতে পারলে কর্মসংস্থান খুঁজে পেতে আপনাকে তুলনামূলক কম প্রতিযোগিতার সম্মুখীন হতে হবে।

বাড়িতে বসে কাজের সুযোগ
এই সেক্টরের কাজ করার সবচেয়ে বড় সুবিধা হচ্ছে আপনি চাইলে বাড়িতে বসেই কাজ করতে পারবেন। এছাড়াও আপনার পোর্টফোলিও ব্যবহার করে আপনি বিভিন্ন মার্কেটপ্লেসে কাজ করে অধিক ইনকামের ব্যবস্থা করতে পারবেন। শুধু তাই নয় বিদেশি বিভিন্ন কোম্পানিতেও গ্রাফিক্স ডিজাইনার হিসেবে রিমোটে কাজ করে সফল ক্যারিয়ার গড়তে পারবেন।

উচ্চশিক্ষার প্রয়োজন নাই
ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেসের মধ্যে একাউন্ট করে গ্রাফিক্স ডিজাইনের উপর সার্ভিস দেয়ার জন্য আপনাকে কোনো উচ্চতর ডিগ্রিধারী হওয়ার প্রয়োজন নেই। ছাত্র থেকে শুরু করে পরিবারের গৃহিণী সবাই সেখানে কাজ করতে পারবে। এক্ষেত্রে ক্লাইন্টরা আপনার দক্ষতাকেই সবচেয়ে বেশি প্রাধান্য দিবে।

অধিক আয়ের সুযোগ
আপনি যদি ফুলটাইম কোনো চাকরি করেন তাহলে এর পাশাপাশি ফ্রিল্যান্সিং এবং আউটসোর্সিং করেও অতিরিক্ত আয় করতে পারবেন। অনেক কোম্পানিই রয়েছে যারা রিমোটে Graphics Designer নিয়োগ দিয়ে থাকে। আপনি তাদের সাথে প্রজেক্ট বেসিসে কাজ করে অনেক টাকা উপার্জন করতে পারবেন।

একজন গ্রাফিক্স ডিজাইনারের আয় কেমন?

Graphics Design এর মাধ্যমে কত টাকা আয় করতে পারবেন তা অনেকটা নির্ভর করে আপনার উপর। আপনার দক্ষতা যত ভালো হবে, আপনি যত সৃজনশীল চিন্তা করতে পারবেন এবং সে অনুযায়ী ডিজাইন করতে পারবেন আপনি সেই অনুযায়ীই আয় করতে পারবেন।সামান্য লোগো ডিজাইন করেই 100$-200$ পর্যন্ত আয় করা যায়।

আর এই ডিজাইন যদি কোনো নামিদামি কোম্পানির জন্য করতে পারেন তাহলে তো কথাই নেই। লাখ টাকাও আয় করতে পারেন শুধুমাত্র লোগো ডিজাইন করার মাধ্যমেই। এছাড়াও UI/UX ডিজাইনাররা মাসে 200$-500$ ইনকাম করে থাকে শুধুমাত্র একটি ক্লায়েন্ট এর থেকেই।সব মিলিয়ে বলা যায় একজন Graphics Designer হিসেবে আপনি মাসে লক্ষ টাকা পর্যন্ত ইনকাম করতে পারবেন।

আর আপনি যদি একটু বেশি পরিশ্রম করতে পারেন তাহলে এর পরিমাণ আরও বৃদ্ধি করতে পারবেন।

গ্রাফিক্স ডিজাইনের ভবিষ্যৎ কি?

প্রায় সমস্ত কোম্পানির বর্তমানে Graphics Design প্রয়োজন এবং এর চাহিদা কি পরিমান তা আশা করি এতক্ষণে বোঝার বাকি নেই। এখন প্রশ্ন হল Graphics Design এর ভবিষ্যৎ কি?যেহেতু এখন ডিজিটাল প্রচারের পরিমাণ বেশি এবং এর মাত্রা দিন দিন বেড়েই চলেছে। তাই বলা যায় ভবিষ্যতেও গ্রাফিক্স ডিজাইনারের চাহিদা অনেক বৃদ্ধি পাবে।

কারণ ভবিষ্যতে সবকিছু আরও অনলাইন ভিত্তিক হয়ে যাবে। এখনই খাবারটাও মানুষ অনলাইনে অর্ডার করে খায়। তাহলে বুঝতেই পারছেন ভবিষ্যতে অনলাইন মিডিয়া ব্যবহার আরো কত বৃদ্ধি পাবে। আর অনলাইনে কাস্টমারকে আকৃষ্ট করার জন্য গ্রাফিক্স ডিজাইনের কোনো বিকল্প নেই। তাই আপনিও নিজের ভবিষ্যৎকে সুরক্ষিত করতে এখনই Graphics Design শিখে নিন।

উপসংহার

আশা করছি গ্রাফিক্স ডিজাইন কি-গ্রাফিক্স ডিজাইন কিভাবে শিখব ধারনা পেয়েছেন এই আর্টিকেলটিতে, এই আর্টিকেলটি পুরোটা পড়ে যদি আপনাদের সামান্যতম উপকারে আসে তাহলে আপনাদের পরিচিতি মানুষদের সাথে শেয়ার করতে পারেন। আর এ ধরনের বা বিভিন্ন রকমের আর্টিকেল পড়তে আমাদের সাইডে ভিজিট করে দেখুন ধন্যবাদ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url