চাকরির জন্য সিভি লেখার নিয়ম বাংলায় শিখে নিন
প্রিয় পাঠক আজকে আমরা জানবো CV এর পূর্ণরূপ হলো Curriculum Vitea (কারিকুলাম ভাইটা)। এটি মূলত দুই তিন পাতার একটি সংক্ষিপ্ত জীবন বৃত্তান্ত যেখানে ব্যক্তির নাম, ঠিকানা শিক্ষাগত যোগ্যতা ও দক্ষতার মূল অংশসমূহ উল্লেখ করা থাকে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে সিভি মূলত ইংরেজিতে লেখা হয়ে থাকে। তবে আজকের এই আর্টিকেলে আমরা বাংলাতেই সিভি লেখার নিয়ম আলোচনা করব।
বর্তমান চাকরির বাজারে চাকরি পাওয়াটা খুবই টাফ। তবে আপনি যদি নিজেকে যোগ্য এবং উপযুক্ত প্রার্থী হিসেবে কোম্পানি বা প্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষের সামনে তুলে ধরতে পারেন তাহলে আপনার চাকরি সুনিশ্চিত।
বর্তমান চাকরির বাজারে চাকরি পাওয়াটা খুবই টাফ। তবে আপনি যদি নিজেকে যোগ্য এবং উপযুক্ত প্রার্থী হিসেবে কোম্পানি বা প্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষের সামনে তুলে ধরতে পারেন তাহলে আপনার চাকরি সুনিশ্চিত।
ভূমিকা
সিভি হলো এমন একটি শক্তিশালী দলিল, যা কাগজে কলমে আপনার যাবতীয় তথ্য, যোগ্যতা ও ব্যক্তিত্বের পরিচয় বহন করে। কারন ন্টারভিউ এর জন্য প্রার্থী নির্বাচন করার জন্য নিয়োগকারীরা সর্বপ্রথম এই সিভি দেখেই আবদনকারীদের যাচাই করে থাকেন। যাদের সিভি কিছুটা আকর্ষণীয় আর বিশ্বাসযোগ্য বলে মনে হয় তারাই ইন্টারভিউ বা পরীক্ষায় অংশ নেয়ার সুযোগ পেয়ে থাকেন।
সিভি কী
সিভি বা কারিকুলাম ভিটা হলো ২ – ৩ পাতার একটি ডকুমেন্ট যেখানে আপনার নিজের সম্পর্কে সুন্দরভাবে সাজিয়ে গুছিয়ে লিখতে হবে| যেমন আপনার নাম এবং আপনার বাবা-মায়ের নাম জন্ম তারিখ আপনার ঠিকানা| এবং আপনার শিক্ষাগত যোগ্যতা ও দক্ষতার মূল অংশগুলোর উল্লেখ থাকে, চাকরির পরীক্ষার পাশাপাশি অ্যাকাডেমিক কাজেও এর ব্যবহার রয়েছে। এটি সাধারণত ইংরেজিতে। লেখা হয়।
চাকরির জন্য সিভি লেখার নিয়ম ইংরেজিতে
সিভি লেখার নিয়ম তো আমরা শিখে গেলাম। এবার কথা হচ্ছে, সিভি আসলে তৈরী করবেন কিভাবে। সিভি যেহেতু প্রফেশনাল কাজে ব্যবহৃত হয়, তাই সিভির ক্ষেত্রে অবশ্যই প্রিন্টেড কপি চাকরির আবেদনে সাবমিট করাই শ্রেয়। এছাড়া অনলাইন আবেদনের ক্ষেত্রে সফট কপি হিসেবে পিডিএফ ফাইল আপলোড করতে পারেন।একাধিক উপায়ে সিভি তৈরী করা যেতে পারে।
সিভি লেখার নিয়ম
- ব্যক্তিগত তথ্যঃ এ অংশে আপনার নাম, ফোন নাম্বার ও ইমেইল ঠিকানা দিতে হবে। কিছু ক্ষেত্রে যোগাযোগের ঠিকানা দিতে হতে পারে। তবে আপনার ছবি দেয়া আবশ্যক নয়।
- সারাংশঃ এ অংশে খুব সংক্ষেপে নিজের পরিচয় দিতে হয়। এটি ইংরেজিতে ‘Personal Statement’ বা ‘Objective’ হিসাবে পরিচিত। আপনি কোন ধরনের ক্যারিয়ার গড়তে চান ও সে ক্যারিয়ারের সাথে বর্তমান চাকরি কীভাবে সম্পর্কযুক্ত, সে ব্যাপারে ১০০ শব্দের মধ্যে খুব সুন্দর ভাবে লেখুন লিখুন।
- কাজের অভিজ্ঞতাঃ আপনি এর আগে কোন ধরনের কাজ করেছেন, তা এ অংশে বর্ণনা করুন। সাম্প্রতিক কাজের কথা সবার আগে লিখুন।
- শিক্ষাগত যোগ্যতাঃ সাম্প্রতিক ডিগ্রি বা প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা দিয়ে শুরু করুন। মাস্টার্স ডিগ্রিধারী হলে এইচএসসি বা এসএসসি পরীক্ষার ফলাফল উল্লেখ করার প্রয়োজন নেই।
- দক্ষতা ও অর্জনঃ যে চাকরির জন্য আবেদন করছেন, তার সাথে সম্পর্কিত কোন দক্ষতা থাকলে এ অংশে লিখুন। প্রাসঙ্গিক হলে কোন পুরস্কার, সম্মাননা বা প্রকাশনার কথাও উল্লেখ করতে পারেন।
- কম্পিউটার-দক্ষতাঃবর্তমানে অধিকাংশ চাকরির ক্ষেত্রে কম্পিউটার জানা বাধ্যতামূলক। প্রায় সব ধরনের চাকরির ক্ষেত্রে কম্পিউটার বিষয়ে বেসিক ট্রেনিং এর সার্টিফিকেট সহ কম্পিউটার বিষয়ে বেসিক জ্ঞান থাকতে হয়। সে জন্য মাইক্রোসফট ওয়ার্ড, এক্সেল ও পাওয়ারপয়েন্টের কাজ জানা থাকলে তা অবশ্যই সিভিতে উল্লখ করবেন। এছাড়া কম্পিউটার বিষয়ে অন্যকোন অভীজ্ঞতা থাকলে সেটিও অবশ্যই উল্লেখ করে দিবেন। আপনার চাকরির আবেদনটি কোন কম্পিউটার বা আইটি কোম্পানির হলে এই অংশে কম্পিউটার বিষয়ক সকল তথ্য অল্প শব্দে বিস্তারিত উল্লেখ করে দিবেন। কম্পিউটার দক্ষতা হিসেবে নিচের পয়েন্টগুলো উল্লেখ করতে পারেন।
- Report Writing & Editing.Phone,
- Email & Face to Face Communication.
- MS Office Application Proficient.
- Data Entry Proficient.
- Any other Computer Experience.
- রেফারেন্সঃ আপনার কাজ বা দক্ষতা ও যোগ্যতা নিয়ে ভালো ধারণা রয়েছে এমন ২ – ১ জন ব্যক্তির নাম ও যোগাযোগের তথ্য রেফারেন্স হিসাবে দিন। তবে আগেই তাদের অনুমতি নিয়ে রাখুন। উল্লেখ্য যে, সব চাকরির জন্য রেফারেন্স অংশ থাকার বাধ্যবাধকতা নেই। প্রয়োজনে নিয়োগদাতারা আপনার কাছে এ ব্যাপারে তথ্য
- চাইতে পারেন।সঠিকভাবে নিজের জন্য সিভি লিখতে পারাটা খুবই জরুরি এবং আবশ্যক। আপনি যদি একজন চাকুরী প্রার্থী কিংবা স্নাতক শিক্ষার্থী হয়ে থাকেন তাহলে এই সময় থেকেই সিভি লেখার নিয়ম জেনে নেওয়া উচিত।আমাদের স্কুল, কলেজের পাঠ্যক্রমে সিভি লেখার নিয়ম শেখালেও আমরা তা শুধু পাঠ্যপুস্তকেই সীমাবদ্ধ রাখি।
- অধিকাংশ শিক্ষার্থীই কখনও নিজের জন্য একটা সিভি তৈরি করি না।তাই এই ব্লগে আমরা সিভি লেখার প্রকৃত নিয়মগুলো জানবো। এতে করে আপনি যদি একজন শিক্ষার্থীও হন তাহলে এখন থেকেই নিজের জন্য একটা সিভি তৈরি করতে পারবেন।সিভি যে শুধু চাকুরি আবেদনের ক্ষেত্রেই প্রয়োজন হয় বিষয়টা এমন হয়। বিদেশে উচ্চশিক্ষা কিংবা কোনো স্কলারশিপ পেতেও সিভি লাগতে পারে।
চাকরির জন্য সিভি লেখার নিয়ম ইংরেজিতে
সিভি লেখার নিয়ম তো আমরা শিখে গেলাম। এবার কথা হচ্ছে, সিভি আসলে তৈরী করবেন কিভাবে। সিভি যেহেতু প্রফেশনাল কাজে ব্যবহৃত হয়, তাই সিভির ক্ষেত্রে অবশ্যই প্রিন্টেড কপি চাকরির আবেদনে সাবমিট করাই শ্রেয়। এছাড়া অনলাইন আবেদনের ক্ষেত্রে সফট কপি হিসেবে পিডিএফ ফাইল আপলোড করতে পারেন।একাধিক উপায়ে সিভি তৈরী করা যেতে পারে।
জনপ্রিয় ডকুমেন্ট এডিটর সফটওয়্যার, এমএস ওয়ার্ড দিয়ে সিভি তৈরী সম্ভব। এছাড়াও Google Docs ব্যবহার করে ব্রাউজার থেকেও মাইক্রোসফট ওয়ার্ড এর মতো করেই সিভি তৈরি করা যাবে। এখানে ক্লিক করে বিভিন্ন সিভি ও রেজ্যুমের টেম্পলেট বা স্যাম্পল দেখতে পারেন। আপনি চাইলে সেগুলোর ডিজাইন অনুসরণ করতে পারেন।এসবের পাশাপাশি অনলাইনে ।
বিভিন্ন ওয়েবসাইট বা অ্যাপ ব্যবহার করেও সিভি তৈরী করা যায়। Resumonk ও Resume.io হলো অনলাইনে সিভি তৈরী করার জনপ্রিয় দুইটি ওয়েবসাইট। এছাড়া লিংকডইন ব্যবহার করেও সকল তথ্য সঠিকভাবে প্রদান করে পিডিএফ আকারে সিভি ডাউনলোড করা যায়।যেকোনো ক্ষেত্রে অনলাইনে সিভি সাবমিট করার সময় অবশ্যই পিডিএফ (PDF) ফরম্যাটে সিভি সাবমিট করুন। আর কাগজের সিভি সাবমিট করার ক্ষেত্রে প্রিন্ট করার সময় অবশ্যই ভালো কাগজ ব্যবহার করুন।
সিভি কেন গুরুত্বপূর্ণ
চাকরির আবেদনের জন্য সিভি জমা দেওয়া হয়ে থাকে। আপনাকে চাকরির ইন্টারভিউতে ডাকার আগে কিন্তু জুরি বোর্ড আপনার সিভি দেখেই আপনার যোগ্যতাকে বিবেচনা করবে। অর্থাৎ উক্ত পদের জন্য সিভি আপনার যোগ্যতার পরিচয় হিসেবে কাজ করে।একজন আবেদনকারী হিসেবে চাকুরিদাতার সাথে আপনার পরিচয়ের প্রথম মাধ্যম কিন্তু সিভি।আপনি যতোই অভিজ্ঞ হন না কেনো, আপনার সিভি যদি চাকুরিদাতার নজড়ে পড়তে ব্যার্থ হয়; সেক্ষেত্রে উক্ত চাকরির ইন্টারভিউতে আপনাতে অদৌ ডাকা হবে কিনা, সেটি নিয়ে সন্দেহ থেকেই যায়। তাই চাকুরি পাওয়ার ক্ষেত্রে সিভি আকাশপাতাল ব্যবধান তৈরিতে সক্ষম।
সিভি’র ফরমেট কেমন হওয়া উচিত
সিভি হচ্ছে এমন একটি বৃত্তান্ত যেটি দেখে চাকরি দাতারা আপনাকে না দেখেও আপনার সম্পর্কে মোটামোটি ধারনা করে নিতে পারে। এ ক্ষেত্রে সিভি’র মাধ্যমে আপনার ব্যক্তিত্ব কোন প্রতিষ্ঠানের কাছে তুলে ধরার জন্য সুন্দর ও স্মার্ট সিভি’র গুরুত্ব অপরিসীম। আপনার সিভিটি শুধুমাত্র তথ্যে ভরা থাকলেই সেটি তথ্যবহুল হয়ে উঠবে না। কারণ সিভিতে থাকা ।তথ্য পরিপাঠি করে ইনক্লোড করা না থাকলে ভালো তথ্য থাকা সত্বেও সিভিটি পাঠকের কাছে বোধগম্য হয়ে উঠবে না। নিচের কয়েকটি নিয়ম মেনে আপনার সিভিকে আরো গ্রহনযোগ্য করে তুলতে পারেন।
সিভি’র দৈর্ঘ্য (Length):
সিভি’র প্রত্যেকটি অংশ লেখার সময় অবশ্যই ভালো করে খেয়াল রাখতে হবে যাতে সিভি’র কোন অংশের বর্ণনা অধিক লম্বা না হয়। আপনি এমন শব্দ ব্যবহার করবেন যাতে অল্প শব্দে বেশি কথা বুঝানো যায়। বেশি কথা বুঝানোর জন্য সর্বোচ্ছ ৩/৪ লাইনের মাধ্যমে পুরা ব্যাপারটি বুঝিয়ে বলতে হবে। তাছাড়া অল্প লেখায় বেশী বুঝাতে পারলে চাকরিদাতারা আপনাকে বুদ্ধিমান হিসেবে ধরে নিবে।
সিভি’র প্রত্যেকটি অংশ লেখার সময় অবশ্যই ভালো করে খেয়াল রাখতে হবে যাতে সিভি’র কোন অংশের বর্ণনা অধিক লম্বা না হয়। আপনি এমন শব্দ ব্যবহার করবেন যাতে অল্প শব্দে বেশি কথা বুঝানো যায়। বেশি কথা বুঝানোর জন্য সর্বোচ্ছ ৩/৪ লাইনের মাধ্যমে পুরা ব্যাপারটি বুঝিয়ে বলতে হবে। তাছাড়া অল্প লেখায় বেশী বুঝাতে পারলে চাকরিদাতারা আপনাকে বুদ্ধিমান হিসেবে ধরে নিবে।
কোন সাইজের কাগজে সিভি লিখবেন
আপনি অনলাইনে কিংবা প্রিন্ট করে পোস্ট অফিসের মাধ্যমে সিভি সাবমিট করুন না কেন উভয় ক্ষেত্রে সিভি অবশ্যই A4 সাইজের পেপারে লিখবেন। সিভির ডান পাশে এবং বাম পাশে প্রয়োজনানুসারে পর্যাপ্ত মার্জিন রাখবেন।
আপনি অনলাইনে কিংবা প্রিন্ট করে পোস্ট অফিসের মাধ্যমে সিভি সাবমিট করুন না কেন উভয় ক্ষেত্রে সিভি অবশ্যই A4 সাইজের পেপারে লিখবেন। সিভির ডান পাশে এবং বাম পাশে প্রয়োজনানুসারে পর্যাপ্ত মার্জিন রাখবেন।
কোন ফন্টে এবং কত ফন্ট সাইজে লিখবেন
আপনার সিভিকে আরো অধিক প্রফেশনাল করার জন্য সিভি’র নরমাল বডিতে Arial, Calibri অথবা Times New Roman ফন্ট ব্যবহার করতে পারেন। সিভির নরমাল অংশগুলো ১০-১২ ফন্টের মধ্যে লিখবেন। আপনার নাম ও অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ হেডলাইন লেখার ক্ষেত্রে ১৪-১৫ ফন্ট ব্যবহার করতে পারেন অথবা গুরুত্বপূর্ণ অংশগুলো Bold ও Italic করে হাইলাইট করে সিভি’র সুন্দর্য বৃদ্ধি করতে পারেন।
আপনার সিভিকে আরো অধিক প্রফেশনাল করার জন্য সিভি’র নরমাল বডিতে Arial, Calibri অথবা Times New Roman ফন্ট ব্যবহার করতে পারেন। সিভির নরমাল অংশগুলো ১০-১২ ফন্টের মধ্যে লিখবেন। আপনার নাম ও অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ হেডলাইন লেখার ক্ষেত্রে ১৪-১৫ ফন্ট ব্যবহার করতে পারেন অথবা গুরুত্বপূর্ণ অংশগুলো Bold ও Italic করে হাইলাইট করে সিভি’র সুন্দর্য বৃদ্ধি করতে পারেন।
বানান ও ব্যাকরণ
আপনার সিভি’র কোন অংশের বানান কোনক্রমে ভূল করা যাবে না। সিভিতে বানান ভূল লিখলে পুরো সিভিটি চাকরিদাতাদের কাছে গুরুত্ব হারিয়ে ফেলবে। কাজেই সিভি লিখার পর প্রত্যেকটি বানান ডাবল চেক করে নিবেন।
আপনার সিভি’র কোন অংশের বানান কোনক্রমে ভূল করা যাবে না। সিভিতে বানান ভূল লিখলে পুরো সিভিটি চাকরিদাতাদের কাছে গুরুত্ব হারিয়ে ফেলবে। কাজেই সিভি লিখার পর প্রত্যেকটি বানান ডাবল চেক করে নিবেন।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url