গরুর দুধের উপকারিতা ও অপকারিতা
প্রিয় পাঠক গরুর দুধের উপকারিতা ও অপকারিতা মানবদেহের বিকাশ ও বৃদ্ধির জন্য প্রয়োজনীয় সব উপাদান দুধে রয়েছে। বলা যেতে পারে, দুধ পুষ্টিকর খাবারের সেরা খাদ্য। গরুর দুধের অতীব প্রয়োজনীয় উপাদান রয়েছে যেমন ক্যালসিয়াম ও ভিটামিন ,ডি যা আমাদের শরীরের জন্য অনেক উপকারি। আমাদের দেহের সকল হাড় ও দাঁতকে মজবুত রাখতে এর বিকল্প নেই ।
নিয়মিত দুধ পান করলে আপনার হাড় সুস্থ থাকবে। এটি ক্যালসিয়াম, ফসফরাস, পটাসিয়াম, প্রোটিন এবং ভিটামিন কে২ সহ পুষ্টির শক্তিশালী উৎস। আর এই পুষ্টিগুলো সুস্থ হাড় বজায় রাখার জন্য প্রয়োজনীয় এই আর্টিকেলটি শষ পর্যন্ত পড়ুন জানতে পারবেন।
নিয়মিত দুধ পান করলে আপনার হাড় সুস্থ থাকবে। এটি ক্যালসিয়াম, ফসফরাস, পটাসিয়াম, প্রোটিন এবং ভিটামিন কে২ সহ পুষ্টির শক্তিশালী উৎস। আর এই পুষ্টিগুলো সুস্থ হাড় বজায় রাখার জন্য প্রয়োজনীয় এই আর্টিকেলটি শষ পর্যন্ত পড়ুন জানতে পারবেন।
ভূমিকা
দুধের বিভিন্ন পুষ্টিগুলো হাড়ের স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী। যেমন ক্যালসিয়াম, ভিটামিন ডি, ফসফরাস এবং ম্যাগনেসিয়াম। গবেষণায় দেখা গেছে, দুধ ও দুগ্ধজাতীয় খাবার অস্টিওপরোসিস প্রতিরোধ করতে পারে এবং ফ্র্যাকচারের ঝুঁকি কমায়। দুধে থাকা ভিটামিন-ডি ও ক্যালসিয়াম শরীরের হাড় মজবুত রাখতে সাহায্য করে। বিশেষ করে নারীরা অস্টিওআর্থ্রাইটিসের সমস্যা দূর করতে প্রতিদিন এক গ্লাস গরম দুধ খেতে পারেন।
সবেমাত্র যাদের পেটে অপারেশন করা হয়েছে তাদের জন্য দুধ খাওয়া থেকে বিরত থাকাই ভালো। তবে সুস্থ হয়ে গেলে তারা দুধ খেতে পারে।
দুধের উপকারিতা
- কিডনিতে পাথর রয়েছে এমন ব্যক্তিদের দুধ খাওয়ার ব্যাপারে সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত। কিডনি রোগীদের জন্য দুধ কম খাওয়া বা দুধ খাওয়া থেকে বিরত থাকায় ভালো।
- ল্যাক্টেজ নামক এনজাইমের অভাব রয়েছে এমন ব্যক্তিদের দুধ না খাওয়াই ভালো।
- পাকস্থলের আলসার তথা গ্যাস্ট্রিক আলসারের রোগীদের জন্য দুধ খাওয়া উচিত নয়। কেননা এসব রোগীরা দুধ খেলে তাদের ডায়রিয়া বা পেটে ব্যথা হতে পারে।
সবেমাত্র যাদের পেটে অপারেশন করা হয়েছে তাদের জন্য দুধ খাওয়া থেকে বিরত থাকাই ভালো। তবে সুস্থ হয়ে গেলে তারা দুধ খেতে পারে।
প্রতিদিন নিয়ম করে এক গ্লাস পা ২ গ্লাস দুধ খাওয়ার স্বাস্থ্যের জন্য ভালো। কিন্তু অনেকেই প্রতিদিন নিয়মের বাইরে যে অতিরিক্ত দুধ খেয়ে ফেলেন যা উপকারের চেয়ে অপকারই বেশি করে। গরুর দুধের উপকারিতা ও অপকারিতা হিসাব করে দেখা যায় যে অপকারিতার চেয়ে উপকারিতায় বেশি।
اللَّهُمَّ بَارِكْ لَنَا فِيهِ وَزِدْنَا مِنْهُ আরবি উচ্চারণ
উচ্চারণ : ‘আল্লাহুম্মা বারিক লানা ফিহি ওয়াজিদনা মিনহু’।
অর্থ : হে আল্লাহ! এই খাবারে আমাদের বরকত দিন এবং তা বাড়িয়ে দিন।
- রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে।
- ক্যান্সার হওয়া থেকে মুক্তি দেয়।
- মাথার চুল মজবুত করে।
- ত্বক উজ্জ্বল করে।
- খাবার হজম করতে সাহায্য করে।
- হার্টের স্বাস্থ্য ভালো রাখে।
- পেটের মধ্যেও গ্যাস হওয়া দূর করে।
- রাতে পরিপূর্ণভাবে ঘুম হয়।
- দাঁত মজবুত করে।
- শরীরে ক্যালসিয়াম বৃদ্ধি করে।
- হাড় ও পেশি শক্তিশালী হতে সাহায্য করে।
দুধ খাওয়ার অপকারিতা
- যাদের কিডনিতে পাথর হয়েছে তাদের দুধের ব্যাপারে সাবধানতা অবলম্বন করা উচিত। কিডনি রোগীদের জন্য কম খাওয়া এবং রাতে দুধ না খাওয়াই উত্তম।
- যাদের শরীরে ‘ল্যাক্টেজ’ (lactase) নামক এনজাইমের অভাব আছে, তাদের উচিত দুধ খাওয়ার ব্যাপারে সাবধান হওয়া।
- এলার্জি থাকলে, দুধ খাওয়ার ব্যাপারে সাবধান হোন। কারণ, এলার্জির রোগীদের দুধ খেতে নিষেধ করেন সংশ্লিষ্ট চিকিৎসকরা। অকেনের আবার দুধে এলার্জি আছে বলে জানা যায়।
- যারা পাকস্থলীর আলসার তথা গ্যাস্ট্রিক আলসারের রোগী, তাদেরও দুধ খাওয়া উচিত নয়। এই সকল রোগীদের দুধ খেলে পেটে ব্যথা ও ডায়রিয়া হতে পারে।
- যাদের পেটে অপারেশান করা হয়েছে, তাদের দুধ খাওয়া উচিত না যখন পুরোপুরি সুস্থ হয়ে উঠছেন তখন দুধ খেতে পারে।
দুধ খাওয়ার দোয়া
ইসলামীক শরীয়ত অনুযায়ী কম-বেশি সব কিছুরই নিয়ম ও দোয়া ইসলামীক বইয়ে ও কোরআন শরীফে উল্লেখ করা হয়েছে। আমাদের বিশ্বনবী হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) দুধ খাওয়ার দোয়া শিখিয়ে গেছেন।اللَّهُمَّ بَارِكْ لَنَا فِيهِ وَزِدْنَا مِنْهُ আরবি উচ্চারণ
উচ্চারণ : ‘আল্লাহুম্মা বারিক লানা ফিহি ওয়াজিদনা মিনহু’।
অর্থ : হে আল্লাহ! এই খাবারে আমাদের বরকত দিন এবং তা বাড়িয়ে দিন।
দুধের পুষ্টিগুন এক নজরে
- দুধে যেমন আছে উপকারিতা তেমনি পুষ্টিভরপুর।
- গরুর দুধে আছে অত্যাবশ্যকীয় অ্যামাইনো অ্যাসিড, বিভিন্ন ধরনের ভিটামিন, খনিজ পদার্থ যেমন ক্রোমিয়াম, ম্যাঙ্গানিজ, আয়রন, কোবাল্ট, কপার, জিংক, আয়োডিন ও সেলিনিয়াম।
- গরুর দুধের কম্পজিশনে পানি ৮৬ দশমিক ৫ শতাংশ, ল্যাকটোজ ৪ দশমিক ৮ শতাংশ, ফ্যাট ৪ দশমিক ৫ শতাংশ, প্রোটিন ৩ দশমিক ৫ শতাংশ এবং ভিটামিন ও খনিজ পদার্থ শূন্য দশমিক ৭ শতাংশ। গরুর দুধ সব পুষ্টির আধার ও শক্তির উৎস।
পাতলা দুধের উপকারিতা
পাতলা দুধ সাধারণত দুধের সাথে পানি মিশিয়ে দুধ পাতলা করা হয়। পাতলা দুধ সাধারণত চর্বি পরিমাণ কম হয়। পাতলা দুধে পুষ্টি উপাদান প্রোটিন ক্যালসিয়াম ভিটামিন ইত্যাদি পাওয়া যায়। পাতলা দুধ পর্যাপ্ত পরিমাণে ভিটামিন ডি ক্যালসিয়াম থাকে। পাতলা দুধে স্নায়ুর কার্যকারিতা বৃদ্ধি করে। পাতলা দুধের প্রচুর পরিমাণে রিবোফ্লাভিন।- ভিটামিন ১২ ইত্যাদি পাওয়া যায়। পাতলা দুধে চর্বি এবং ফ্যাট জাতীয় ক্যালোরি কম থাকায় অস্বাভাবিক ওজন বৃদ্ধি রোধ করে।
ঠান্ডা দুধের উপকারিতা
দুধে থাকা ক্যালসিয়াম শরীরের বিপাক প্রক্রিয়া বাড়িয়ে দিয়ে থাকে, তাই ক্যালরি খরচ হয় বেশি। এক গ্লাস দুধ পান করলে অনেকক্ষণ ধরে আর কিছু খাওয়ার আগ্রহ থাকেনা। এতে করে বেশি খাওয়ার প্রবণতাও কমে যায় এবং ওজন কমতেও সাহায্য করে।যাঁরা গ্যাস্ট্রিক সমস্যায় ভুগছেন, তাঁদের জন্য ঠান্ডা দুধ ভীষণ উপকারী।নিয়মিত দুধ খেলে বুক ও পেট জ্বালাপোড়া কমিয়ে দেই। তাই খাবার খাওয়ার পর রোজ আধা গ্লাস ঠান্ডা দুধ পান করা অনেক উপকার।তাছাড়া ঠান্ডা দুধে রয়েছে প্রচুর পরিমান ইলেকট্রোলাইট, যা ডিহাইড্রেশন দূর করতে সাহায্য করে। নিয়মিত দুধ খেলে শরীরে পানির মাত্রা ঠিক রেখে ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়াতে সহায়তা করে।
রাতে দুধ খাওয়ার উপকারিতা
আপনারা কি জানেন যে আপনারা সারাদিন যখন পরিশ্রম করে আসবেন তখন এনার্জি পাওয়ার জন্য আপনারা রাতে দুধ খেতে পারেন রাতে দুধ খাবার প্রচুর উপকারিতা হয়েছে যার ফলে কিন্তু আপনারা রাতে নিয়মিত দুধ খেতে পারেন। প্রতিদিন কর্মব্যস্ততার ফলে সারাদিন যখন কর্ম করে বাসায় ফিরবেন রাতের বেলা এক গ্লাস কুসুম গরম দুধ খেয়ে আপনি শান্তির ঘুম ঘুমাতে পারেন।দুধে পাওয়া যায় ক্যালসিয়াম ভিটামিন সহ মাইক্রো নিউট্রিয়েন্ট যা সরিল ও মানসিক বিকাশের সহায়তা করে। হালকা গরম দুধ খুবই পুষ্টিকর খনিজ ভিটামিন এবং ময়েশ্চারাইজিং বৈশিষ্ট্য ছাড়াও দুধে হরমনের ভারসাম্য বজায় রাখতে বৈশিষ্ট্য রয়েছে। এছাড়াও দুধ খেলে শরীরের ডোপামিনের ক্ষরণ বেড়ে যায়। ডোপামিন কে হ্যাপি হরমোন বলা হয় খুশি রাখে এবং মানসিক চাপ কমাতে সহায়তা করে।
গরম দুধের উপকারিতা
আমরা অধিকাংশ সময় গরম দুধ পছন্দ করি। গরম দুধে প্রচুর পরিমাণ শরীরের উপকার হয় এমন ভিটামিন আছে। নিয়মিত গরম দুধ খাওয়ার ফলে যেসব উপকারিতা পাওয়া যায় তা নিচে আলোচনা করা হলো গরম দুধ খেলে দ্রুত হজম শক্তি বৃদ্ধি করে। প্রোবায়োটিক গরম দুধে পাওয়া যায় যা হজমে ভালো কাজ করে।অপরদিকে গরম দুধের তুলনায় ঠাণ্ডা দুধে চর্বি বেশি থাকায় হজমে সমস্যা হয়।প্রতিদিন এক গ্লাস গরম দুধ আপনার রাতের ঘুমকে গভীর ও আরামদায়ক করতে সাহায্য করে। গরম দুধের অ্যামিনো এসিড রাতের ঘুম এর জন্য ভালো কাজ করে।ক্যালসিয়াম এবং ভিটামিন ডি গরম দুধে পাওয়া যায়। যা শরীরের শক্ত ও মজবুত করতে সাহায্য করে।
অতিরিক্ত দুধ খেলে কি হয়
- অতিরিক্ত দুধ খেলে হজমজনিত সমস্যা যেমন-গ্যাসের সমস্যা, পেটে ক্রাম্প করা অথবা ডায়রিয়া হতে পারে।
- দুধে থাকা ক্যালসিয়াম হাড় গঠনে সহায়তা করে এটা সবারই জানা। তবে অতিরিক্ত দুধ খেলে হাড় ভঙুর হয়ে যায়।
- রাতে দুধ খেলে স্বাস্থ্যের উপর বিরূপ প্রভাব ফেলতে পারে এবং ওজন বেড়ে যেতে পারে।
- অতিরিক্ত দুধ খেলে অন্ত্রে সমস্যা হতে পারে। এর ফলে শরীরে অলসতা লাগে।
- বেশি দুধ খেলে শিশুদের নানা ধরনের অ্যালার্জি, চর্মরোগ এবং পেটে সমস্যা হতে পারে।
- বেশি দুধ খেলে কারও কারও বিশেষ করে ছেলেদের হৃদরোগজনিত জটিলতা বাড়তে পারে।
- অতিরিক্ত দুধ খেলে কোষ্ঠকাঠিন্য ও পেট সংক্রান্ত অন্যান্য রোগ হতে পারে।
সকালে দুধ খাওয়ার উপকারিতা
হাড় হবে শক্তপোক্ত- হাড়ের জোর বাড়ানোর ইচ্ছে থাকলে যত দ্রুত সম্ভব রোজ সকালে উঠে খালিপেটে একগ্লাস দুধ খেয়ে নিন। এতেই আপনার ভিটামিন ডি এবং ক্যালসিয়ামের চাহিদা মিটে যাবে। ফলে হাড় থাকবে সুস্থ-সবল। এমনকি অস্টিওপোরোসিস এবং অস্টিওআর্থ্রাইটিসের মতো অসুখের ফাঁদও এড়িয়ে চলা যাবে।
- ক্ষুরধার বুদ্ধির অধিকারী হতে চাইলে কাল সকাল থেকে এক গ্লাস দুধ খেয়ে নিন। কারণ দুধে রয়েছে গ্লুটাথায়ন নামক একটি অক্সিডেন্ট। আর এই অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট কিন্তু মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা বাড়ানোর কাজে সিদ্ধহস্ত। তাই যারা নিজের বুদ্ধির কেরামতি দেখাতে চান তারা প্রতিদিন সকালে দুধ খান।
- হাই প্রেশার একটি ঘাতক অসুখ। এই রোগকে ঠিক সময়ে বাগে না আনতে পারলে হার্ট, কিডনিসহ দেহের একাধিক অঙ্গের বারোটা বাজতে সময় লাগবে না। তাই যেন তেন প্রকারেণ ব্লাড প্রেশার কমাতে হবে। আর এই কাজে আপনাকে সাহায্য করতে পারে এক গ্লাস গরম দুধ।
- ফ্যাটের আস্তরণ ঝরিয়ে পেশি বহুল চেহারা বানাতে চান তো নাকি? তাহলে কাল সকাল থেকেই এক গ্লাস গরম দুধের গ্লাসে চুমুক দিন। এতেই দেহের প্রোটিনের চাহিদা মিটবে। এমনকি বাড়বে পেশিশক্তি। বিশেষত, যারা স্ট্রেনথ ট্রেনিং বা ওয়েট ট্রেনিং করছেন, তাঁদের ডায়েটে অবশ্যই দুধ থাকাটা মাস্ট। এতেই দেখবেন মাসল পাওয়ার বাড়বে। আপনি থাকবেন সুস্থ-সবল।
- আজকাল অনেকেই অবসাদের মতো মানসিক সমস্যার ফাঁদে পড়ছেন। তবে চিন্তা নেই, এই সমস্যার সহজ সমাধান হল এক গ্লাস দুধ। জানলে অবাক হবেন, রোজ সকালে এক গ্লাস ঠান্ডা দুধ খেলেই কিন্তু মস্তিষ্কে সেরোটোনিন হরমোনের ক্ষরণ অনেকটাই বেড়ে যাবে। ফলে মন থাকবে ফুরফুরে। এমনকি কেটে যাবে অবসাদ।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url