ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় উপায়

প্রিয় পাঠক আমরা জানি যে ডেঙ্গু জ্বর মূলত মশার কামড়েই হয়ে থাকে।এডিস প্রজাতির স্ত্রী মশার কামড়ে টেঙ্গু জ্বর হয়ে থাকে,এই মশা সাধারণত সকালে ভোরবেলা ও সন্ধ্যার পূর্বে কামরায় বর্ষাকালীন সময়ে এডিস মশার আক্রান্ত হাড় বাড়ে ডেঙ্গু মশা কামড়ানোর কত সময় পর জ্বর হয় ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় উপায়  চলুন জেনে নেওয়া যাক ।

ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় উপায়
ডেঙ্গুর প্রতিকার মশারি টানিয়ে ঘুমানো আক্রান্ত ব্যক্তিকে মশারির ভেতরে রাখা ফুলের টপ খালি পাত্রসহ বাড়ির আশেপাশে জমে থাকা পানি পরিষ্কার রাখা যথা সম্ভব শরীরকে ঢেকে রাখা বিশেষ করে ফুলহাতা পোশাক পরা মশার কয়েল ও স্প্রে ব্যবহার করা।

ভূমিকা 

ডেঙ্গু একটি ভাইরাসজনিত অসুখ যা মশার কামড়ের মাধ্যমে সংক্রমণিত হয় ডেঙ্গু সাধারণত জ্বরের মতোই উপসর্গ হয় তবে অল্প কিছু ক্ষেত্রে ডেঙ্গু সাধারণত জটিল হতে পারে। জ্বর ও ব্যথা কমানোর জন্য প্যারাসিটামল ছাড়া অন্য কোন ওষুধ খাওয়ার আগে ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী ওষুধ ও ট্রিটমেন্ট নিতে হবে।এডিস মশার বংশবৃদ্ধি রোধের মাধ্যমে ডেঙ্গু জ্বর প্রতিরোধ করা সম্ভব।

ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় উপায় 

  • বাড়ির আশপাশ যতটা সম্ভব পরিষ্কার রাখার চেষ্টা করুন ।
  • ঘরের ভিতরে ফুলের টবে জমে থাকা পানি পরিষ্কার করুন।
  •  ভাঙ্গা প্লাস্টিকের বোতল ডাবের খোসা টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন না হলে মশা জন্মাবে। 
  •  মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত তিনবার বাড়ির আশেপাশে স্প্রে করুন যাতে এডিস মসা বংশ বিস্তার না করতে পারে। 
  • এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলা ঘুমানোর সময় মশারি টানিয়ে ঘুমানোর চেষ্টা করুন।
  • আশপাশের পরিবেশ পরিষ্কার রাখলে এবং ছোট ছোট কিছু বিষয় সচেতন থাকলে ডেঙ্গু জ্বর থেকে যেমন মুক্তি পাওয়া সম্ভব হবে ডেঙ্গুর লক্ষণ থাকলে অবশ্যই ডাক্তার দেখাতে হবে।

ডেঙ্গুর লক্ষণ

  • হঠাৎ উচ্চ জ্বর ১০১-১০৪ডিগ্রি হওয়া।
  • দুর্বলতা ও ক্লান্তি অনুভব করা।
  • মাথা ঘোরা ও মাথা ব্যথা করা।
  • বমি বমি ভাব ও বমি করা।
  • চোখের পেছনে ব্যথা হওয়া।
  • জয়েন্ত ও মাংসপেশি ব্যাথা করা।
  • চামড়ায় লালচে দাগ হওয়া
  • ঘাম হয়ে জ্বর চলে যাওয়া দিয়ে আবার জ্বর আসা
  • নিঃশ্বাসে প্রশ্বাসে সমস্যা আচ্ছন্নতাভাব বিষয়গুলো লক্ষ্য করা যায়।

রোগীর খাদ্য তালিকা

সকালের খাবার পাউরুটি ৩পিচ+দুধ ডিম সিদ্ধ -১টা কলা ১টা। সকাল (১১.০০)টায় বেদানা বা আপেল জুস খাওয়া। দুপুরের খাবার নরম ভাত ও ডাল ও সবজি সবজি কে অল্প করে তেল মসলা দিয়ে রান্না করে দেওয়া, মাছ ও মাংস খাওয়া। বিকেলের খাবার সবজি ও চিকেন মিক্সড সুপ অল্প তেল ও মসলা দিয়ে রান্না করে দেওয়া রাতের খাবার ভাত ডাল সবজি মাছ মাংস ঝোল ছাড়া। 

রক্তে প্লাটিলেটের সংখ্যা বাড়াতে আয়রন সমৃদ্ধ খাবার খেতে হবে পালং শাক সামুদ্রিক মাছ মিষ্টি কুমড়া কলিজা ডালিম মটরশুটি ছোলা মসুর ডাল ও কচুর শাক ইত্যাদি এগুলোতে প্রচুর পরিমাণে আয়রন থাকে যা রোগীর শারীরিক দুর্বলতা কাটিয়ে উঠতে সাহায্য করে আর vitamin K জাতীয় খাবার যেমন সবুজ শাকসবজি বাঁধাকপি খাওয়াতে হবে।

এসব খাবারে দরকারি খনিজ উপাদান অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এর পরিমাণও বেশি থাকে প্রতিদিন রোগীকে এই খাবারগুলো পরিমান মত খাওয়াতে হবে আর vitamin B খাবার যেমন ডিম দুধ মাখন পনির ও দুই। vitamin C জাতীয় খাবার রক্তের প্ল্যাটিলেটির সংখ্যা স্বাভাবিক রাখতে কার্যকর যেমন মালটা আপেল পেয়ারা কমলা আমরা পেঁপে আম আনারস।

আঙ্গুর জাম ইত্যাদি প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন আছে। ডেঙ্গু রোগীকে প্রতিদিন এ ফলগুলো পরিমাণমতো খাওয়াতে হবে ডেঙ্গু রোগীদের পানি শূন্যতা দেখা যেতে পারে সেই জন্য রোগীকে প্রতিদিন দুই থেকে তিন লিটার পানি পান করতে হবে হবে পাশাপাশি ডাবের পানি ও বিভিন্ন ফলের জুস খেতে হবে।

ডেঙ্গু মশা কামড়ানোর কত সময় পর জ্বর হয়

এডিস মশা কামড়ানোর কারণে ডেঙ্গু জ্বর হয় ডেঙ্গু মশা কামড়ানোর কত সময় পর জ্বর হয় যদিও এই মশা কামড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে জ্বর হয় না রোগে আক্রান্ত হওয়ার পর থেকেই লক্ষণ দেখা দিতে ৫ থেকে ৭ দিনের মত সময় লাগে এবং জ্বর আসে যতদিন রক্তে ভাইরাস থাকবে ততদিন রোগীর জ্বর হবে কেবলমাত্র রক্ত জীবনমুগ্ধ হলে ডেঙ্গু জ্বর ভালো হয়ে যাবে প্রথমবার ডেঙ্গু হলে অনেকেই তা বুঝতে পারেন না।

 খুব জ্বর ওঠার পর আবার কমে যায় ডেঙ্গু মশা কামড়ানোর কত সময় পর জ্বর হয় এ সময় কিছুটা সুস্থ বদ হলেও এটি হচ্ছে সবচেয়ে জটিল পর্যায় কেননা এই সময় আক্রান্ত ব্যক্তির শরীরে প্লাটিলেট কমে যায় এবং রক্তপাতের সম্ভাবনা বেড়ে যায় এসময় যে কোনো ধরনের পরিশ্রমের কাছ থেকে বিরত থাকতে হবে এবং সম্পূর্ণ বিশ্রাম করতে হবে। ডেঙ্গু রোগের লক্ষণ গুলো হচ্ছে জ্বর শরীরে ব্যাথা।

বিশেষত জয়েন্টে ব্যথা পেশিতে ব্যথা, চোখের পেছনে ব্যাথা, শরীরে লালচে দাগ, পাতলা পায়খানা পেটে ব্যথা পেট ফুলে যাওয়া ও বমি ভাব হওয়া কাশি ক্ষুদামন্দা অস্বাভাবিক দুর্বলতা ক্লান্তি শরীরের বিভিন্ন স্থান থেকে রক্তক্ষরণ হওয়া দাঁতের মাড়ি থেকে রক্তক্ষরণ ও মাসিকে অতিরিক্ত রক্তপাত রক্তচাপ কমে যাওয়া পার্টস রেট বেড়ে যাওয়া।

রক্তে প্লাটিলের বৃদ্ধির উপায়

আয়রন পর্যাপ্ত পরিমাণে আয়রন সমৃদ্ধ খাবার খেলে তা লোহিত রক্তকণিকার মাত্রা এবং প্লাস্টিলেট সংখ্যা বাড়াতে পারে। 
  • বেদেনা দুর্বল শরীরের ধকল কাটিয়ে উঠতে বেদেনা খুবই উপকারী ডেঙ্গু জ্বর সারাতে ও প্লাটিলের সংখ্যা নরমাল রাখতে এটা উপকারী।
  • পেঁপে রক্তে প্লাটিলেেট বাড়াতে খেতে পারেন পেঁপের জুস ।
  • ডাব ডাবের পানিতে রয়েছে ইলেকট্রোলাইটস বা খনিজ যেটা ডেঙ্গু জ্বরে খুবই উপকারী উপাদান  ব্রোকলি পুষ্টি সমৃদ্ধ সবজি ব্রোকলি কলিতে রয়েছে।
  • ভিটামিন কে রক্তে প্লাটিলেট বাড়াতে এটা সাহায্য করে দ্রুত লাতিলেট কমে গেলে প্রতিদিন খাবারে অবশ্যই ব্রোকলি রাখবেনএতে খনিজ এবং অ্যান্টিঅক্সডেন্ট আছে। 
  • পালং শাক এসিড এবং আয়রনের অন্যতম উৎস হলো পালং শাক মিষ্টি কুমড়া মিষ্টি কুমড়া রক্তের প্লাটিলের তৈরি করতে সাহায্য করে।

রক্তের প্লাটিলেট কমে যাওয়ার লক্ষণ

যে কোন স্থান থেকে শুকনো রক্তপাত, যা পিন পয়েন্টের আকারে দেখা দেয় তকে বেগুনি রংয়ের চিত্র দেখা যায় কারণ ত্বকের নিচে রক্তক্ষরণ হয় মাসিকে অতিরিক্ত রক্তপাত হওয়া দাঁতের মাড়ি বা নাক থেকে রক্তপাত হাওয়া পেসাব বা মলের সঙ্গে রক্তপাত শরীরের কোথাও কেটে গেলে অনেকক্ষণ ধরে রক্তপাত হওয়া ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে।

ডেঙ্গু হলে প্রায় সবাই একটি বিষয় নিয়ে বেশি দুশ্চিন্তা করেন তা হল প্লাটিলেট নিয়ে কতটা কমে গেল আসলে প্লাটিলেটের পরিমাণ এর ওপর ডেঙ্গুর তীব্রতা নির্ভর করে না। প্লাটিলেটের সংখ্যা ভালো থাকলেই রোগী ভালো থাকবে এমনটা নয় প্লাটিলেট দিলেই রোগী সুস্থ হয়ে উঠবেন এমনটাও নয় অনেক কারণে প্লাটিলাইট কমে যেতে পারে। 

ডেঙ্গু জ্বরে প্লাটিলেট কমে যাওয়ার নয় বরং রোগী মারা যায় ডেঙ্গু শকে সিনড্রোমে আক্রান্ত হয়ে তাই প্ল্যাটিলেটে সংখ্যা দশ হাজারের উপরে থাকলেও রক্তপাত একটি ব্লিডিং না থাকলেও এ নিয়ে আতঙ্কিত হওয়ার কারণ নেই। রক্তের প্লাটিলেটের সঙ্গে খাবার-দাবারের কোন সম্পর্ক নেই।বেশি করে পানি খাওয়াতে হবে লিকুইড জাতীয় খাবার বেশি খাওয়ানো যেতে পারে।

রক্তচাপ কমে যাওয়া অবসাদ ঘাম হওয়া ও বমিভাব হলে আক্রান্ত রোগীকে হাসপাতালে ভর্তি করে ফ্লুইড দিতে হবে সঠিক সময়ে সঠিক ফ্লুইড না দিলে ডেঙ্গু আক্রান্ত ব্যক্তির মৃত্যুঝুঁকি থাকে ।

লেখকের শেষ কথা 

আশা করছি ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়ে সকল প্রকারের ধারনা পেয়েছেন এই আর্টিকেলটিতে, এই আর্টিকেলটি পুরোটা পড়ে যদি সামান্যতম উপকারে আসে তাহলে আপনাদের পরিচিতি মানুষদের সাথে শেয়ার করতে পারেন। আর এ ধরনের বা বিভিন্ন রকমের আর্টিকেল পড়তে আমাদের সাইডে ভিজিট করে দেখুন ধন্যবাদ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url