সরকারিভাবে পাইলট হওয়ার উপায় - ২০২৪
প্রিয় পাঠক আজকে আমরা জানবো সরকারিভাবে পাইলট হওয়ার উপায় - ২০২৪ ছোটবেলায় অনেকেরই ডাক্তার ইঞ্জিনিয়ার হওয়ার পাশাপাশি পাইলট হবার স্বপ্ন থাকে।আজকে আমরা সরকারিভাবে পাইলট হওয়ার উপায় সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করব। আশা করছি এই আর্টিকেলটি শেষ পর্যন্ত পড়লে সব কিছু বুঝতে পারবেন ।
ছোট বেলায় আমরা ভাবতাম বড় হয়ে কি হবো এবং আত্মীয় স্বজনরা বলতো বড় হয়ে কি হবে
আর এর উত্তরে প্রায় অনেকেই বলেছেন, আমি বড় হয়ে পাইলট হতে চাই। অনেকেই তাদের চাওয়াকে বাস্তব জীবনে পেশায় পরিণত করেছেন।
ভূমিকা
ছোটবেলায় আমরা অনেকেরই ডাক্তার ইঞ্জিনিয়ার হওয়ার পাশাপাশি পাইলট হবার স্বপ্ন দেখি। কিন্তু পাইলট হবার স্বপ্ন পূরণের জন্য কি কি করা উচিত এবং সরকারিভাবে পাইলট হওয়ার কোন উপায় আছে কিনা সে সম্পর্কে অনেকেই সঠিক তথ্য জানেন না। বর্তমানে দেশে পাইলট হবার জন্য বিভিন্ন কোর্স করার সুযোগ রয়েছে। বাংলাদেশ বিমান সহ যে কোন বিমানের পাইলট হতে চাইলে সরকারি বেসরকারি বিভিন্ন উপায়ে পাইলট হওয়া সম্ভব।
বাংলাদেশে পাইলট হওয়ার যোগ্যতা
আজকে আমরা সরকারিভাবে পাইলট হওয়ার উপায় সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করব। আশা করছি আর্টিকেলটি পড়ে আপনাদের ভালো লাগবে।পাইলট পদে আবেদন করতে চান তাদের যে সকল যোগ্যতা সমূহ থাকতে হবে তা
নিচে উল্লেখ করা হলো
- প্রার্থীর বয়স হতে হবে নূন্যতম ১৬ বছর
- এসএসসি ও এইচএসসি তে জিপিএ ৫ থাকতে হবে । বিশেষ করে ইংরেজি, পদার্থবিজ্ঞান সাধারণ গণিত ও উচ্চতর গণিতে জিপিএ ৫ থাকতে হবে ।
- পাইলট পদে আবেদনকারীকে অর্থাৎ প্রার্থীকে অবশ্যই ইংরেজিতে দক্ষ ইংরেজিতে দক্ষ হতে হবে
- শারীরিকভাবে ফিট থাকতে হবে
- মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক বা সমমানের পরীক্ষায় বিজ্ঞান বিভাগ থেকে পাস হতে হবে।
- ।পদার্থ ও গণিতে কমপক্ষে বি গ্রেড থাকতে হবে।
- দি পাইলট পদে আবেদন করি একজন মেয়ে হয়ে থাকে তবে তার উচ্চতা হবে ৫ ফুট ৪ ইঞ্চি ।
- এবং প্রার্থী যদি একজন ছেলে হয় তবে তার উচ্চতা ৫ ফুট ৬ ইঞ্চি হতে হবে ।
- আবেদনকারীদের অবশ্যই শারীরিকভাবে সুস্থ থাকতে হবে । এবং মেডিকেল সার্টিফিকেট সম্পূর্ণ সঠিক হতে হবে ।
- ওজন হতে হবে বয়স ও উচ্চতা অনুযায়ী
- স্বাভাবিক দৃষ্টি ক্ষমতা সম্পন্ন হতে হবে
পাইলট হতে কি যোগ্যতা লাগে
ছোটবেলায় পাইলট হওয়ার স্বপ্ন অনেকেই দেখেছেন। সাধ আর সাধ্যের যোগ না হওয়ায় অধরাই থেকে গেছে স্বপ্ন এরকম অনেকের ক্ষেত্রেই হয়েছে। আবার অনেকেই জানেন না কিভাবে কি করলে হতে পারবেন পাইলট!সাধারণত পাইলট হতে চাইলে প্রাথমিকভাবে কিছু বেসিক কোর্স করতে হয়। বর্তমানে এই কোর্সটি বাংলাদেশের বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠান করিয়ে থাকে।
পাইলট হতে হলে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় অথবা 'ও' লেভেল, 'এ' লেভেলে বিজ্ঞান বিভাগ থেকে উত্তীর্ণ হতে হবে। পদার্থবিজ্ঞান ও গণিত থাকতে হবে এবং এর সঙ্গে স্বাস্থ্য পরীক্ষায় ফিট হওয়া আবশ্যক। তবে এ কোর্সে ভর্তি হওয়ার জন্য প্রাথমিক ভাবে কিছু যোগ্যতার প্রয়োজন। এরমধ্যে অন্যতম মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক বিজ্ঞান বিভাগ থেকে পাস করতে হবে।
ইতিমধ্যে যারা স্নাতক পাশ করেছেন তারাও পারবেন পাইলট কোর্সে আবেদন করতে। এক্ষেত্রে বয়স কমপক্ষে ১৬ বছর হতে হবে। শারীরিক ভাবে ফিট ও ইংরেজি ভাষায় দক্ষ হতে হবে।
সরকারিভাবে পাইলট হওয়ার উপায়
বাংলাদেশ বিমান সহন যে কোন বিমানের পাইলট হতে চাইলে আগে এইচএসসি পর্যায়ে বিজ্ঞান বিভাগ থেকে পদার্থবিদসহ ন্যূনতম জিপিএ ২.৫০ পেতে হতো। আগে নিয়ম থাকলেও বর্তমানে এসএসসি এবং এইচএসসির যেকোনো একটিতে ৫.০০ এবং আরেকটিতে ৪.৫০ পেতে হবে। প্রার্থীদের গণিত থাকতে হবে ঔচ্ছিক বা আবশ্যিক বিষয় হিসেবে।
ইংরেজি মাধ্যম শিক্ষার্থীদের জন্য পদার্থবিজ্ঞান ও গণিত থাকা অবশ্যক এবং দুটি বিষয়ে ন্যূনতম ডিগ্রেড থাকতে হবে।
সরকারিভাবে পাইলট বাছাই প্রক্রিয়া
সরকারিভাবে পাইলট হওয়ার উপায় জানার পাশাপাশি কিভাবে পাইলট বাছাই করতে হয় তা জানা দরকার। এক্ষেত্রে ছয়টি ধাপে বাছাই প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয় যেমন।
- প্রাথমিক লিখিত পরীক্ষা। সাধারণ জ্ঞান আইকিউ এবং ইংরেজির উপরে প্রশ্ন থাকে
- প্রাইমারি মেডিকেল অর্থাৎ প্রাথমিক স্বাস্থ্য পরীক্ষা
- প্রাইমারি ইন্টারভিউ
- আই এস এস বি বোর্ড
- ফাইনাল মেডিকেল টেস্ট
- ফাইনাল সিলেকশন
সরকারিভাবে পাইলট হওয়ার জন্য আবেদনের নিয়ম
সরকারিভাবে পাইলট হওয়ার উপায় খুব সহজে বলতে গেলে এইচএসসি পর ভর্তি হতে হবে। দেশে বা দেশের বাইরের কোন ট্রেনিং একাডেমিতে প্রথমত ফ্লাইং প্রশিক্ষণ শেষ করে প্রাইভেট পাইলট লাইসেন্সের জন্য আবেদন করতে হয়। বাংলাদেশ বেসামরিক বিমান চলাচলকারী কর্তৃপক্ষের নিয়ম অনুসারে লাইসেন্স পেতে কমপক্ষে ৪০ ঘন্টা ফ্লাইং করতে হয়।
ন্যূনতম বয়স হতে হয় ১৭ বছর।
পি এল পাওয়ার পর আবেদন করতে হয় কমার্শিয়াল পাইলট লাইসেন্সের জন্য। এক্ষেত্রে ফ্লাইং করতে হয় ১৫০ ঘন্টা। সিপিএলের জন্য নূন্যতম বয়স হতে হবে ১৮ বছর। এ পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হলে দেশ বিদেশের এয়ার লাইসেন্সে ফাস্ট অফিসার বা কো পাইলট হিসেবে আবেদন করা যাবে।
- পাইলট কোর্স কি ও কেন করতে হবে পাইলট কোর্স করা সম্ভব। কিন্তু এ কোর্সটি করতে চাইলে আগে সংশ্লিষ্ট একাডেমীতে পাইলট কোর্সের জন্য ভর্তি পরীক্ষা দিতে হবে। পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হলেই মিলবে পাইলট কোর্সের সুযোগ। সাধারণত ভর্তি পরীক্ষা নেওয়া হয় তিনটি ধাপে। প্রথমে দিতে হয় লিখিত পরীক্ষা। এতে উত্তীর্ণ হলে মৌখিক এবং চূড়ান্ত বাছাইয়ের আগে দিতে হয় স্বাস্থ্য পরীক্ষাও কম্পিউটার বিষয়ক ।
দক্ষতাও পরখ করে দেখে।একাডেমী লিখিত পরীক্ষা নেয়। পরীক্ষায় উত্তীর্ণদের সরাসরি বিমান চালনার জন্য সিভিল এভিয়েশনে এসপিএল বা স্টুডেন্ট পাইলট লাইসেন্সের আবেদন করতে হয়। পাইলট কোর্সে ভর্তির সুযোগ পেলেই শুরু হবে মূল প্রশিক্ষণ।
পাইলট কোর্স কোথায় ও কিভাবে করবেন
১। সিভিল অ্যাভিয়েশন একাডেমী ট্রেনিং সেন্টার;
২। বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স ট্রেনিং সেন্টার;
৩। বাংলাদেশ ফ্লাইং একাডেমী অ্যান্ড ফ্লাইং অ্যাভিয়েশন লিমিটেড;
৪। আরিরাং অ্যাভিয়েশন লিমিটেড;
৫। গ্যালাক্সি ফ্লাইং একাডেমী অন্যতম।
সরকারিভাবে পাইলট হওয়ার খরচ
দেশী প্রতিষ্ঠানগুলোতে পাইলট কোর্সটি করার জন্য ৩০ থেকে ৩৫ লাখ টাকা খরচ হবে। টাকার পরিমাণ প্রতিষ্ঠান ভেদে বাড়তে বা কমতেও পারে। তবে পাইলট কোর্সের সবচেয়ে বড় অসুবিধা হলো, হাতে পর্যাপ্ত পরিমাণ টাকা নিয়েই এ কোর্সটিতে ভর্তি হওয়া উচিত। কারণ অনেক সময় টাকার জন্য রিয়েল টাইম ফ্লাইং আটকে যায়। যে ক্ষেত্রে কোর্সটি সম্পন্ন করতে নির্ধারিত সময়ের চেয়ে অনেক বেশি লাগে।
কোর্স শেষে কোথায় কাজ করবেন
এক জন পাইলট সরকারি ও বেসরকারি যেকোন এয়ারলাইন্স কোম্পানিতে পাইলট হিসেবে কাজ করতে পারবেন। বাংলাদেশ বিমানসহ ইউএস বাংলা, নভো এয়ার, রিজেন্ট, ইউনাইটেডের মত এয়ারলাইন্স প্রতিবছরই লোক নিয়োগ করে থাকে। এদের ওয়েবসাইটে সিভি ড্রপ করারও অপশন রয়েছে। এছাড়াও কাজ করা যাবে আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে।
- আন্তর্জাতিক বিমান পরিবহন সংস্থা দি ইন্টারন্যাশনাল এয়ার ট্রান্সপোর্ট অ্যাসোসিয়েশনের এক প্রতিবেদনে জানা গেছে, প্রতি বছর প্রায় ১৭ হাজার নতুন পাইলট প্রয়োজন।
পাইলট বেতন কত
একজন পাইলট প্রাথমিক অবস্থায় দুই লাখ টাকা বেতন পেয়ে থাকেন। প্রতি বছর বেতনের অংক বাড়তে থাকে। সঙ্গে দেশ বিদেশ ঘুরার সুযোগ তো থাকছেই। এছাড়াও একজন পাইলট সরকারি ও বেসরকারি বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা পেয়ে থাকেন।
লেখকের শেষ কথা
আশা করছি সরকারিভাবে পাইলট হওয়ার উপায় - ২০২৪ সকল প্রকারের ধারনা পেয়েছেন এই আর্টিকেলটিতে, এই আর্টিকেলটি পুরোটা পড়ে যদি আপনাদের সামান্যতম উপকারে আসে তাহলে আপনাদের পরিচিতি মানুষদের সাথে শেয়ার করতে পারেন। আর এ ধরনের বা বিভিন্ন রকমের আর্টিকেল পড়তে আমাদের সাইডে ভিজিট করে দেখুন ধন্যবাদ।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url