অফিস সহায়কের কাজ কি? বিস্তারিত জেনে নিন?

প্রিয় পাঠক আজকে আমরা জানবো অফিস সহায়কের কাজ কি? বিস্তারিত জেনে নিন? অফিস সহায়ক এর কাজ হচ্ছে তার অফিসের বস যারা রয়েছে তাদের প্রয়োজনীয় কাজে সহযোগিতা করা। অফিস সহায়ক অর্থ অফিসের কাজে সহায়তা করা। অর্থাৎ অফিসের কাজকর্ম যেগুলো রয়েছে সেগুলো সাহায্য করা ।
অফিস সহায়কের কাজ কি? বিস্তারিত জেনে নিন?

ভূমিকা

সরকারের প্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে জারিকৃত ৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ খ্রিস্টাব্দ পরিপত্র অনুযায়ী, এ পদের পূর্বে নাম ছিল এমএলএসএস। পিয়ন, দফতরি, চাপরাশি, আর্দালি এইসব নাম পরিবর্তন করে পরবর্তীতে এ পদের নাম রাখা হয়েছে অফিস সহায়ক।

অফিস সহায়ক কি

অফিস সহায়ক শব্দের অর্থ হলো অফিসের কাজে সাহায্য করা। অফিসের বিভিন্ন দাপ্তরিক কাজে কাজ করা হলো একজন অফিস সহায়ক এর মূল কাজ।চতুর্থ শ্রেণীর পেশাজীবিদের ব্রিটিস সময় থেকে বিভিন্ন নামে ডাকা হতো। পিয়ন, চাপরাশি, দফতরি, এম এল এস ইত্যাদি। তবে বাংলাদেশ সরকার এর নির্দেশে ২০১৪ সালে পদবি পরিবর্তন করে অফিস সহায়ক রাখা হয়।

  • সাথে চতুর্থ শ্রেণীর বিভিন্ন পদের নাম পরিবর্তন করে রাখা হয়।

অফিস সহায়ক এর কাজ কি

অফিস সহায়ক এর কাজ হচ্ছে  তার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা যারা রয়েছে তাদের কাছে প্রয়োজনীয় কাজে সহযোগিতা করা। অফিস সহায়ক অর্থ অফিসের কাজে সহায়তা করা।অর্থাৎ অফিসের কাজকর্ম যেগুলো রয়েছে সেগুলো সহায়ক।বাংলাদেশ সরকারের সরকারি চাকুরির সাধারণ প্রশাসন বিভাগের নিয়ন্ত্রণ শাখা কর্তৃক যে কাজগুলো নির্ধারণ করা ।

হয়েছে অফিস সহায়ক এর জন্য সেগুলো এখন আমরা দেখে নেবো :অফিসের আসবাবপত্র এবং রেকর্ড সমূহের সুন্দরভাবে বিন্যাস সাধন করা এবং পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখা।
  • অফিসের ফাইল এবং কাগজপত্র নির্দেশক্রমে একস্থান হতে অন্য স্থানে কিংবা অন্য অফিসে স্থানান্তরিত করা।
  • হালকা আসবাবপত্র অফিসের মধ্যে একস্থান হতে অন্য স্থানে সরানো।
  • গোপন অথবা গুরুত্বপূর্ণ ফাইলসমূহ স্টিলের বাক্সবন্দী করে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার নির্দেশক্রমে এক অফিস হইতে অন্য অফিসে নেয়া।
  • প্রয়োজনে কর্মকর্তা এবং কর্মচারীদের পানীয় জল পান পান করানো।
  • অফিসের সমস্ত মনিহারি এবং অন্যান্য দ্রব্যাদি সংরক্ষণের জন্য দায়ী থাকা।
  • নির্ধারিত ইউনিফর্ম পরিধান করে অফিসে আসা।
  • স্ব স্ব শাখা এবং কর্মকর্তাদের নির্দেশিত কাজ করা।
  • দর্শন প্রার্থী এবং পাবলিকদের সাথে ভদ্রতা বজায় রেখে ভালো ব্যবহার করা।
  • কর্মকর্তার পক্ষে ব্যাংক চেক জমা এবং টাকা তোলা।
  • অফিস শুরু হওয়ার ১৫ মিনিট পূর্ব অফিসে আসা এবং সহকারি সচিব প্রধান সহকারীর নিকট আগমনী রিপোর্ট করা।
  • বিনা অনুমতিতে কোন সময় অফিস ত্যাগ না করা। অর্থাৎ একজন অফিস সহায়ক যদি কোনো কারণে অফিসের বাইরে যেতে চায় তাহলে সেটা অবশ্যই তাদের যে সিনিয়র কর্মকর্তা রয়েছেন তারা অনুমতি নিয়ে যেতে হবে।

অফিস সহায়ক ও অফিস সহকারীর মধ্যে পার্থক্য

অফিস সহায়কের কাজ হচ্ছে
  1. অফিসের মধ্যে থাকা আসবাবপত্র এক স্থান থেকে অন্য স্থানে সরানো।
  2. বিভিন্ন ধরনের অফিসের গুরুত্বপূর্ণ ফাইল স্টিলের বক্সে বন্দী করে নির্দেশক্রমে এক অফিস থেকে অন্য অফিসে নিয়ে যাওয়া।
  3. অফিসের মধ্যে যেগুলো কর্মচারী ও কর্মকর্তা রয়েছে তাদেরকে পানি পান করানো।
  4. অফিসে আসার সময় সেই অফিসের নির্ধারিত ইউনিফর্ম পরিধান করে অফিসে আসা।
  5. অফিসের যেগুলো কর্মকর্তা রয়েছে তাদের নির্দেশিত অনুযায়ী কাজ করা।
  6. অফিসে যে সকল স্যারেরা দর্শন প্রার্থী কিংবা অন্য কোন পাবলিকের সঙ্গে ভদ্রতা বজায় রেখে কথা বলা।
  7. অফিসের কর্মকর্তা পারমিশন নিয়ে ব্যাংকে চেক জমা দেওয়া এবং টাকা তোলা।
  8. অফিস সময়ের সর্বনিম্ন ১৫ থেকে ২০ মিনিট পূর্বে অফিসে এসে উপস্থিত হতে হবে।
  9. বিনা অনুমতিতে অফিস থেকে কোনভাবেই ত্যাগ করা যাবে না।
  10. উপরে উল্লেখিত যে দায়িত্বগুলো দেখছেন সেগুলো অফিস সহায়কের কাজ অফিস সহায়কের এই সকল কাজের মধ্যে থাকতে হয় এর বাইরেও আরো বিভিন্ন ধরনের দায়িত্ব পালন করছে তাহলে বুঝতেই পারছেন অফিস সহায়ক এর দায়িত্ব ও কর্তব্য কতটুকু রয়েছে।
অফিস সহকারী কাজ হচ্ছে
  • অফিস সহকারি হচ্ছে একজন ১৬ গ্রেড এর তৃতীয় শ্রেণীর কর্মচারী যার বেতন ৯৩০০ থেকে ২২ হাজার ৪৯০ টাকা পর্যন্ত এ যেন বিভিন্ন ধরনের কাজ কবি গুরুত্বপূর্ণ অফিস সহকারী হিসেবে যে পথ পায় তার বিভিন্ন ধরনের দায়িত্ব ও কর্তব্য থাকে যেগুলো আমি সহকারীদের করতে হয় চলুন তাহলে জেনে নেয়া যাক অফিস সহকারী এর দায়িত্ব ও কর্তব্য।
  • অফিস সহকারীর প্রথম যে কাজ সেটা হচ্ছে হিসাব কিতাবের কাজ অর্থাৎ রেজিস্টার মেন্টেন করা।
  • অফিসের সকল প্রকার চিঠিপত্র কিংবা ডকুমেন্ট টাইপিং এর কাজ করা।
  • অফিসের বিভিন্ন ফাইল বই সবকিছু আদায় করে সুন্দর করে বক্সে রাখা।
  • অফিস সহকারে কাজ নতুন ফাইল রেখে সুন্দর করে সাজিয়ে রাখা এবং পুরাতন ফাইলগুলোর কভার পরিবর্তন করে নতুন ফাইল স্থাপন করা।
  • অফিসের বিভিন্ন ফাইলপত্র সিলিং ফ্যান আসবাবপত্র অফিস সামগ্রী সহ ইত্যাদি যত কাজ রয়েছে সমস্ত কাজ পরিছন্নতা করার জন্য পরিছন্নতা কর্মী কিংবা অফিস সহায়ক দিয়ে নিয়মিত পরিষ্কার করা।
  • অফিসের যাবতীয় ভাতার বিল বা অন্য বিভিন্ন বিলের ব্যয় মজুরি তৈরি করা ও উপস্থাপন করা।
  • লিভারেজ সংক্রান্ত কম্পিউটারের যে সকল কাজ রয়েছে সে সকল কাজগুলো প্রস্তুত করা।
  • এছাড়াও সময়ে সময়ে কর্তৃপক্ষের নির্দেশিত অনুযায়ী দায়িত্ব পালন করা।

অফিস সহায়ক এর সুগোগ ‍সুবিধা কি কি

একজন সরকারি অফিস সহায়ক এর বিভিন্ন সুযোগ ‍সুবিধা রয়েছে। আর্টিকেলের এই অংশে আমরা এর বিস্তারিত জেনে নেব। একজন অফিস সহায়ক এর বেতনের পাশাপাশি আরও বিভিন্ন ধরণের সুযোগ সুবিধা রয়েছে চলুন সেগুলো জেনে নেওয়া যাক
  1. বাড়ি ভাড়া বাবদ ভাতা দেওয়া হয় মূল বেতনের ৬৫ ভাগ।
  2. শিক্ষা ভাতা বাবদ দেওয়া হয় ১০০০ টাকা।
  3. যাতায়াত খরচ ৩০০ টাকা।
  4. মাসিক টিফিন ভাতা ২০০ টাকা।
  5. চিকিৎসা ভাতা ১৫০০ টাকা।
  6. অন্যান্য ও ধোলাই ভাতা দেওয়া হয় ১০০ টাকা।

হাই স্কুলের পিয়নের বেতন কত

বাংলাদেশের সরকারি ও বেসরকারি সকল প্রতিষ্ঠানেই শ্রেণী অথবা গ্রেড অনুযায়ী বেতন প্রদান করা হয়। গ্রেড অনুযায়ী একজন চাকরিজীবীর বেতন ও ভাতা কোন পর্যায়ে আছে তা বোঝা যায়। একজন হাই স্কুলের অফিস সহায়ক বা পিয়ন পদ প্রার্থী চতুর্থ পর্যায়ে অর্থাৎ ২০ তম গ্রেড অনুযায়ী প্রতি মাসে ন্যূনতম ৮,২৫০ টাকা থেকে ২০,০১০ টাকা পর্যন্ত বেতন পেয়ে থাকে।

অফিস সহায়কের শিক্ষাগত যোগ্যতা

অফিস সহায়ক হওয়ার জন্য আপনার শিক্ষাগত যোগ্যতা থাকতে হবে। সর্বশেষ নীতিমালা অনুযায়ী অফিস সহায়ক হওয়ার জন্য নূন্যতম ৮ম শ্রেনী বা এসএসসি পাস হতে হবে। তবে কিছু কিছু অফিস এর ক্ষেত্রে যোগ্যতার তারতম্য ঘটতে পারে।

অফিস সহায়ক এর দায়িত্ব ও কর্তব্য

অফিসের আসবাবপত্র এবং রেকর্ড সমূহ সুন্দরভাবে বিন্যাস সাধন করা এবং পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখা।
অফিসের ফাইল এবং কাগজপত্র নির্দেশক্রমে স্থান হতে অন্য স্থানে কিংবা অন্য বিষয়ে হস্তান্তর করা।
  • হালকা আসবাবপত্র অফিসের মধ্যে স্থান হতে অন্য স্থানে সরানো।
  • গোপন তথ্য অথবা গুরুত্বপূর্ণ ফাইলসমূহ স্টিলের বাক্সবন্দী করিয়া নির্দেশক্রম এক অফিস হইতে অন্য অফিস নেয়া।
  • কর্মকর্তা ও ও কর্মচারীদের কে পানীয় জল পান করাবেন।
  • তারা তাদের জন্য নির্ধারিত ইউনিফর্ম পরিধান করিয়া অফিসে আসবেন।
  • তাহারা শাখা এবং কর্মকর্তা নির্দেশিত কাজ করবেন।
  • তাহারা দর্শন প্রার্থী এবং পাবলিকের সহিত ভদ্রতা বজায় রাখিয়া ব্যবহার করিবেন।
  • তাহারা কর্মকর্তার পক্ষে ব্যাংকের চেক জমা এবং টাকা তুলবেন।
  • তাহারা অভিসময় এর 15 মিনিট পূর্বে অফিসে আসবেন এবং সহকারি সচিব অথবা প্রধান সহকারীর নিকট আগমন এর রিপোর্ট করবেন।
  • তাহারা বিনা অনুমতিতে কোন সময় অভিযোগ করবেন না।

হাই স্কুলের পিয়নের বোনাস কত টাকা

  • একজন সরকারি হাই স্কুলের পিয়ন মূল বেতনের সাথে বাৎসরিক ও মাসিক বোনাস পেয়ে থাকে। একজন হাই স্কুলের অফিস সহায়ক বা পিয়নের বোনাস মূল বেতনের থেকে বেশি হয়ে থাকে। একজন পিয়ন প্রতি বছর মুসলমানদের প্রধান ২ টি ধর্মীয় উৎসবের জন্য ২ বার ৮,২৫০ টাকা করে সর্বমোট ১৬,৫০০ টাকা বোনাস পায়। এছাড়া বৈশাখী বোনাস মূল বেতন অনুযায়ী ২০% হারে ১,৬৫০ টাকা বোনাস পেয়ে থাকে।

অফিস সহায়ক এর সুযোগ সুবিধা

একজন অফিস সহায়কের পেনশনের পাশাপাশি বিভিন্ন রকম সুযোগ সুবিধা থাকে। এবং এই সকল সুযোগ-সুবিধা তারা প্রতিনিয়ত পেতে থাকে। একজন অফিস সহায়ক এর সুযোগ সুবিধা গুলো হলোঃ
  1. ১০০০ টাকা শিক্ষা ভাতা পেয়ে থাকে।
  2. বাড়ি বা রুম ভাড়া বাবদ বেতনের ৬৫% ভাতা প্রদান করা হয়ে থাকে।
  3. যাতায়াত ভাড়া বাবদ ৩০০ টাকা দেওয়া হয়।
  4. মাসিক চিকিৎসা ভাতা ১৫০০ টাকা দেওয়া হয়।
  5. মাসিক টিফিন ভাতা বাবদ ২০০ টাকা দেওয়া হয়।
  6. এছাড়া অন্যান্য এবং ধোলাই ভাতা বাবদ ১০০ টাকা দেওয়া হয়।

হাই স্কুলের পিয়নের শিক্ষাগত যোগ্যতা

বাংলাদেশে চাকরির বাজার বর্তমানে খুবই খারাপ। বাংলাদেশের লাখো শিক্ষিত যুবক যুবতী বেকারত্বের বোঝা মাথায় নিয়ে ঘুরছে। চাকরির যোগ্যতা থাকলেও সাধ্যমত মিলছে না চাকরি। যার ফলে অনেকেই সরকারি স্কুলের অফিস সহায়ক পদে চাকরি করার পরিকল্পনা করছে। সরকারি হাই স্কুলের অফিস সহায়ক অর্থাৎ পিয়ন পদে চাকরি পেতে ন্যূনতম এস এস সি ও এইচ এস সি সমমান পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে হবে।

হাই স্কুলের পিয়ন কত টাকা পেনশন পাবে

স্কুলের শিক্ষকের ন্যায় অফিস সহায়ক বা পিয়নের বেতন স্কেল একটা নির্দিষ্ট হারে বৃদ্ধি করা হয়। একজন অফিস সহায়ক এর মূল বেতন প্রতি বছর ৫% হারে বৃদ্ধি পেয়ে থাকে। যদি কোন অফিস সহায়ক ৩০ বছর স্কুলে পিয়নের দায়িত্ব পালন করে তাহলে ৩০ বছর পর তার মূল বেতন হবে ৩৫,৬৫৬ টাকা। ১৮ মাসের ঐচ্ছিক ছুটি বিক্রির ।

পর ন্যূনতম ৪০ লাখ টাকা থেকে ৬০ লাখ টাকা পর্যন্ত একজন অফিস সহায়ক পেনশন পেয়ে থাকবেন।বাংলাদেশে সরকারি চাকরি পাওয়ার প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়েছে। যার ফলে অনেক উচ্চ শিক্ষিত তরুণ তরুণী অফিস সহায়ক বা পিয়ন পদে চাকরির জন্য চেষ্টা চালাচ্ছে। যার ফলশ্রুতিতে পূর্বের তুলনায় বর্তমানে অফিস সহায়ক পদে চাকরির চাহিদা অনেক গুনে বৃদ্ধি পেয়েছে।

লেখকের শেষ কথা

আশা করছি অফিস সহায়কের কাজ কি? বিস্তারিত জেনে নিন? ধারনা পেয়েছেন এই আর্টিকেলটিতে, এই আর্টিকেলটি পুরোটা পড়ে যদি আপনাদের সামান্যতম উপকারে আসে তাহলে আপনাদের পরিচিতি মানুষদের সাথে শেয়ার করতে পারেন। আর এ ধরনের বা বিভিন্ন রকমের আর্টিকেল পড়তে আমাদের সাইডে ভিজিট করে দেখুন ধন্যবাদ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url