কবুতরের চোখের রোগ ও প্রতিকার - কবুতরের বাচ্চার রোগ
প্রিয় পাঠক কবুতর পালন করতে গিয়ে আমরা বিভিন্ন ধরনের রোগ দ্বারা আমাদের কবুতর গুলোকে আক্রান্ত হতে দেখি। এসব রোগ গুলো যেমন আলাদা আলাদা লক্ষণ প্রকাশ করে তেমনি প্রতিটি রোগের জন্য প্রয়োজন আলাদা ঔষুধ কবুতরের বাচ্চার রোগ সব সময় লেগেই থাকে। তাই আপনাকে কবুতরের কয়েকটি রোগের নাম সম্পর্কে জানতে হবে নিচে আলোচনা করা হয়েছে।
কবুতর রোগাক্রান্ত হলে সঙ্গে সঙ্গে স্যালাইন ইলেক্ট্রোমিন এবং রাইস স্যালাইন (কলেরা রোগের চিকিৎসায় ব্যবহারযোগ্য যেকোন রাইস স্যালাইন এই দুটি ওষুধ খাওয়াতে হবে।
লক্ষণ
লক্ষণ
কবুতর রোগাক্রান্ত হলে সঙ্গে সঙ্গে স্যালাইন ইলেক্ট্রোমিন এবং রাইস স্যালাইন (কলেরা রোগের চিকিৎসায় ব্যবহারযোগ্য যেকোন রাইস স্যালাইন এই দুটি ওষুধ খাওয়াতে হবে।
ভূমিকা
একটা বিষয় লক্ষ্য করে দেখা গেছে যারা কবুতর পালন করেন তারা প্রাথমিক অবস্থায় এর রোগ এবং তার প্রতিকার সম্পর্কে খুব একটা জ্ঞান রাখেন না। অথচ সামান্য একটু বিচক্ষণতার পরিচয় দিলে আপনি নিজের প্রিয় কবুতরটিকে রোগে আক্রান্ত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে চিকিৎসা দিয়ে সারিয়ে তুলতে পারেন।
কবুতরের চোখের রোগ ও প্রতিকার
অরনিথোসিস এর চিকিৎসা- কবুতরের চোখের এ রোগ নিরাময়ে কবুতরের খাবার পানির সাথে অরিওমাইসিন নামক একটি পাউডার মিশিয়ে দিতে পারেন।
- হালকা কুসুম গরম পানি দিয়ে খুবই আলতো বে কবুতরের চোখ পরিষ্কার করে দিতে হবে।
- টেট্রাসাইক্লিন নামক একটি চোখের মলম আক্রান্ত কবুতরের চোখে ব্যবহার করতে পারেন।
- ৪-৫ দিন তিন বেলা করে আক্রান্ত কবুতরের চোখে গ্যাটিসন ড্রপ ব্যবহার করতে পারেন। এটি বেশ কার্যকরী চিকিৎসা।
- খামারে ধারণক্ষমতার চেয়ে অধিক কবুতর রাখা।
- খামার অপরিষ্কার রাখা।
- কবুতরের ঠান্ডা লেগেও এ রোগ হতে পারে।
- কবুতর পরষ্পরের সাথে লড়াই করলেও এ রোগ হওয়ার আশঙ্কা দেখা যায়।
- খামার সবসময় পরিষ্কার রাখতে হবে। খাঁচার ট্রে পরিষ্কার রাখতে হবে।
- কবুতরকে আর্দ্র স্থানে রাখা যাবে না এতে করে ঠান্ডা লাগতে পারে।
- একটি কবুতরের অরনিথোসিস রোগ দেখা গেলে সাথে সাথে কবুতরটিকে অন্য কবুতর থেকে আলাদা করে দিতে হবে যতদিন না কবুতরের চোখের রোগ সেরে যায়।
- খাঁমার ও খাঁচা পোকামাকড় থেকে মুক্ত রাখতে হবে।
- খামারে যেন কবুতররা লড়াই না করতে পারে সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে।
কবুতরের বাচ্চার রোগ
যখন কবুতরের বাচ্চা ডিমের ভিতর থেকে বাহিরে আসে তখন কবুতরের বাচ্চা তখন যে সমস্যাটা গুলো বেশি দেখা যায় সেটি হচ্ছে ঝিমানো চোখ দিয়ে পানি পড়া সর্দি জ্বর ঠোট ফুলে যাওয়।তাই আপনাকে কবুতরের যখন বাচ্চা দিবে তার আগে আপনাকে কবুতরের মাকে ভালো করে ওষুধ ভিটামিন খেতে হবে। তাহলে কবুতর যখন বাচ্চাকে খাবার ।খাওয়াবে বড় কবুতরের থেকে ছোট বাচ্চার শরীরে ক্যালরি পাবে ।আর বিশেষ করে যখন কবুতরের বাচ্চা কবুতরের বাসায় থাকে কবুতরের বাচ্চা হওয়ার পরে সে বাসায় কিছু পোকা দেখা দেয়। পোকা গুলো অনেক বিষাক্ত ছোট কবুতরের বাচ্চা হাত-পা খেয়ে ফেলে তাই আপনাকে জানতে হবে।এ পোকা গুলো হলে কি করতে হবে। তাই যখন কবুতর নতুন বাচ্চা দিবে তার পরে ।
কবুতরের বাসা ভালো করে পরিষ্কার করে দিতে হবে নয়তো সে পোকা গুলো কবুতরের বাচ্চার ক্ষতি করতে পারে। আর বিশেষ করে কবুতরের বাচ্চা তেমন কোন রোগ হয় না আশা করি বুঝতে পেরেছেন যে কবুতরের বাচ্চা রোগ কি কি করতে হবে।
লক্ষণ
লক্ষণ
আরো পড়ুনঃ কবুতরের মাংসের উপকারিতা ও অপকারিতা
নতুন কবুতর কালেক্ট করলে করণীয়
কবুতরের চুনা বা সবুজ পায়খানা আছে কিনালক্ষণ
- মনে রাখা জরুরী, ড্রপিং সমস্যা আছে কিনা? তবে হ্যা, কবুতর না খেলে বা কম খেলে বা ভয়ের কারণেও সবুজ বা চুনা পায়খানা দেখা যেতে পারে।
- বুঝতে হবে, ঐটি অসুস্থ বা বদহজমের চুনা বা সবুজ ড্রপিং কিনা? বদহজম হলে, কবুতর ঝিম ধরে, গাঁ ফুলিয়ে, খাঁচার এক কোণে ঘাড় গুজে, চোখ বন্ধ করে দাড়িয়ে থাকবে। পেটে খাদ্য জমা থাকবে। ভাল খাবে না। খেলেও হজম হবে না। বমিও হতে পারে, আবার নাও হতে পারে।
- যদি উক্ত উপসর্গ গুলির উপস্থিতি কবুতরের মাঝে থাকে, তবে তাকে চুনা বা সবুজ পায়খানার ট্রিটমেন্ট দিতে হবে।
- কবুতরের মহামারী রোগই কিন্তু এটি। এ রোগটি উত্তরণ করতে পারলেই, কবুতর পালক ইনশাআল্লাহ সফল হবে, এ আমার দৃঢ় বিশ্বাস।
লক্ষণ
- নাকে পানি থাকা বা দু'আঙ্গুল দ্বারা নাক চাপ দিয়ে দেখা, নাকে পানি আছে কিনা।
- সর্দীর কারণে কবুতর বার বার ঠোট দিয়ে ঘাড়ের দু'পাশে, শরীরে বা পাক চুলকায়ে থাকে।
- ফোঁসফোঁস বা খকখক কাশি থাকতেও পারে, নাও থাকতে পারে।
- সর্দীর কারণে চোখে পানিও থাকতে পারে। পাশাপাশি চোখে পানি + চোখের পাশে লাল হয়ে ফোলা থাকতে পারে। এটা কিন্তু চোখ উঠার কারণ নাও হতে পারে।
- এই উপসর্গগুলির উপস্থিতি থাকলে, জরুরী হবে তাকে সর্দীর ট্রিটমেন্ট দেয়া।
লক্ষণ
- কবুতরের দু'ঠোট, দুই হাতে হা করে ধরে দেখতে হবে যে, দুই চোয়ালে, জিহব্বাহ বা জিহব্বার শেষে গলার দিকে সাদা সাদা বা হলুদাভ আবরণ বা দলা পাকানো আছে কিনা? যে কারণে সে অল্প খাচ্ছে। গালে ঘা বা ফাঙ্গাস থাকলে, অতি জরুরী হবো তার ট্রিটমেন্ট দেয়া।
লক্ষণ
- এ ক্ষেত্রে চোখ লাল হয়ে ফুলে যাবে।
- চোখে পানি ও চোখের পাশে ময়লা থাকবে। এক্ষেত্রে জরুরী তখন তার ট্রিটমেন্ট দেয়া।
কুবতরের বিভিন্ন প্রকার রোগ ও চিকিৎসা
- বাড়িতে বা খামারের পোষা কবুতরের বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হতে পারে। তবে কবুতর সচারাচর খুব কম রোগে আক্রান্ত হয়। এখন আসুন এই রোগগুলি এবং তাদের প্রতিকার সম্পর্কে কিছু আলোচনা করা যাক।
- একটি কবুতরের সাধারণত যে সকল রোগগুলি দেখা যায় তা হল-
- রাণীক্ষেত রোগ
- ফাউল কলেরা রোগ
- করাইজা অথবা আউল’স হেড
লক্ষণ
- রাণীক্ষেত রোগে আক্রান্ত কবুতর সারাদিন চুপচাপ বসে থাকবে এবং ঝিমাতে থাকে।
- আস্তে আস্তে খাদ্য গ্রহনের পরিমান কমে যাবে।
- দ্রুত ওজন কমতে থাকবে।
- প্রথম দিকে কবুতরের প্রচুর জ¦র আসবে।
- পাতলা পায়খানা করবে যা দেখতে চুনের মত সাদা দেখাবে।
- কবুতরের ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমন যেন না হয় সেই জন্য কবুতরকে রেনামাইসিন, সিপ্লোসল ভেট ইত্যাদি যেকোন একটি ওষুধ খাওয়াতে হবে।
- রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানোর জন্য কবুতরকে ভিটামিন সি জাতীয় ওষুধ খাওয়াতে হবে।
- রাণীক্ষেত রোগের জন্য কবুতরকে আরডিভি নামক ভ্যাকসিন দিতে হবে।
- কবুতরের পানির ঘাটতি মেটানোর জন্য ইলেক্ট্রোলাইট স্যালাইন খাওয়াতে হবে।
লক্ষণ
করাইজা বা আউল’স হেড রোগটি মূলত ব্যাকটেরিয়া জনিত একটি মারাত্মক রোগ। এই রোগটির অনেক নাম রয়েছে যেমন- Cold, Catarrh, Infectious Roup ইত্যাদি।
লক্ষণ
- ফাউল কলেরা রোগের কারনে কবুতরের শ্বাসকষ্টের সমস্যা দেখা যায়।
- কাশি, হাঁচি, নাক দিয়ে পানি পড়বে।
- বমি ও ডায়রিয়া দেখা দিবে।
- পাখা বা ডানাগুলোর মধ্যে কম্পন দেখা দিতে পারে।
- কবুতর অলস হয়ে যাবে, দ্রæত ওজন কমতে থাকবে।
- কলেরা রোগে সালফার ড্রাগ প্রয়োগ করা যায়।
- অ্যান্টিভাইরাল বা অ্যান্টিবায়োটিক ওষুধ খাওয়াতে হবে।
- নিয়মিত টিকা প্রদান করতে হবে।
করাইজা বা আউল’স হেড রোগটি মূলত ব্যাকটেরিয়া জনিত একটি মারাত্মক রোগ। এই রোগটির অনেক নাম রয়েছে যেমন- Cold, Catarrh, Infectious Roup ইত্যাদি।
লক্ষণ
- কবুতরের প্রথমে মুখ, মাথা ও চোখ আস্তে আস্তে ফুলে যাবে।
- কবুতরের নাক ও মুখ দিয়ে তরল জাতীয় পদার্থ বের হবে।
- চোখ বন্ধ হয়ে যাবে এবং ফুলে যাবে।
- নিঃশ্বাস গ্রহন করতে খুব কষ্ট হবে এবং ঘরঘর শব্দ করবে।
- খাবার খাওয়ার পরিমাণ কমে যাবে।
- গলোদেশ ফুলে যাবে এবং হাচি হবে।
- প্রতিদিন দুই বার করে ভিনেগার মিশ্রিত পানি দিয়ে চোখগুলি ভাল করে পরিষ্কার করতে হবে।
- কবুতরকে সুপার টি এস প্রতি ৫ লিটার পানিতে ১ গ্রাম মিশ্রণ করে ৩ থেকে ৫ দিন খাওয়াতে হবে।
- মাইক্রোনিড প্রতি ১ লিটার পানিতে ০.৫ থেকে ১ গ্রাম মিশ্রণ ৩ থেকে ৫ দিন খাওয়াতে হবে।
কোন জাতের কবুতর বেশি বাচ্চা দেয়
সাধারণত পৃথিবীতে অনেক জাতের কবুতর রয়েছে। তার ভিতরে বাংলাদেশের আবহাওয়ায় বাংলা জাত খুবই মানানসই। এর মধ্যে আরেকটি জাত রয়েছে ওই জাতের নাম হলো গিরিবাজ। গবেষণায় দেখা যায় এই গিরিবাজ কবুতরের এক মাসের ভিতরে একজোড়া ডিম ও এক জোড়া বাচ্চা দেয়। এই গিরিবাজ কবুতর ওড়ার ক্ষমতা বেশি এটা আকাশে অনেকক্ষণ উড়তে পারে ।- এবং এই গিরিবাজ কবুতরের অনেক দাম বলে গণনা করা যায়। তাদের শরীরে কাঠামো অনেক স্ট্রং হয়ে থাকে।তাদের শরীরে বেশি শক্তি থাকার কারণে তার বেশি বাচ্চা ও ডিম দিতে পারে এটা বিভিন্ন জায়গা থেকে অনেক পুষ্টি কর খাবার এনে তাদের সে বাচ্চাদের খাওয়ায়ে থাকে। তাই সে বাচ্চাগুলো অতি দ্রুত বড় হয় আর তাই তারা আবার ডিম পাড়তে পারে আর ওই এক মাসের ভিতরে এভাবেই তারা ডিম ও বাচ্চা দিয়ে থাকে।
কবুতরের বাচ্চা কত দিনে উড়তে পারে
কবুতরের বাচ্চা খাবার ঠিকঠাক থাকলে বঙ্গবতর যদি কোন রোগে আক্রান্ত না হয় তাহলে খুবতাড়াতাড়ি উড়তে পারে। এবং শরীরে যদি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা থাকে তাহলে খুব তাড়াতাড়ি পায়খানা শক্ত হয় এতে তাড়াতাড়ি ওর শক্তি পায়। ডিম থেকে বাচ্চা ফোটার পাঁচ থেকে ছয় দিন পর বাচ্চার চোখ খুলতে পারেতারপর আস্তে আস্তে শরীরে পালক গজাই ।এবং এভাবে প্রায় ২০ থেকে ২১ দিন পর দুইটা ডানা ও লেজ বড় হয় এবং ঠোঁট শক্ত হয়। এভাবে ২৮ থেকে ৩০ দিন পর বাচ্চার শরীর পূর্ণতা লাভ করে এবং এর কিছুদিন পর থেকে বাচ্চা আস্তে আস্তে ওরা চেষ্টা করে কিছুদিন যাবার পর বাচ্চা পরিপূর্ণভাবে উঠতে পারে।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url