মোটরসাইকেল ড্রাইভিং লাইসেন্স করার নিয়ম ২০২৪
প্রিয় পাঠক মোটরসাইকেল ড্রাইভিং লাইসেন্স আমাদের দেশে আমরা সবাই জানি তিন ধরনের লাইসেন্স পাওয়া যায়, একটি হচ্ছে লানা ড্রাইভিং লাইসেন্স এবং স্মার্ট কার্ড ড্রাইভিং লাইসেন্স এবং অন্যটি আন্তর্জাতিক ড্রাইভিং লাইসেন্স এগুলো সবগুলো পাওয়ার ক্ষেত্রে কিছু শর্ত নিয়ম মানতে হবে ড্রাইভিং লাইসেন্স থাকলে মোটরসাইকেল চালানোরএক ধরনের বৈধতা পাওয়া যায় লাইসেন্সের মাধ্যমে।
ভূমিকা
মোটরসাইকেল ড্রাইভিং লাইসেন্স মূলত আইনসম্মতভাবে মোটরসাইকেল চালানোর অনুমতি প্রদান করে। এটি চালকের নিরাপত্তা এবং অন্যান্য পথচারীদের সুরক্ষার জন্যও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ড্রাইভিং লাইসেন্স না থাকলে আপনি অবৈধভাবে মোটরসাইকেল চালাচ্ছেন বলে গণ্য হবে, যা আইনি ভাবে শাস্তিযোগ্যঅপরাধ মোটরসাইকেল ড্রাইভিং লাইসেন্স করার নিয়ম সকল তথ্য নিচে আলোচনা করা হয়েছে।
আরো পড়ুনঃ ড্রাইভিং লাইসেন্স করার নিয়ম ২০২৪
মোটরসাইকেল ড্রাইভিং লাইসেন্স করার নিয়ম
মোটরসাইকেল ড্রাইভিং লাইসেন্স করার নিয়ম, বাংলাদেশ সরকারি আইন অনুযায়ী ড্রাইভিং লাইসেন্স হল আপনার মোটরসাইকেল চালানোর একটি সম্মতিপত্র। রাস্তায় মোটরসাইকেল চালানোর জন্য যে সরকারি একটি লাইসেন্স দেয়া হয় সেই লাইসেন্সকে সাধারণত আমরা ড্রাইভিং লাইসেন্স বলে থাকি। মোটরসাইকেল ড্রাইভিং লাইসেন্স ছাড়া মোটরসাইকেল চালানো নিষেধ ।
সরকারি আইন অনুযায়ী যদি আপনার মোটরসাইকেল ড্রাইভিং লাইসেন্স না থাকে তাহলে আপনাকে মোটা অংকের জরিমানা করা হবে। মোটরসাইকেল লাইসেন্স করতে হলে আগে আপনাকে জানতে হবে মোটরসাইকেল লাইসেন্স করতে কোন কোন পদক্ষেপ নিতে হবে।
১,লার্নার ড্রাইভিং লাইসেন্স করা:
আপনার যদি বয়স, শিক্ষাগত যোগ্যতা, এবং প্রয়োজনীয় কাগজ পত্র সব ঠিক থাকে ঠাহলে আপনাকে ড্রাইভিং লাইসেন্স করার জন্য লার্নার বা শিক্ষানবিস লাইসেন্স এর জন্য আবেদন করতে হবে এই শিক্ষানবিস লাইসেন্স মূলত আপনি যখন ড্রাইভিং পশিক্ষণ করার সময় ব্যাবহার করতে পারবেন। এটি বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথরিটি (BRTA) এর ওয়েবসাইট (https://bsp.brta.gov.bd/) এ গিয়ে
অনলাইনে ফর্ম পূরণ এবং প্রয়োজনীয় কাগজ পত্র আপলোড করে আবেদন করতে পারবেন। আবেদন করার সময় লার্নার ড্রাইভিং লাইসেন্স ফি ৩৪৫ টাকা টাকা অনলাইন ব্যাঙ্কিং বা মোবাইল ব্যাঙ্কিং এর মাধ্যমে পরিশোধ করতে হবে। লার্নার ড্রাইভিং লাইসেন্স সাধারণত পেতে ২ থেক ৩ কার্য দিবস সময় লাগতে পারে এবং এটি ৬ মাসের জন্য ইস্যু করা হয়।
এই সময়ের মধ্যে আপনাকে পূর্ণ ড্রাইভিং লাইসেন্সের জন্য প্রস্তুতি নিতে হবে এবং ড্রাইভিং পরীক্ষা দিতে হবে। এই লাইসেন্স পাওয়ার পর আপনি প্রশিক্ষণ নিতে এবং মোটরসাইকেল বা গাড়ি চালানোর অনুশীলন করতে পারবেন, তবে একজন বৈধ ড্রাইভিং লাইসেন্সধারী ব্যক্তির তত্ত্বাবধানে চালাতে হবে।
২,প্রশিক্ষণ:
- লার্নার বা শিক্ষানবিস লাইসেন্স পাওয়ার পরে আপনি এটি ব্যাবহার করে প্রাকটিক্যাল পরীক্ষার প্রস্তুতি হিসেবে প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ গ্রহণ করতে পারেন অথবা নিজের মোটরসাইকেল থাকলে বাসায় নিজে নিজে প্রাকটিস করতে পারেন।
৩,পরীক্ষা:
- মোটরসাইকেল ড্রাইভিং লাইসেন্স পাওয়ার জন্য আপনাকে কিছু নির্দিষ্ট পরীক্ষা দিতে হয়। পরীক্ষার দিন আপনার নির্ধারিত দিনে BRTA অফিসে উপস্থিত থাকতে হবে এবং প্রয়োজনীয় কাগজপত্র, যেমন লার্নার লাইসেন্স, জাতীয় পরিচয়পত্র ইত্যাদি সাথে নিতে হবে। এই পরীক্ষাগুলো সফলভাবে উত্তীর্ণ হলে আপনি পূর্ণ ড্রাইভিং লাইসেন্স পেতে পারবেন।
ড্রাইভিং লাইসেন্স এর জন্য লিখিত, প্র্যাকটিক্যাল ড্রাইভিং পরীক্ষা, এবং মৌখিক পরীক্ষা দিতে হয়। লিখিত পরীক্ষায় সাধারণত মাল্টিপল চয়েস প্রশ্ন (MCQ) দিয়ে থাকে যেমন: ট্রাফিক নিয়ম, সড়ক চিহ্ন, ট্রাফিক সিগন্যাল এবং অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ ড্রাইভিং সম্পর্কিত প্রশ্ন। এবং মৌখিক পরীক্ষায় আপনাকে কিছু ট্রাফিক নিয়ম-কানুন ও ড্রাইভিং সংক্রান্ত মৌলিক জ্ঞান নিয়ে প্রশ্ন করা হবে।
আর প্র্যাকটিক্যাল ড্রাইভিং পরীক্ষায় আপনার মোটরসাইকেল চালানোর দক্ষতা পরীক্ষা করা হবে এবং সঠিকভাবে মোটরসাইকেল চালানো, ব্রেকিং, টার্নিং, সিগন্যাল ব্যবহার ইত্যাদি বিষয়ে আপনার দক্ষতা মূল্যায়ন করা হবে।আশা করি আজকের এই আর্টিকালের মাধ্যমে মোটরসাইকেল ড্রাইভিং লাইসেন্স করার নিয়ম জানতে পারবেন।
মোটরসাইকেল লাইসেন্স রেজিস্ট্রেশন ফি
মোটরসাইকেল এর লাইসেন্স করতে হলে আপনাকে কিছু স্টেপ ফলো করতে হবে। প্রথমত আপনাকে বিআরটি থেকে একটি লার্নার লাইসেন্স এর জন্য আবেদন করতে হবে। লার্নার হচ্ছে শিক্ষাকালীন একটি লাইসেন্স। মোটরসাইকেলের ড্রাইভিং লাইসেন্স প্রধানত দুই প্রকার তাই এখন কথা হচ্ছে আপনার কোন ধরনের ড্রাইভিং লাইসেন্স প্রয়োজন?মোটরসাইকেলের ড্রাইভিং লাইসেন্স সাধারণত দুই প্রকার
১। পেশাদার ড্রাইভিং লাইসেন্স।
২। অপেশাদার ড্রাইভিং লাইসেন্স।
পেশাদার ড্রাইভিং লাইসেন্স ফি
যদি আপনি কোন কোম্পানিতে বা অফিসের গাড়ি চালাতে চান তাহলে অবশ্যই আপনাকে পেশাদার ড্রাইভিং লাইসেন্স করতে হবে। অর্থাৎ আপনার নিজের নামে রেজিস্ট্রেশন ছাড়া অন্যান্য গাড়িও চালাতে পারবেন যে লাইসেন্স এর মাধ্যমে সেই লাইসেন্সটি হচ্ছে পেশাদার ড্রাইভিং লাইসেন্স।
বর্তমানে পেশাদার ড্রাইভিং লাইসেন্স এর মেয়াদকাল হচ্ছে পাঁচ বছর।
১। পেশাদার ড্রাইভিং লাইসেন্স।
২। অপেশাদার ড্রাইভিং লাইসেন্স।
পেশাদার ড্রাইভিং লাইসেন্স ফি
যদি আপনি কোন কোম্পানিতে বা অফিসের গাড়ি চালাতে চান তাহলে অবশ্যই আপনাকে পেশাদার ড্রাইভিং লাইসেন্স করতে হবে। অর্থাৎ আপনার নিজের নামে রেজিস্ট্রেশন ছাড়া অন্যান্য গাড়িও চালাতে পারবেন যে লাইসেন্স এর মাধ্যমে সেই লাইসেন্সটি হচ্ছে পেশাদার ড্রাইভিং লাইসেন্স।
বর্তমানে পেশাদার ড্রাইভিং লাইসেন্স এর মেয়াদকাল হচ্ছে পাঁচ বছর।
পেশাদার ড্রাইভিং লাইসেন্স করতে হলে আপনাকে ব্যাংকের মাধ্যমে ২৭৭২ টাকা জমা দিতে হবে। সরকারি নিয়ম অনুযায়ী পেশাদার ড্রাইভিং লাইসেন্স করতে হলে আপনার অবশ্যই ২১ বছর হতে হবে।
অপেশাদার ড্রাইভিং লাইসেন্স ফি
যে সকল গাড়ি বা মোটরসাইকেল আপনার নিজের নামে রেজিস্ট্রেশন করা কেবলমাত্র সেই সকল গাড়িগুলোই আপনি অপেশাদার ড্রাইভিং লাইসেন্সের মাধ্যমে চালাতে পারবেন। সরকারি নিয়ম অনুযায়ী অপেশাদার ড্রাইভিং লাইসেন্স এর মেয়াদ হচ্ছে ১০ বছর। অপেশাদার ড্রাইভিং লাইসেন্সের জন্য আপনাকে ব্যাংকের মাধ্যমে ৪৪৯৭ টাকা জমা দিতে হবে- অপেশাদার ড্রাইভিং লাইসেন্স পেতে হলে সর্বনিম্ন আপনার বয়স হতে হবে ১৮ বছর।
- লার্নার ড্রাইভিং লাইসেন্স করতে কি কি লাগবে
- স্ট্যাম্প সাইজের সাদা ব্যাকগ্রাউন্ড এর ছবি।
- জন্ম নিবন্ধনের সনদের কপি।
- এন আই ডি কার্ডের ফটোকপি
- শিক্ষাগত সনদের মূল কপি।
- এমবিবিএস ডাক্তারের সার্টিফিকেটের মূল কপি।
- বিদ্যুৎ বা গ্যাস বিলের কাগজ।
লার্নার লাইসেন্স করতে কত টাকা লাগে
- বিআরটিএ এর ওয়েব সাইটে গিয়ে আপনাকে লার্নার লাইসেন্সের জন্য আবেদন করতে হবে। যদি আপনি শুধুমাত্র মোটরসাইকেল বা গাড়ির জন্য লার্নার কার্ডের আবেদন করেন তাহলে সরকার নির্ধারিত ৫১৮ টাকা জমা দিতে হবে।
- যদি মোটরসাইকেল এবং গাড়ির জন্য লানার কার্ডের আবেদন করেন তাহলে আপনাকে অনলাইনে ৭৪৮ টাকা জমা দিতে হবে। বিকাশ এবং ডাচ বাংলা মোবাইল ব্যাংকিং এর মাধ্যমে অনলাইন ফ্রি প্রদান করতে পারবেন।
- আবেদনকৃত লার্নার কার্ডটি প্রিন্ট করে সংরক্ষণ করুন। ভালো করে লক্ষ্য করে দেখবেন লার্নার ফরমে পরীক্ষার তারিখ এবং সময় দেওয়া আছে এবং কোথায় পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে সেই স্থানের নাম উল্লেখ করা থাকবে।
- ড্রাইভিং লাইসেন্সের পরীক্ষার নিয়মাবলী
- অপেশাদার ও পেশাদার ড্রাইভিং লাইসেন্স করতে হলে আপনাকে তিন প্রকার পরীক্ষা দিতে হবে।
- রাইটিং পরীক্ষা।
- ভাইবা পরীক্ষা।
- প্রাকটিক্যাল পরীক্ষা।
- পেশাদার ও অপেশাদার ড্রাইভিং লাইসেন্সের জন্য রাইটিং এ ২০ মার্কের মধ্যে পরীক্ষা হয়ে থাকে। সময় মাত্র ২০ মিনিট। ১২ ১২ নাম্বার পেলে পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে পারবেন আপনি।
- ভাইবা পরীক্ষাতে আপনাকে ট্রাফিক নিয়ম কানুন বিষয়ে প্রশ্ন করা হবে। তাই অবশ্যই আপনাকে ইন্টারনেট বা অন্য কোনভাবে ট্রাফিক নিয়ম কানুন জেনে নিতে হবে।
আপনি যে বিষয়ের উপর লানার কার্ডের আবেদন করেছেন সেই বিষয়ের উপরে প্রাকটিক্যাল পরীক্ষা নেওয়া হবে। যেমন যদি আপনি মোটরসাইকেলের লাইসেন্সের জন্য আবেদন করেন থাকেন তাহলে আপনাকে মোটরসাইকেল চালিয়ে প্রাকটিক্যাল পরীক্ষা দিতে হবে। এবং যদি আপনি গাড়ির লাইসেন্স এর জন্য আবেদন করে থাকেন তাহলে ।
আপনাকে গাড়ি চালিয়ে প্র্যাকটিক্যাল পরীক্ষা দিতে হবে।আর যদি আপনি বাইক এবং গাড়ির দুটি বিষয়ে আবেদন করে থাকেন তাহলে অবশ্যই আপনাকে ভাই কেমন গাড়ি চালিয়ে প্রাকটিক্যাল পরীক্ষা দিতে হবে। যদি আপনি প্রাকটিক্যাল পরীক্ষায় পাশ করেন তাহলে আপনাকে পেশাদার বা অপেশাদার ড্রাইভিং লাইসেন্স প্রদান করা হবে।
ড্রাইভিং লাইসেন্স এর ফিঙ্গারপ্রিন্ট কখন হবে
আপনি যখন ড্রাইভিং লাইসেন্স এর জন্য তিনটি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হবেন এরপরে আপনাকে ফিঙ্গারপ্রিন্ট দেওয়ার জন্য বিআরটিএর অফিসে ডাকা হবে। ফিঙ্গারপ্রিন্টের কাজ শেষ হলে আপনাকে ডোপ টেস্টের তারিখ জানিয়ে দেওয়া হবে আপনার ড্রপ টেস্টের রিপোর্ট পজিটিভ হলে নিকটস্থ বিআরটিএ’র অফিসে যোগাযোগ করতে হবে।ড্রাইভিং লাইসেন্সের স্মার্ট কার্ড কখন পাবো
যদি আপনি সঠিকভাবে উপরের সকল কার্যক্রম শেষ করে থাকেন তাহলে আপনার কাছে থেকে অফিস অতিরিক্ত ৬০ টাকা জমা রাখবে। অতিরক্ত এই ৬০ টাকা হচ্ছে আপনার কাছে ড্রাইভিং লাইসেন্সের স্মার্ট কার্ড কুরিয়ার সার্ভিসের মাধ্যমে পাঠানোর জন্য খরচ।পেশাদার ও অপেশাদার ড্রাইভিং লাইসেন্স করতে হলে অবশ্যই আপনাকে অষ্টম শ্রেণী পাস রাখতে হবে। কারণ আপনাকে তিনটি পরীক্ষার মাধ্যমে ড্রাইভিং লাইসেন্স দেওয়া হবে তাই অবশ্যই আপনাকে অষ্টম শ্রেণীর কাগজপত্র আবেদনের সময় লার্নার কপির সাথে সংযুক্ত করতে হবে। অবশ্যই আপনাকে পরীক্ষার সময় জাতীয় পরিচয় পত্র অরজিনাল কপি সাথে নিতে হবে।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url