বিসিএস পরীক্ষার জন্য শিক্ষাগত যোগ্যতা - বিসিএস পরীক্ষার বয়সসীমা
প্রিয় পাঠক বিসিএস পরীক্ষার যোগ্যতা বলতে আমরা শুধু শিক্ষাগত যোগ্যতা বুঝলেও শারীরিক যোগ্যতা, প্রার্থীর বয়স, নাগরিকত্ব ইত্যাদি যোগ্যতা রয়েছে। যেসবের একটিতেও যদি কোন প্রার্থী অযোগ্য বলে বিবেচিত হন তাহলে তাঁর বিসিএস ক্যাডার হওয়ার স্বপ্ন শেষ হয়ে যেতে পারে। আজকের এই আর্টিকেল টি পড়ার পর বিসিএস পরীক্ষার যোগ্যতা সম্পর্কে সকল কিছু জানতে পারবেন।
বিসিএস ক্যাডার হওয়ার কিছু পূর্ব শর্ত রয়েছে। আর এমনই কয়েকটি শর্ত হচ্ছে:-
ভূমিকা
বিসিএস পরীক্ষার জন্য শিক্ষাগত যোগ্যতা - বিসিএস পরীক্ষার বয়সসীমাবিসিএস পরীক্ষায় আবেদন করতে চাইলে প্রার্থীকে কমপক্ষে স্নাতক পাশ হতে হয়। স্নাতক বলতে ৪ বছর মেয়াদী কোর্স বুঝায়। উচ্চ মাধ্যমিক পাসের পর চার বছরের অনার্স পাস হলেও বিসিএস পরীক্ষায় আবেদন করা যায়। এসএসসি থেকে স্নাতক পর্যন্ত সবগুলো পরীক্ষার যেকোন দুটিতে দ্বিতীয় শ্রেণী বা সমমান এবং ১টি তৃতীয় শ্রেণী বা সমমান এর নিচে পেলে সেই প্রার্থী বিসিএস পরীক্ষা দিতে পারবেন না।
বিসিএস পরীক্ষার শিক্ষাগত যোগ্যতা
উচ্চ মাধ্যমিকের পরে স্নাতক (অনার্স) পাশ করলেই আপনি বিসিএস পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে পারবেন। তবে উচ্চ মাধ্যমিক থেকে স্নাতক পর্যন্ত আপনি যতগুলো পাবলিক পরীক্ষা দিয়েছেন, তার সবগুলো পরীক্ষার যেকোন ২ টিতে দ্বিতীয় শ্রেণী বা সমমান এবং ১ টি তৃতীয় শ্রেণী বা সমমানের নিচে পেলে আপনি বিসিএস পরীক্ষা দিতে পারবেন নাএক্ষেত্রে আপনি যদি চার বছর ।মেয়াদী অনার্স না করে ডিগ্রী বা ৩ বছর মেয়াদী সমমান কোর্সে পড়াশুনা করেন, তাহলে আপনি সরাসরি বিসিএসে অংশগ্রহণ করতে পারবেন না। কিন্তু ডিগ্রী পাসের পরে স্নাতকোত্তর বা মাস্টার্স পাশ করলে আপনার জন্য আবেদনের সুযোগ খুলে যাবে।বর্তমানে বহুল প্রচলিত জিপিএ পদ্ধতি থাকায় অনেকেই প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় শ্রেণী নির্ধারণ করতে সমস্যায় ভোগেন। তাই কীভাবে খু সজজেই এটি নির্ণয় করবেন, তার সহজ হিসেব নিচে দেয়া হলো।
- মাধ্যমিক এবং উচ্চ মাধ্যমিকের ক্ষেত্রে:জিপিএ ৩ বা তার বেশি = প্রথম শ্রেণী
- জিপিএ ২ থেকে ৩ এর কম = দ্বিতীয় শ্রেণী
- জিপিএ ১ থেকে ২ এর কম = তৃতীয় শ্রেণী
- অনার্স (স্নাতক) এর ক্ষেত্রে:৩ বা তার বেশি = প্রথম শ্রেণী
- ২.২৫ থেকে ৩ এর কম = দ্বিতীয় শ্রেণী
- ১.৬৫ থেকে ২.২৫ এর কম = তৃতীয় শ্রেণী
বর্তমানে বিসিএস পরীক্ষা দেওয়ার বয়সসীমা
- সাধারণ প্রার্থীদের ক্ষেত্রে – বিসিএস পরীক্ষার বয়সসীমাপিএসসি যে মাসে বিসিএস পরীক্ষার বিজ্ঞাপন পাব্লিশ করবে সে মাসের ১ তারিখে যদি কোন প্রার্থীর বয়স – ২১ বছরের কম হয় অথবা ৩০ বছরের বেশি হয় তাহলে ওই প্রার্থী বিসিএস পরীক্ষায় অংশগ্রহণের জন্যে যোগ্য নয়। অর্থাৎ আপনার বয়স ২১-৩০ বছরের মদ্ধে হতে হবে। তাহলেই আপনি যোগ্য বলে বিবেচিত হবেন।
- হেলথ ক্যাডার – বিশেষ ক্ষেত্রমেডিকেল কলেজ থেকে এমবিবিএস পাশ করেছেন অথবা ডেন্টাল কলেজ থেকে বিডিএস পাশ করেছেন শুধু তারাই স্বাস্থ ক্যাডারে আবেদন করতে পারবেন। মেডিকেল স্টুডেন্টদের গ্রাজুয়েশন শেষ করতে ইন্টার্নসহ ৬ বছর লাগে, এমবিবিএস ফাইনাল প্রফেশনাল পরীক্ষা পাশ করলেই বিসিএস পরীক্ষায় অংশ নিতে পারে।অর্থাৎ ৫ বছর পর। যেখানে সাধারণ গ্রাজুয়েট রা ৪ বছরেই বিসিএস পরীক্ষার জন্যে যোগ্য হয় এবং আলাদা এক বছর ইন্টার্ন করতে হয়না। তাই স্বাস্থ ক্যাডারে অন্যান্য ক্যাডার থেকে ২ বকছর বেশি দেওয়া হয়েছে। স্বাস্থ ক্যাডারে আবেদন কারীদের সর্বোচ্চ বয়স ৩২। তাদের ক্ষেত্রে পিএসসি যে মাসে বিসিএস পরীক্ষার বিজ্ঞাপন পাব্লিশ করবে সে মাসের ১ তারিখে যদি কোন প্রার্থীর বয়স – ২১ বছরের কম হয় অথবা ৩২ বছরের বেশি হয় তাহলে ওই প্রার্থী বিসিএস পরীক্ষায় অংশগ্রহণের জন্যে যোগ্য নয়। অর্থাৎ আপনার বয়স ২১-৩২ বছরের মদ্ধে হতে হবে। তাহলেই উক্ত পরীক্ষার্থী যোগ্য বলে বিবেচিত হবেন।
- মুক্তিযোদ্ধা কোটা,প্রতিবন্ধি কোটা – বিশেষ ক্ষেত্রবিশেষ কিছু ক্ষেত্রে বয়স ২১-৩২ বয়স পর্যন্ত বিসিএস পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করা যায়।সেগুলো হল মুক্তিযোদ্ধা কোটা, প্রতিবন্ধী কোটা রয়েছে এবং স্বাস্থ ক্যাডারে আবেদন কারীদের সর্বোচ্চ বয়স ৩২। তাদের ক্ষেত্রে পিএসসি যে মাসে বিসিএস পরীক্ষার বিজ্ঞাপন পাব্লিশ করবে সে মাসের ১ তারিখে যদি কোন প্রার্থীর বয়স – ২১ বছরের কম হয় অথবা ৩২ বছরের বেশি হয় তাহলে ওই প্রার্থী বিসিএস পরীক্ষায় অংশগ্রহণের জন্যে যোগ্য নয়। অর্থাৎ আপনার বয়স ২১-৩২ বছরের মদ্ধে হতে হবে। তাহলেই উক্ত পরীক্ষার্থী যোগ্য বলে বিবেচিত হবেন
- উপজাতি কোটা – বিশেষ ক্ষেত্রবিসিএস সাধারণ শিক্ষা, কারিগরি শিক্ষা, স্বাস্থ্য ক্যাডারে উপজাতীদের জন্য সর্বোচ্চ ৩২ বছর (তবে অন্যান্য ক্যাডারগুলোতে বয়সসীমা ২১-৩০ বছর নিয়ম প্রযোজ্য)।এদের ক্ষেত্রে পিএসসি যে মাসে বিসিএস পরীক্ষার বিজ্ঞাপন পাব্লিশ করবে সে মাসের ১ তারিখে যদি কোন প্রার্থীর বয়স – ২১ বছরের কম হয় অথবা ৩২ বছরের বেশি হয় তাহলে ওই প্রার্থী বিসিএস পরীক্ষায় অংশগ্রহণের জন্যে যোগ্য নয়। অর্থাৎ আপনার বয়স ২১-৩২ বছরের মদ্ধে হতে হবে। তাহলেই উক্ত পরীক্ষার্থী যোগ্য বলে বিবেচিত হবেন
শারীরিক যোগ্যতা
লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ প্রার্থীদের মেডিকেল টেস্ট করানো হয়। মেডিকেল টেস্টে পাশ না করলে বিসিএস ক্যাডার হিসেবে নিয়োগ পাওয়া যায়না। অর্থাৎ, বিসিএস ক্যাডার হতে হলে আপনাকে শারীরিক যোগ্যতার প্রমাণ দিতে হবে। মেডিকেল টেস্টে সাধারণত প্রার্থীর উচ্চতা, ওজন ও বক্ষ পরিমাপ করা হয়, দৃষ্টিশক্তি পরীক্ষা করা হয় এবং মূত্র পরীক্ষা করা হয়।স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য মেডিকেল টিম গঠন করেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহা পরিচালক। স্বাস্থ্য পরীক্ষায় কোন প্রার্থী অযোগ্য বিবেচিত হলে তা প্রার্থীকে এবং বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশন কে জানানো হয়।
উচ্চতা, ওজন ও বক্ষ পরিমাপ
পুরুষ প্রার্থীর ক্ষেত্রে সর্বনিম্ন উচ্চতা ৫ ফুট হতে হবে। সর্বনিম্ন ওজন ৪৯.৯৯ কেজি। তবে পুলিশ ও আনসার ক্যাডার এর জন্য সর্বনিম্ন উচ্চতা ও ওজন যথাক্রমে ৫ ফুট ৪ ইঞ্চি ও ৫৪.৫৪ কেজি হতে হবে।
মহিলা প্রার্থীর জন্য সর্বনিম্ন উচ্চতা ৪ ফুট ১০ ইঞ্চি। মহিলা প্রার্থীর সর্বনিম্ন ওজন ৪৩.৫৪ কেজি। তবে পুলিশ ও আনসার ক্যাডার এর জন্য মহিলা প্রার্থীর সর্বনিম্ন উচ্চতা ৫ ফুট হতে হবে।
মহিলা প্রার্থীর জন্য সর্বনিম্ন উচ্চতা ৪ ফুট ১০ ইঞ্চি। মহিলা প্রার্থীর সর্বনিম্ন ওজন ৪৩.৫৪ কেজি। তবে পুলিশ ও আনসার ক্যাডার এর জন্য মহিলা প্রার্থীর সর্বনিম্ন উচ্চতা ৫ ফুট হতে হবে।
- সর্বনিম্ন ওজন ৪৫.৪৫ কেজি হতে হবে উল্লেখ্য যে, ওজন কম হলেও বাড়ানোর সুযোগ দেয়া হয়।
বিসিএস পরীক্ষা কতবার দেওয়া যায়
আপনার বয়স ৩০ বছর হওয়া পর্যন্ত আপনি এই বিসিএস পরীক্ষা দিতে পারবেন আপনি যতবার সুযোগ পাবেন ততবারই এই বি সি এস পরীক্ষা দিতে পারবেন কিন্তু দুই বারের বেশি বিসিএস পরীক্ষার সুযোগ বন্ধের বিষয়ে চিন্তাভাবনা করছে সরকার। একই সাথে বিসিএস পরীক্ষায় অংশগ্রহণের ক্ষেত্রে একটি নির্দিষ্ট জিপিএ নির্ধারণের কথাও ভাবা হচ্ছে।জনপ্রশাসন ও বাংলাদেশ পাবলিক সার্ভিস কমিশনের একাধিক সূত্রে এই তথ্য জানা গেছে। তবে বিষয়টি এখনও পর্যন্ত একদমই প্রাথমিক পর্যায়ের আলোচনা বলে জানিয়েছে সূত্রগুলো।সংশ্লিষ্টদের বক্তব্য, স্নাতক ফাইনাল পরীক্ষা শেষে ৩০ বছর বয়স পর্যন্ত বিসিএস পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করা যায়। ফলে কেউ কেউ ৫ থেকে ৬টি বিসিএস পরীক্ষায় অংশগ্রহণের সুযোগ পান।
এতে করে যারা প্রথমবার বিসিএস পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেন তারা চাকরির সুযোগ কম পাচ্ছেন। বিপরীতে বড় একটি অংশের বিসিএস হয় দ্বিতীয়বার কিংবা তৃতীয়বার পরীক্ষায় অংশগ্রহণের মাধ্যমে।
সূত্র বলছে, একাধিকবার পরীক্ষার সুযোগ দেওয়ার কারণে নতুন এবং পুরোনোদের মধ্যে একটি অসম প্রতিযোগিতা হচ্ছে। কেননা একাধিকবার পরীক্ষায় অংশগ্রহণকারী ।
সূত্র বলছে, একাধিকবার পরীক্ষার সুযোগ দেওয়ার কারণে নতুন এবং পুরোনোদের মধ্যে একটি অসম প্রতিযোগিতা হচ্ছে। কেননা একাধিকবার পরীক্ষায় অংশগ্রহণকারী ।
নিজের অভিজ্ঞতা এবং অধিক প্রস্তুতির কারণে এগিয়ে যাচ্ছেন। অন্যদিকে পিছিয়ে পড়ছেন ফ্রেশ গ্রাজুয়েটরা। মূলত এটি বন্ধ করতেই সরকারের বিভিন্ন পর্যায়ে আলোচনা চলছে। যদিও জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় কিংবা সরকারের অন্য মহলের কেউই এ নিয়ে চূড়ান্ত কোনো সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে পারেনি।
বিসিএস লিখিত পরীক্ষা কত দিনে হয়
লিখিত পরীক্ষায় টানা ৬ দিনে ২১ ঘণ্টা লিখিত পরীক্ষা দিতে হয়।বিসিএস লিখিত কত মার্কের হয়বিসিএস লিখিত পরীক্ষায় বাংলা বিষয়ে সাধারণ ক্যাডারের জন্য ২০০ নম্বর এবং উভয় ক্যাডারের জন্য ৩০০ নম্বরের পরীক্ষা দিতে হয়। এ পরীক্ষায় যেমন ভয় পাওয়ার কিছু নেই, আবার পরিশ্রমও খুব বেশি করতে হয় না।- মোটামুটি পরীক্ষা দিলেও আপনি ১০০-এর বেশি নম্বর পাবেন। আর বেশি পরিশ্রম করে পরীক্ষা দিলে ১১৫ থেকে ১২৫ নম্বর পেতে পারেন।
বিসিএস ক্যাডার হতে কত বছর লাগে
যা পূর্বে ২৭টি ছিল, ২০১৮ সালে ইকোনমিক ক্যাডারকে প্রশাসন ক্যাডারের সাথে একত্রিত করে। বিসিএস পরীক্ষা পর্যায়ক্রমে তিনটি ধাপে অনুষ্ঠিত হয়- প্রাথমিক পরীক্ষা (এমসিকিউ), লিখিত পরীক্ষা এবং মৌখিক পরীক্ষা (ইন্টারভিউ)। পরীক্ষার বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ থেকে চূড়ান্ত ফলাফল পর্যন্ত সমগ্র প্রক্রিয়া সম্পন্ন হতে ১.৫ থেকে ৫ বছর সময় লাগে।বিসিএস ক্যাডার হতে হলে কি করতে হবে
কোন কোন শর্ত পূরণ করতে পারলে বিসিএস ক্যাডার হওয়া যাবে?বিসিএস ক্যাডার হওয়ার কিছু পূর্ব শর্ত রয়েছে। আর এমনই কয়েকটি শর্ত হচ্ছে:-
- তীব্র আকাঙ্ক্ষা জাগ্রত করা
- সঠিক পরিকল্পনা করা
- সময় ম্যানেজমেন্ট করতে পারা
- পরিশ্রমী হয়ে ওঠা
- প্রস্তুতি ও কৌশলী হওয়া
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url